|
|
|
|
প্রবন্ধ ১... |
মিছিলে কারা হাঁটলেন, কারা হাঁটলেন না
যিনি বিবেক আর শুভবুদ্ধির ডাকে জনসমাবেশে যোগ দেবেন, তিনিই স্বাগত।
আর,
ব্যক্তিবিশেষের
দিক থেকে কে কী করবেন, কোন সমাবেশে যাবেন বা যাবেন না,
সে বিচার
তাঁর নিজের।
নাগরিক সমাজের
তা নিয়ে খবরদারি করার কোনও অধিকার নেই।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় |
মাননীয় শঙ্খ ঘোষ প্রমুখের ডাকা শুক্রবারের মিছিল নিয়ে কিছু বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন, ‘এই বিদ্বজ্জনেরা কী চান?’ এর উত্তর সহজেই দেওয়া যায়। মিছিলের আহ্বায়কেরা একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। তাতে সাম্প্রতিক নারীনিগ্রহ, ধর্ষণ আর হত্যার প্রসঙ্গ তুলে বলা হয়েছিল যে দুষ্কৃতীদের স্পর্ধা লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছে, তারা মনে করছে যা খুশি তাই করতে পারে। এই নিয়ে সরকারের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনও রাজনৈতিক দাবি সেই বিবৃতিতে ছিল না। কিন্তু বিদ্বজ্জনদের ডাকে সাড়া দিয়ে সে দিনের মিছিলে যে হাজার হাজার মানুষ এসেছিলেন, তাঁরা সকলেই যে শুধু ওইটুকুই দাবি করতে চেয়েছিলেন, এমন নয়। অসংগঠিত মিছিল, তার কোনও নির্দিষ্ট স্লোগান ছিল না, পতাকা ছিল না। কোনও ভলান্টিয়ার ছিল না, যারা মানুষকে সুশৃঙ্খল সারিতে বেঁধে রেখে মিছিল কন্ট্রোল করবে। নানা ছোট ছোট গোষ্ঠী-সংগঠন ছাত্রছাত্রী বন্ধুবান্ধবের দল যে যার নিজেদের মতো স্লোগান দিচ্ছিলেন। অনেককে দেখলাম, দৃশ্যত একা-একা হাঁটছেন, আশেপাশে কাউকে চেনেন না, কিন্তু কোনও এক কর্তব্যের টানে কিছুক্ষণের জন্য হলেও জনসমাবেশের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছায় চলে এসেছেন।
সে দিন মিছিলে হেঁটে আমার মনে হয়েছে, অনেকটাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এত লোক জমায়েত হওয়ার প্রাথমিক উপলক্ষ ছিল কামদুনির ঘটনার অবিশ্বাস্য নৃশংসতা। কিন্তু রাজ্যবাসীকে যা আরও বেশি নাড়া দিয়েছে, তা হল কামদুনির মানুষের, বিশেষ করে সেখানকার মহিলাদের, প্রতিবাদ করার সাহস। সেই গ্রামে স্থানীয় রাজনৈতিক ক্ষমতার যা চেহারা, তাতে এই সাহস কিছু কম অবিশ্বাস্য নয়। মিছিলে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেরই মনে হয়েছিল, এই মহিলারা এত হুমকি আর আতঙ্ক সত্ত্বেও যদি এতটা সাহস দেখাতে পারেন, তা হলে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের কর্তব্য। |
|
‘অসহ্য! আর পারা যাচ্ছে না’। কলকাতা, ২১ জুন, ২০১৩। ছবি: সুদীপ আচার্য |
তাই সে দিনের মিছিলে অনেক বিক্ষিপ্ত দাবি উচ্চারিত হলেও সাধারণ দাবি ছিল দুটো। প্রথমটা নিরাপত্তার দাবি। সাধারণ মানুষের যে দৈনন্দিন নিরাপত্তাটুকু না থাকলে স্বাভাবিক জীবনযাপনই অসম্ভব হয়ে পড়ে, পশ্চিমবাংলার গ্রামে-শহরে পাড়ায়-পাড়ায় সেই ন্যূনতম নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন মানুষ, বিশেষ করে মহিলারা। এই অবস্থা এক দিনে তৈরি হয়নি। সমাজবিরোধীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের যোগাযোগ বহু বছর ধরে পুষ্ট হতে হতে এইখানে পৌঁছেছে। কিন্তু যে-কোনও ক্রমবর্ধমান সমস্যা বাড়তে বাড়তে এক সময় একটা চরম বিন্দুতে পৌঁছয়, যখন লোকে বলে ওঠে ‘অসহ্য! আর পারা যাচ্ছে না।’ কামদুনির ঘটনা এমন একটা চরম বিন্দু। তাই ব্যাপক মানুষ কামদুনির মহিলাদের মতো আজ দাবি করছেন, দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব প্রশাসনের, সরকার সেই প্রাথমিক দায়িত্বটুকু পালন করুক।
সরকারি দলের পক্ষ নিয়ে অনেকে অবশ্য বলছেন, পুলিশ তো ব্যবস্থা নিয়েছে। অপরাধীদের ধরা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে গাফিলতিটা কোথায়? এই সাফাইটা মেনে নেওয়া কঠিন। দিনের বেলা দল বেঁধে মত্ত অবস্থায় কলেজফেরত ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনা ঘটলে স্বাভাবিক যে-প্রশ্নটা ওঠে, সেটা হল, ঘটনাটা ঘটতে দেওয়া হল কী ভাবে? পুলিশ এত দিন কী করছিল? অর্থাৎ, প্রশাসনের গাফিলতি ঘটনার পরে নয়, ঘটনার আগে। পুলিশের প্রাথমিক দায়িত্ব প্রতিটি থানা এলাকায় দিনে-রাতে রাস্তায়, দোকান-বাজারে, যানবাহনে, প্রকাশ্য স্থানে শান্তি বজায় রাখা, যাতে এলাকার মানুষ নিরাপদ বোধ করেন। কিন্তু পশ্চিমবাংলায় বেশ কিছু বছর ধরে পুলিশের এই দৈনন্দিন দায়িত্বপালনে খামতি দেখা গিয়েছে। তার প্রধান কারণ, সমাজবিরোধীদের সঙ্গে রাজনৈতিক দল আর নেতাদের যোগ, যার ফলে পুলিশের কাজে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত এক বছরে পার্ক স্ট্রিট আর গার্ডেনরিচের ঘটনায় তার চূড়ান্ত রূপ দেখা গেল, যখন শীর্ষস্থানীয় পুলিশ অফিসারদেরও কর্তব্য পালন করতে গিয়ে শাস্তি পেতে হল। অনেকেই মনে করছেন, পশ্চিমবাংলার পুলিশ-প্রশাসন শাসক দলের তোষামোদি করতে গিয়ে তাঁদের ন্যূনতম দৈনন্দিন দায়িত্বপালনের মানসিকতাটুকুও বিসর্জন দিয়েছেন। সেই জন্যই নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের এত উৎকণ্ঠা।
শুক্রবারের মিছিলে ফিরে আসি। মিছিলের দ্বিতীয় দাবি ছিল রাজনৈতিক। একের পর এক ঘটনায় দেখা গেছে, শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা ঘটনার গুরুত্ব অস্বীকার করছেন, তুচ্ছ ব্যাপার বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। তার চেয়েও বড় কথা, অভিযোগ উঠলেই তার পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি, এমনকী ষড়যন্ত্রের ছায়া দেখছেন। এই প্রবণতার সবচেয়ে হাস্যকর নিদর্শন শোনা গেল কামদুনির ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে। সেই গ্রামের যে মহিলারা তাঁকে কিছু বলার জন্য ছুটে এসেছিলেন, তাঁরা যে মাওবাদী, তা নাকি তিনি তাঁদের পোশাক-আশাক দেখেই বুঝে গিয়েছিলেন। তার ওপর সে দিন যে চার জন সিপিএমের লোক এক সাংবাদিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে দু’ঘণ্টার জন্য তাঁকে তাঁর নিরাপত্তা বাহিনীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন, সেই তথ্যটাও তিনি প্রকাশ্য জনসভায় ঘোষণা করে দিলেন। এমন সব আজব মন্তব্য নিয়ে তামাশার অন্ত নেই। এক প্রবীণ চিত্রপরিচালককে বলতে শুনলাম, বহু দিন পর বাঙালি আবার এক বড় মাপের কমেডিয়ান পেয়েছে। কিন্তু মন্তব্যের সূত্র যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, সেখানে তা কেবল রঙ্গরসিকতায় সীমিত থাকতে পারে না। তিনি যখন কারও দিকে আঙুল তুলে বলেন, এ হল মাওবাদী; তার অর্থ, ‘সাবধান, আমি তোমায় চিনে ফেলেছি। এ বার আমার লোকেরা তোমার ওপর নজর রাখবে।’ তিনি যখন কোনও সাংবাদিকের বা টিভি চ্যানেলের নাম করে বলেন, এরা আমায় হত্যার চক্রান্ত করছে, তার মানে হল, ‘খেয়াল রেখো, এর পর তোমায় মামলায় জড়াব, আমার লোকেরা তোমার পিছনে লাগবে।’ এ হল ভয় দেখানো, যাতে কেউ অভিযোগ জানাতে বা প্রতিবাদ করতে সাহস না পায়। এটা শাসক দলের সন্ত্রাস, যা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের নামান্তর। এমন সন্ত্রাস পশ্চিমবাংলার মানুষ বামফ্রন্টের আমলে অনেক দেখেছে। শুক্রবারের মিছিলের দ্বিতীয় ঘোষণা তা-ই ছিল, প্রতিবাদের অধিকার দাবি করা। পরিবর্তনের নামে মানুষ যে তাদের নাগরিক অধিকার ছেড়ে দিতে রাজি নয়, তা সরকারি দলের নেতাদের জানানো।
কিন্তু এখানে আর একটা প্রশ্ন উঠে পড়ছে। অনেকে বলেছেন, সে দিনের মিছিলে এমন অনেকে ছিলেন, যাঁরা তাপসী মালিকের হত্যা বা নন্দীগ্রামের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এক বারও মুখ খোলেননি। আজ তাঁরা যে-মিছিলে হাঁটছেন, সে মিছিলের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কী? বামফ্রন্ট সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে এক দিন যাঁরা নাগরিক সমাজকে রাস্তায় নামিয়েছিলেন, আজ তাঁরা স্বীকৃত বামফ্রন্ট সমর্থকদের সঙ্গে মিছিলে হাঁটবেন কেন? এই যুক্তিতে গত বৃহস্পতিবার স্বতন্ত্র এক সমাবেশ হয়। সেখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা অনেকে শুক্রবারের মিছিলে যোগ দেননি। মনে রাখা দরকার, কোনও বিশেষ অভিযোগ বা দাবি নিয়ে যখন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে কোনও সমাবেশের আয়োজন করা হয়, তখন সাধারণ ভাবে বলা হয়ে থাকে যে, সেই দাবি যাঁরা সমর্থন করছেন, দলমতনির্বিশেষে তাঁরা সেই সমাবেশে যোগ দিতে পারেন। শুক্রবারের মিছিল নিয়ে যাঁরা আপত্তি তুলেছেন, তাঁরা বলতে চাইছেন যে, কিছু বিশেষ দলমতের লোকের উপস্থিতি নাগরিক সমাজে কাম্য নয়। কথাটা কি গ্রহণযোগ্য?
নন্দীগ্রামের সময় চুপ করে থাকার পর আজ যাঁরা তৃণমূলের সন্ত্রাস নিয়ে সরব হয়েছেন, তাঁদের রাজনৈতিক সততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা বিচিত্র নয়। নিন্দুকরা বলতেই পারেন, পক্ষেও যুক্তি আছে। সে দিন যাঁরা বামফ্রন্ট শাসনের অবসান চেয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তৃণমূল কংগ্রেস তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করেছিলেন, আর আজ মাত্র দু’বছর যেতে না যেতে যাঁদের তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করতে হচ্ছে, তাঁদের রাজনৈতিক বিচক্ষণতা বা দূরদৃষ্টি নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়। অনেকে বলতেই পারেন, পরিবর্তিত সরকার যে সেই দলতন্ত্রের পাঁকেই নিমজ্জিত থাকবে, তা যে এক খামখেয়ালি পরিকল্পনাহীন স্বৈরাচারে পর্যবসিত হবে, যে-কোনও বিচক্ষণ ব্যক্তি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক চরিত্র দেখে দু’বছর আগেই তা বলে দিতে পারতেন। প্রথম যুক্তি সততা নিয়ে। খানিকটা ধর্মের যুক্তি। দ্বিতীয়টা বিচক্ষণতা নিয়ে, তা নীতির যুক্তি।
রাজনীতিতে দু’রকম যুক্তিরই স্থান আছে। কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদের তাৎপর্য বদলায়। কোনও আন্দোলন যখন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্যে পৌঁছনোর উদ্দেশ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংগঠন গড়ার চেষ্টা করে, তখন কাকে দলে নেওয়া হবে বা হবে না, সভ্য-সমর্থকেরা কী বলবেন বা বলবেন না, কোন সভায় যাবেন বা যাবেন না, তাই নিয়ে সংগতভাবেই নিয়ম-নির্দেশ জারি করা হয়। আবার, দল বা নেতার আগের বক্তব্য বা কাজের সঙ্গে পরের বক্তব্য বা কাজের সংগতি থাকছে কি না, তা নিয়ে ন্যায্য প্রশ্ন উঠতে পারে। আর বিচক্ষণতা নিয়ে তো রাজনৈতিক দল বা নেতাদের সর্বদাই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। কিন্তু নাগরিক সমাজের আন্দোলনের তো কোনও সামগ্রিক রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকে না, কোনও দীর্ঘমেয়াদি সংগঠন গড়ার পরিকল্পনা থাকে না। সেখানে সততা আর বিচক্ষণতার প্রশ্ন উঠতে পারে কি?
২০১১-র আগে শেষ যখন পশ্চিমবাংলায় বড় রকমের পালাবদল হয়েছিল, সেই ১৯৭৭ সালের একটা বিতর্কের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। জরুরি অবস্থা তুলে নিয়ে নির্বাচন ঘোষিত হওয়ার পর আবার যখন প্রকাশ্য রাজনৈতিক সমাবেশ সম্ভব হল, তখন পশ্চিমবাংলার কারাগারে আটক কয়েক হাজার রাজনৈতিক বন্দির মুক্তির জন্য একটা আন্দোলন শুরু হয়। সেই বন্দিদের অধিকাংশই ছিলেন নকশালপন্থী। একটা কমিটির পক্ষ থেকে তাঁদের মুক্তি দাবি করে দলমতনির্বিশেষে সকলকে নানা মিটিং-মিছিলে অংশ নিতে ডাক দেওয়া হয়। সিপিএম যদিও নীতিগতভাবে সমস্ত রাজনৈতিক বন্দির মুক্তির দাবি সমর্থন করত, বন্দিমুক্তি কমিটির কোনও সভায় বা মিছিলে তাদের কোনও প্রতিনিধি আসতেন না। কিন্তু গোল বাধল সিপিআই’কে নিয়ে। জরুরি অবস্থার সময় সিপিআই ছিল ইন্দিরা কংগ্রেসের সহযোগী দল। তাদের কি বন্দিমুক্তির সভায় বা মিছিলে আসতে দেওয়া যায়? বন্দিমুক্তি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই ছিলেন এমার্জেন্সি শাসনের প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগী। ইন্দিরা গাঁধী তথা সিদ্ধার্থ রায় ছিলেন তাঁদের সমালোচনার প্রধান লক্ষ্য। কংগ্রেস-সহযোগী দলের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা আমাদের মিছিলে হাঁটবেন কেন? মনে আছে, দক্ষিণ কলকাতার এক মিছিলে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নিয়ে আমায় বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে হয়েছিল। অনেক তর্কাতর্কির পর স্থির হয়, বন্দিমুক্তির দাবি সমর্থন করেন এমন যে-কোনও ব্যক্তি মিছিলে হাঁটতে পারবেন, তাঁর রাজনৈতিক ইতিহাস পরীক্ষা করে দেখা আন্দোলনের কাজ নয়।
শুক্রবারের মিছিলের উপলক্ষ ছিল তাৎক্ষণিক, তার দাবি ছিল সীমিত। এখনও পর্যন্ত নাগরিক সমাজের এই আন্দোলনের কোনও দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক লক্ষ্য দেখা যায়নি। এই সমাবেশে যাঁরা আসবেন, তাঁদের রাজনৈতিক অতীত খতিয়ে দেখতে হলে সমাবেশের মাথায় একটা স্ক্রিনিং কমিটি বসাতে হয়। তা সম্ভবও নয়, সে এক্তিয়ারও কারও নেই। এখানে সততার প্রশ্নটা হল এই যে, যিনি বিবেক আর শুভবুদ্ধির ডাকে কোনও রকম প্রাপ্তির আশা না নিয়ে জনসমাবেশে যোগ দেবেন, তিনিই স্বাগত। আর বিচক্ষণতার প্রশ্নও একটা থাকতে পারে। আয়োজকদের দিক থেকে সেটা হল, দাবির সমর্থনে নাগরিক সমাজকে যথাসম্ভব প্রসারিত করা। ব্যক্তিবিশেষের দিক থেকে কে কী করবেন, কোন সমাবেশে যাবেন বা যাবেন না, সে বিচার তাঁর নিজের। নাগরিক সমাজের তা নিয়ে খবরদারি করার কোনও অধিকার নেই।
|
নিউ ইয়র্কে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃতত্ত্বের অধ্যাপক, কলকাতায় সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশাল সায়েন্সেস-এ সাম্মানিক অধ্যাপক
|
পুরনো খবর: প্রতিবাদী স্বরের পাশে রইল রাজনীতির মুখও |
|
|
|
|
|