লোকশিল্পীকে ‘হেনস্থা’র প্রতিবাদে মিছিল
বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া একটি জমি ঘিরতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পী স্বপ্না চক্রবর্তীকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে সোমবার তোলপাড় হল সিউড়ি শহর। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। নিরাপত্তার দাবিতে এ দিন সকালে জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন ওই শিল্পী এবং স্বামী মানস চক্রবর্তী। পুলিশ সুপার মরলীধর শর্মা তাঁকে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। এর পর স্বপ্নাদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে শেখ হিরণ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই জামিন পেয়ে যান তিনি। এ দিকে, ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যায় সিউড়ি শহরে স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা একটি মিছিল করেন।
রবিবার সকালে স্বপ্নাদেবীর বাড়ির কাছাকাছি একটি জায়গা (১৫২৯ দাগ নম্বরে ওই জায়গাটির মালিকানা নিয়ে ২০১১ সালে সিউড়ি আদালতে মামলা হয়। এখনও মামলাটি চলছে) ঘিরতে যাওয়া নিয়ে ওই শিল্পী ও তাঁর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে বিবাদ বাধে পড়শির। স্বপ্নাদেবী ও মানসবাবুর দাবি, জায়গাটি বছর তিনেক আগে তাঁর পালিত পুত্র লালমোহন পাল ও তার বন্ধু মহম্মদ সামিম কিনেছেন। ওই জমির দলিল, রেকর্ড এখন ওঁদের নামে। কিন্তু পড়শি শেখ কুতুবউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী বদরুন্নেসা বিবি ওই জমির আসল মালিক বলে দাবি করছেন। রবিরার যখন স্বপ্নাদেবীর ছেলে ও তার বন্ধু জমি ঘিরতে গেলে বিরোধ বাধে।
সোমবার সিউড়িতে ছবিটি তুলেছেন তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
মানসবাবুর অভিযোগ, “তখনই শেখ কুতুবউদ্দিনের পরিবারের লোকেরা এসে চড়াও হয়। কুতুবউদ্দিনের বড় ছেলে শেখ হিরণ আমাদের বাড়িতে এসে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। গালিগালাজ করে। মারধর করে বউমাকেও। শুধু তাই নয়, থানার মধ্যেই আমাদের ফের হেনস্থা করে কুতুবউদ্দিনের ছোট ছেলে শেখ হুমায়ুন, ওঁদের আইনজীবী করম হোসেন খান। ওঁরা নিজেদের তৃণমূল নেতা পরিচয় দিয়ে এ সব করেছেন। আমার স্ত্রীকেও ঘুষি মারে হিরণ।” থানায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ অবশ্য স্বীকার করেনি।
অন্য দিকে, অভিযোগ উড়িয়ে শেখ হুমায়ুন বলেন, “এখানে দলের কোনও প্রশ্নই নেই। আর দল করি বলেই নিজেদের সম্পত্তি রক্ষা করতে পারবো না।” তাঁর দাবি, “ওই জমি আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি। কেউ কোনও ভাবে জয়গা কিনে নিজেদের নামে রেকর্ড বের করলেই সেটা তাঁদের হয়ে যায় না। সে জন্যই তো মমলা করেছি। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার আগে সেখানে কাজ করতে যাওয়ায় বাধা দিয়েছি।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “কিন্তু স্বপ্নাদেবী আমার মেজ দাদাকে পিঠে কামড়ে দিয়েছেন। লাথি মেরে আমার অন্তঃসত্ত্বা বউদিকে ফেলে দেন ওঁর সঙ্গে থাকা লোকজন। বউদি ওঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আসলে উনি শিল্পী হওয়ায় প্রভাব খাটাচ্ছেন।” প্রায় একই অভিযোগ আইনজীবী করম হোসেন খানেরও। তিনি বলেন, “আমি ওই মামলার রেকর্ডেড আইনজীবী। আমার তো আধিকার রয়েছে নিজের মক্কেলকে সাহায্য করার। এখানে তৃণমূল এল কী ভাবে বুঝতে পারছি না।” হুমায়ুনের পাল্টা প্রশ্ন, “ওঁর অভিযোগে যদি আমার দাদাকে গ্রেফতার করা হতে পারে, তা হলে বউদির করা অভিযোগে ওঁদের কাউকে কেন গ্রেফতার করল না পুলিশ?” মানসবাবু অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
জেলা পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা বলেন, “এখনও পর্যন্ত আর কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তদন্ত চলছে।” তবে স্বপ্নাদেবীর নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবেন বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.