জামিনের আবেদন খারিজ করে পুর চেয়ারম্যান-সহ ধৃত ৩ সিপিএম নেতাকে চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশিস চৌধুরী ওই নির্দেশ দেন। মামলার পূর্ণতদন্তের জন্য ধৃতদের পুলিশি হেফাজত চেয়ে এদিন মামলার তদন্তকারী অফিসার তথা গঙ্গারামপুর থানার আইসি অসীম গোপ আদালতে আবেদন জানান। সরকারি আইনজীবী জনার্দন প্রসাদ সিংহ জানান, বিচারক ধৃতদের ৪ দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছেন। আগামী ২৮ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
গত শুক্রবার দুপুরে গঙ্গারামপুরে সিপিএম পার্টি অফিসে ঢুকে তিন নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরদিন তাঁদের আদালতে হাজির করে পুলিশের তরফে ধৃতদের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করা হয়। বিচারক ধৃতদের জামিনের আবেদন নাকচ করে দুদিনের জেল হেফাজত দেন। পাশাপাশি মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসারকে এদিন পুলিশ হেফাজতের সপক্ষে নথিপত্র পেশ করতে নির্দেশ দেন।
এদিন সকালে বালুরঘাট জেল থেকে ধৃত গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল বসাক, প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা সিপিএম জোনাল সম্পাদক বলরাম ঘোষ এবং জেলা নেতা অচিন্ত্য চক্রবর্তীকে কড়া পুলিশি প্রহরায় গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। ধৃতদের পক্ষে আইনজীবী তড়িৎ ওঝা, শিবতোষ চট্টোপাধ্যায় আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়ে বলেন, মামলার তদন্তকারী অফিসার পূর্ণ তদন্তের জন্য জেরা করেননি। ফলে তাদের জামিন দেওয়া হোক।”
সরকারি আইনজীবী জনার্দন প্রসাদ সিংহ আদালতে জানান, তদন্তকারী অফিসার দুটি মামলার অভিযোগকারী। তিনি অভিযোগে জানিয়েছেন, দমদমা সমবায়ের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধ, পুলিশের উপর হামলা, বন্দুক ছিনতাইয়ের চেষ্টা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচূরের অভিযোগের ঘটনায় ধৃত বলরাম ঘোষ ঘটনায় আরও লোকজন ও অস্ত্রশস্ত্র ছিল বলে জেরায় জানিয়েছেন। তাই মামলার পূর্ণতদন্তের জন্য ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করেছেন তদন্তকারী অফিসার।
বলরামবাবুর ওই জবানবন্দির নথি সাজানো বলে অভিযোগ করেছেন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সঙ্ঘের জেলা সম্পাদক শিবতোষ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মামলা দুটির চার্জশিট পুলিশ আগেই আদালতে দাখিল করেছে। ধৃত বলরামবাবুদের গত ২১ জুন গ্রেফতার করার পর থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা ধরে হরিরামপুর থানায় আটকে রাখা হয়। তাকে জেরা করা হয়নি। তিনি পুলিশকে কিছু বলেননি বলে লিখিতভাবে বলরামবাবু আদালতকে জানিয়েছিলেন।
আইনজীবী শিবতোষবাবুর অভিযোগ, “গতবছর দমদমায় ঘটনার দিন তৃণমূলের হামলায় সিপিএমের জেলা নেতা অচিন্ত্য চক্রবর্তী গুরুতর জখম হন। মাথায় ১০টি সেলাই পড়ে। হামলার প্রতিবাদে সিপিএমের তরফে পথ অবরোধ হয়। পুলিশ গিয়ে লাঠি চালিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। অচিন্ত্যবাবুর উপর হামলায় অভিযোগের মামলার তদন্ত এখনও হয়নি। তাছাড়া পুলিশের বন্দুক ছিনতাইয়ের অভিযোগও মিথ্যা।”
|