বর্ষার শুরুতেই নিকাশি পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ইটাহার সদর এলাকার বাসিন্দাদের। অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টি হলেই ইটাহার সদরের বিভিন্ন এলাকায় ৬-৭ ঘণ্টা পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে থাকে। বাসিন্দাদের হাঁটাচলা করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দোকানে জল ঢুকে পড়ে। বর্তমানে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে যাওয়া নানা রাজনৈতিক দলের প্রার্থী, সমর্থকদের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ শুনতে হচ্ছে।
ভোটের মুখে এলাকার নিকাশি নিয়ে দোষারোপ আর প্রতিশ্রুতি চলছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, “আগের বামফ্রন্ট সরকারের গাফিলতি ও কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার জেরেই এলাকায় পরিকল্পিতভাবে নিকাশি গড়ে ওঠে নি। সম্প্রতি, আমার বিধায়ক তহবিলের টাকায় এলাকায় নিকাশি নালা তৈরি হয়েছে। ভোটের প্রচারে এ সব বিষয়ই তুলে ধরা হচ্ছে।” প্রাক্তন সিপিআই মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “কংগ্রেস ও তৃণমূল রাজনৈতিক স্বার্থে উন্নয়নের কাজে বাধা দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে নিকাশিনালা তৈরির কাজ শেষ করা যায়নি।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল বলেন, “পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করলে সবার আগে নিকাশিনালা পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ করা হবে।”
ইটাহার ব্লক কংগ্রেসের আহ্বায়ক হবিবুর রহমানের দাবি, বাম আমলে এবং বর্তমান রাজ্য সরকার টাকা বরাদ্দ না করায় কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ নিকাশি পরিকাঠামো তৈরি করতে পারেনি। তিনি বলেন, “ভোটে জিতে এলে নিকাশি নালা তৈরির কাজ শেষ করার চেষ্টা করব বলে বাসিন্দাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।” বাম আমলে ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দে ইটাহারের পোরসা উত্তরপাড়া থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় এক কিমি একটি নিকাশি নালা তৈরির কাজ শুরু হয়। ৫০০ মিটার এলাকায় কাজের পর তা বন্ধ হয়। সম্প্রতি, বিধায়ক তহবিলের ১০ লক্ষ টাকায় চৌরাস্তা এলাকায় প্রায় ৫০০ মিটার লম্বা একটি নিকাশি নালা তৈরি হলে সমস্যা মেটেনি বলে অভিযোগ। নালাটি সঠিক পরিকল্পনা করে তৈরি হয়নি বলে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। সে জন্য, কয়েক পশলা বৃষ্টি হলেই বৃষ্টির জমা জল দাঁড়িয়ে যায়। জমা জল বের হওয়ার জাঁয়গা পায় না। ইটাহার সদরের সাহাপাড়া, হাটখোলা, পোরসা, থানা রোড, কলেজ রোড, চৌরাস্তা এলাকায় হাঁটু জল দাঁড়িয়ে যায়। ব্যবসায়ী বাবু ঝাঁ, গৃহবধূ রাণু বালা ও কলেজ ছাত্রী মামনি ঠাকুর এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে আসা নানা রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর কাছে আমরা এলাকার নিকাশি পরিকাঠামোর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি চাইছি।” |