ফের বিশেষজ্ঞ
কাচ লাগাতে গোড়ায় গলদ টার্মিনালে
লকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল থেকে একের পর এক কাচ কেন ভেঙে পড়ছে, তা খতিয়ে দেখতে আবার নতুন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, নতুন করে তদন্ত চালাতে চারটি সংস্থাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে একটি বিদেশি, বাকি তিনটি ভারতীয়। চারটি সংস্থার কাছ থেকে দরপত্র চাওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের অধিকর্তা বি পি শর্মা বলেন, “নতুন এই সংস্থাগুলিতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ থাকবেন। যে সংস্থাকে দিয়ে নতুন করে তদন্ত করানো হবে, দু’মাসের মধ্যে তাঁদের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হবে।”
নতুন এই টার্মিনাল থেকে যাত্রী-বিমানের যাতায়াত শুরু হয়েছে গত ১১ মার্চ। তার পরে এখন পর্যন্ত ৫০-৫৫টি কাচ ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়েছে। এক বার আহত হয়েছেন এক সিআইএসএফ জওয়ান। শনিবারেও একটি কাচ ভাঙে। প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও পরে নড়েচড়ে বসেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এই কাচ ভারতে তৈরি হলেও ভেঙে পড়া কাচের টুকরো অস্ট্রিয়া ও আমেরিকার গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা যায়, কাচের উৎপাদনগত ত্রুটি নেই। কাচ ভাঙার কারণ খুঁজতে এক বিশেষজ্ঞকে নিয়োগ করা হয়। সম্প্রতি সেই রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে। বিমানবন্দরের অধিকর্তা বি পি শর্মা বলেছেন, “আমরা এই রিপোর্টে সন্তুষ্ট নই।” তাই নতুন করে তদন্ত কমিটি গড়তে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা।
কাচ ভাঙছেই। —নিজস্ব চিত্র
তদন্ত বলছে, কাচের অন্যতম উপাদান নিকেল সালফাইড। কিছু কিছু কাচের ভেঙে পড়ার ক্ষেত্রে সেই নিকেল সালফাইড-ই দায়ী। কিছু ক্ষেত্রে কাচকে ধরে রাখার পরিবর্তে ভেঙে ফেলছে নিকেল সালফাইড। তা ছাড়া ভিতরে ও বাইরে উত্তাপের হেরফেরেও কাচ ভাঙতে পারে। টার্মিনালের উপরের দিকের দেওয়াল যেহেতু বাঁকানো, তাই ভেঙে পড়ছে উপরের দিকের কাচ। বি পি শর্মার কথায়, “এই সমস্যার কোনও সমাধান রিপোর্টে বলা নেই। বলা হয়েছে নিকেল সালফাইড-এর প্রভাব কাচের ভিতরে প্রায় দু’বছর থাকবে। তার পরে আর সেই রাসায়নিকের কোনও প্রভাব থাকবে না।”
প্রশ্ন উঠেছে, কলকাতা শহরেই কাচে মোড়া অনেক বাড়ি রয়েছে। দিল্লি-মুম্বই-হায়দরাবাদ-বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরেও কাচ বসানো হয়েছে। এমনকী বিদেশের বহু বিমানবন্দরের টার্মিনালই এ রকম কাচে মোড়া। তা হলে শুধু কলকাতার ক্ষেত্রে এমন কেন হচ্ছে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞেরা?
স্থপতি মলয় ঘোষের কথায়, “সমস্যাটা সম্ভবত কাচ ঠান্ডা করার প্রক্রিয়া নিয়ে। কাচ দৃঢ় করার সময়ে তাকে প্রায় ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গরম করতে হয়। কাচের ভিতরেই থাকে নিকেল সালফাইড। ওই গরমে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তার ভোল বদলে যায়। ঠান্ডা করা হলে আগের চেহারায় ফিরে আসে নিকেল সালফাইড। কিন্তু দু’রকম প্রক্রিয়ায় কাচ ঠান্ডা করা হয়। এক, খুব তাড়াতাড়ি। দুই, সময় নিয়ে ধীরে ধীরে। তাড়াহুড়ো করলে প্রায় পাঁচ শতাংশ কাচে নিকেল সালফাইড পুরনো চেহারায় ফিরতে পারে না। সেই কাচগুলিই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। অথচ সময় নিয়ে ঠান্ডা করলে নিকেল সালফাইড ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রেই পুরনো চেহারায় ফিরে আসে।” যার অর্থ, বিমানবন্দরে ব্যবহৃত কাচ ঠান্ডা করার সময়ে তাড়াহুড়ো করা হয়েছিল।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.