শ্মশান লাগোয়া জমির দখল নিয়ে দুই এলাকার গোলমালের জেরে বিক্ষোভ দেখানো হল পুরসভাতেও। সোমবার ফরিদপুরের বাসিন্দাদের নিয়ে পুরসভায় বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিসর হীরা বাউড়ি। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল কাউন্সিলর তথা বোরো চেয়ারম্যান চন্দন সাহার নেতৃত্বে ৫৪ ফুট এলাকার কয়েকজন ফরিদপুরে এসে অশান্তি করছেন। বাড়ছে অসামাজিক কাজকর্ম। এতে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
রবিবার সকালে ফরিদপুর শ্মশানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় ৫৪ ফুট এলাকার লোকজনের। তাঁদের অভিযোগ, ওই শ্মশান দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা ব্যবহার করে আসছেন। কিন্তু কিছু দিন ধরে ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দারা তাঁদের শ্মশান ব্যবহার করতে দিতে চাইছেন না। বচসা থেকে বিরোধ হাতাহাতি পর্যন্ত পৌঁছায়। শেষে পুলিশ এসে দুই পক্ষকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনার প্রতিবাদে ফরিদপুরবাসীরা রবিবার জাতীয় সড়কের ধারে ফরিদপুর ফাঁড়ি ঘেরাও করেন। কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচলও ব্যহত হয়। ৫৪ ফুট এলাকার লোকজনও দুর্গাপুর থানা ঘেরাও করেন। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা বোরো কমিটির চেয়ারম্যান চন্দন সাহা। |
দুর্গাপুর পুরসভার সামনে বিক্ষোভ চলছে। —নিজস্ব চিত্র। |
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, শ্মশান লাগোয়া দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার প্রায় ২১ বিঘা জমি অব্যবহৃত পড়ে রয়েছে। সম্প্রতি সেই জমি বেআইনি ভাবে ‘লিজ’ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় দু’টি পক্ষ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই দুই পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন দুই তৃণমূল কাউন্সিলর। একজন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হীরা বাউড়ি, অন্য জন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চন্দন সাহা। স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, জমির দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ বাড়ছে। এ দিনের গোলমালও সেই নিয়েই। যদিও দুই কাউন্সিলরই জমি দখল নিয়ে গোলমালের কথা অস্বীকার করেছেন।
সোমবারও ফরিদপুরের বাসিন্দাদের নিয়ে এসে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভায় বিক্ষোভ দেখানের সময় হীরাবাবু বলেন, “দলের কাউন্সিলর হোন বা অন্য কেউ, ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের স্বার্থ বিঘ্নিত হলে আমি ছাড়ব না।” তাঁর দাবি, বাইরে থেকে এসে ফরিদপুরে গোলমাল পাকানো বন্ধ করতে হবে। চন্দন সাহার সঙ্গে এ দিন অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি। তবে মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ শুনেছি। সবদিক খতিয়ে দেখে যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার তা নেওয়া হবে।”
|