হরিরামপুর, হিলি ও বালুরঘাটে ফের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে তৃণমূলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে জেলা কংগ্রেস। দলীয় সূত্রে খবর, হরিরামপুর ও বালুরঘাটে দু’টি পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়ে কংগ্রেস নেতারা তৃণমূল শিবিরে যোগ দিয়েছেন। ভোট ঘোষণার আগে কংগ্রেস নেতা ও প্রতিনিধিদের দলে টেনে তৃণমূল তাঁদের প্রার্থী করেছে। তাতে পুরনো তৃণমূল নেতারা টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ অসন্তোষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে আসরে কংগ্রেস।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় দাবি করেন, “গত ২০০৮ সালে জেলায় পঞ্চায়েতে ৮৪৩টি আসনের মধ্যে ৩০০-র মত আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছিলাম। সে তুলনায় এবারে বুথ ভিত্তিক সাংগঠনিক পরিস্থিতি ভাল। হিলি থেকে হরিরামপুর ব্লকের সবগুলি আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।” দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “কংগ্রেসের পালে হাওয়া নেই। ভোটের পরে কংগ্রেস জেলা থেকে মুছে যাবে।”
দলীয় সূত্রের, এই অবস্থায় বামফ্রন্ট নয়, ওই সমস্ত এলাকার আসনগুলিতে তৃণমূলের প্রার্থীর সঙ্গে কংগ্রেসের লড়াইয়ের সম্ভাবনা হয়েছে। কেননা, এক টানা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখলের সুবাদে বামেরা প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ার মুখে পড়েন। জেলায় সবগুলি আসনে প্রার্থী মনোনয়নের তালিকায় তৃণমূলের পরেই কংগ্রেস। বামজোট করে সিপিএম ও আরএসপি আসন ভাগাভাগি করে প্রার্থী দিলেও শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সিপিআই ঝোটের বাইরে গিয়েও প্রার্থী দিয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারে ১০০২ গ্রামপঞ্চায়েত আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৫৬৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। গত ২০০৮ সালে হরিরামপুর পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেস দখল করে। হরিরামপুর থেকে জেলাপরিষদের ১টি আসনেও জয়ী হয়ে বামফ্রন্ট পরিচালিত জেলাপরিষদে বিরোধী আসনে বসে কংগ্রেস। ব্লকে ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩টি কংগ্রেস দখল করে। তৎকালীন কংগ্রেস নেতা হরিরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সোনা পাল নিয়ে জটিলতায় পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়। বিধানসভা ভোটের আগে সোনাবাবু তৃণমূলে যোগ দেন। হরিরামপুরে গ্রাম পঞ্চায়েতের সব আসনে তৃণমূল ও কংগ্রেস প্রার্থী দেয়। কংগ্রেসের দখলে থাকা বালুরঘাটের ভাটপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান লগিন দাস-সহ সদস্যরা তৃণমূলে এসে টিকিট পাওয়ায় ক্ষুব্ধ পুরানো তৃণমূল নেতা কর্মীরা কংগ্রেস প্রার্থী হন। চিঙ্গিশপুর, অমৃতখন্ড, কুশমন্ডি, কুমারগঞ্জ ব্লকেও কংগ্রেসের জোরদার লড়াই করার চেষ্টা করছে। ৮টি ব্লকের মধ্যে গঙ্গারামপুর, তপন, কুমারগঞ্জ, কুশমন্ডি, বংশীহারিতে তৃণমূল-বামেদের দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা থাকলেও হিলি, বালুরঘাট, ও হরিরামপুর ব্লকে তৃণমূল ও কংগ্রেস লড়াই হবে। পঞ্চায়েত সমিতির ১৯০ আসনের ১৩৪টি এবং জেলা পরিষদে ১৭ আসনে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। |