শ্মশান নিয়ে বিবাদ, রুদ্ধ জাতীয় সড়ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
শ্মশান ব্যবহার নিয়ে দুই পাড়ার গোলমাল, সেখান থেকে ফাঁড়ি ঘেরাও ও জাতীয় সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটল দুর্গাপুরের ফরিদপুরে। রবিবারের ঘটনা। পরে অবশ্য পুলিশ গিয়ে দু’পক্ষকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে ফরিদপুরের বাসিন্দা এবং ওই শ্মশানের পরিচালন কমিটির সম্পাদক হারাধন সামন্তের মৃত্যু হয়। সকালে দাহ করার জন্য তাঁর দেহ শ্মশানে নিয়ে আসেন ফরিদপুরের বাসিন্দারা। তখন সেখানে হাজির ছিলেন স্থানীয় ৫৪ ফুট এলাকার লোকজনও। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ওই শ্মশান ব্যবহার করছেন। কিন্তু সম্প্রতি ফরিদপুরের বাসিন্দারা তাঁদের নানা অজুহাতে ফেরানোর চেষ্টা করছেন। এ নিয়েই এ দিন দু’পক্ষের মধ্যে বচসা ও হাতাহাতি শুরু হয়। খবর পেয়ে ফরিদপুর ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশও দু’পক্ষের ঠেলাঠেলির মাঝে পড়ে যায় বলে অভিযোগ। পরে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী এসে দু’পক্ষকে লাঠি উঁচিয়ে হঠিয়ে দেয়। ফরিদপুরের বাসিন্দা সত্যেন মণ্ডল, শ্যামল মুখোপাধ্যায়দের অভিযোগ, “শবদাহের জন্য শ্মশানে এসেছিলাম। বেমক্কা আমাদের পুলিশ তাড়া করল।” ঘটনার প্রতিবাদে ফরিদপুরের লোকজন জাতীয় সড়কের ধারে ফরিদপুর ফাঁড়ি ঘেরাও করেন। ফলে কিছুক্ষণের জন্য থমকে যায় যান চলাচল। অন্য দিকে, ৫৪ ফুট এলাকার লোকজনও দুর্গাপুর থানা ঘেরাও করেন। তাঁদের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা বোরো কমিটির চেয়ারম্যান চন্দন সাহা। |
থমকে যান চলাচল। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের সমস্যা শুধু শ্মশান ব্যবহার নিয়ে নয়। ফরিদপুর শ্মশান লাগোয়া দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার প্রায় ২১ বিঘা জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সম্প্রতি সেই জমিতে দোকান পাট বসানো হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর ফলে রাতে অসামাজিক কাজকর্ম বাড়ছে। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। ঘটনার পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, স্থানীয় ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হীরা বাউড়ি ফরিদপুরের বাসিন্দাদের পিছনে রয়েছেন। আর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বোরো কমিটির চেয়ারম্যান চন্দন সাহা রয়েছে ৫৪ ফুট এলাকার বাসিন্দাদের পিছনে। এই জমির দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে বিবাদ বাড়ছে। এ দিন তা হাতাহাতির রূপ নেয় বলেও বাসিন্দাদের দাবি।
তৃণমূলের দুই কাউন্সিলরই অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে চাননি। চন্দনবাবু বলেন, “সিপিএমের লোকজন জমির কারবারে জড়িত। তা থেকেই গণ্ডগোল। পুলিশের কাছে দাবি জানিয়েছি, অবিলম্বে এই বেআইনি কাজ বন্ধ করতে হবে।” অন্যদিকে হীরাবাবু বলেন, “আমি বাইরে আছি। যতটা জেনেছি, এখানে কোনও রাজনীতি নেই। একদল লোক এসে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেছিল। গ্রামবাসীরা যৌথভাবে তা প্রতিরোধ করেছেন।” |