ফের ডলারের তুলনায় ঐতিহাসিক নীচে টাকা।
সোমবারই আরও ৪১ পয়সা পড়ে গত সপ্তাহের পতনের নজির ভাঙল ভারতীয় মুদ্রা। দিনের শেষে এক ডলার ছুঁল ৫৯.৬৮ টাকা। ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারীদের বিপুল শেয়ার বিক্রিই যার মূল কারণ। এই একই কারণ টেনে নামিয়েছে শেয়ার সূচককেও। ২৩৩ পড়ে সেনসেক্স গত দু’মাসের মধ্যে সব থেকে নীচে নেমে ১৮,৫৪০.৮৯ পয়েন্ট ছুঁয়েছে। শুধু বিদেশি লগ্নিকারীরাই এ দিন প্রায় ১৫৫৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে বলে বাজার সূত্রের খবর। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্টি-ও ৭৭ পয়েন্ট পড়ে দাঁড়ায় ৫৫৯০ পয়েন্টে। এনএসই-র শেয়ার দর ওঠা-পড়া সংক্রান্ত সূচক বা ‘ভোলাটিলিটি ইন্ডেক্স’ ১০.৪ % বেড়ে হয়েছে গত এক বছরে সর্বোচ্চ।
এর আগে গত ২০ জুন টাকা সবচেয়ে নীচে নেমে বাজার বন্ধের সময়ে ছুঁয়েছিল ৫৯.৫৭। দিনের সর্বনিম্ন দর ছিল আরও নীচে, ৫৯.৯৩। সোমবার তলানি ছিল কিছুটা উঁচুতে, ৫৯.৮৩। প্রতি ডলারের দাম ৬০ টাকার কাছাকাছি চলে যাওয়ায় এ দিন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বাজারে ডলার বিক্রির মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করে, দাবি লেনদেনকারীদের। তবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানায়নি।
টাকার পতনের জন্য বিদেশি লগ্নিকারীদের শেয়ার বিক্রি ছাড়া অন্য যে-সব কারণকে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা, সেগুলি হল:
• চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ।
• মাসের শেষে তেল আমদানি খাতে বাড়তি ডলারের চাহিদা।
• মার্কিন র্থননীতির হাল ফেরার আশায় বিশ্ব বাজারে চাঙ্গা হয়ে ওঠা ডলার।
• ভারতে দুর্বল শেয়ার বাজার
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, টাকার পড়তে থাকা দামের জেরে ভারতীয় অর্থনীতি এক দুষ্টচক্রের ফেরে পড়েছে। টাকার পতনে তেল, সার-সহ বহু পণ্য আমদানির খরচ বাড়ায় চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি প্রায় আকাশছোঁয়া। আবার ওই ঘাটতির দরুন ভারতীয় অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কায় এই বাজারে শেয়ার ও বন্ড বিক্রি করে লগ্নি তুলে নিচ্ছেন বিদেশিরা। যার পরিণতি ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি ও টাকার আরও পতন। তাঁদের মতে, এই আবর্ত থেকে টাকাকে বার করতে অর্থনীতির হাল ফেরানো ছাড়া গতি নেই।
আমেরিকার উপর থেকে মন্দার মেঘ কিছুটা সরার আশাও বিদেশি লগ্নিকারীদের ভারত থেকে লগ্নি সরিয়ে নেওয়ার অন্যতম কারণ বলে বাজার সূত্রের খবর। সম্প্রতি মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্কের কর্তা বার্নানকে ধাপে ধাপে আর্থিক ত্রাণ তুলে নেওয়ার কথা বলে অর্থনীতির হাল ফেরার স্পষ্ট ইঙ্গিতই দিয়েছেন। |