অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের সভাপতি মদন তামাং খুনের ঘটনায় আত্মসমর্পণকারী ১১ অভিযুক্তকে তিন দিন সিবিআইয়ের হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দার্জিলিং জেলা আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বৃহস্পতি বার আত্মসমর্পণকারী ১৩ জনের মধ্যে ১১ জনকে সিবিআইয়ের হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, সিবিআইয়ের আবেদনের ভিত্তিতেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি দু’জন নরেশ রাই এবং সোনা সুব্বাকে জেল হেফাজতেই জেরা করার অনুমতি চেয়েছে সিবিআই।
১৭ জুন দার্জিলিং জেলা আদালতে সিজিএমের এজলাসে মদন তামাং খুনের ঘটনায় দার্জিলিং পুরসভার দুই প্রাক্তন কাউন্সিলর-সহ ১৩ অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করেন। সিবিআই হাজতে সকলকে দার্জিলিঙে রেখেই জেরা করা হবে। সরকারি আইনজীবী পঙ্কজ প্রসাদ বলেন, “সিবিআই আদালতে জানায়, মদন তামাং খুনের দিন যাঁরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল তাদের চিহ্নিত করতেই, অভিযুক্তদের জেরা করা হবে। সে জন্য তাঁদের হেফাজতে চাওয়া হয়। আদালত সেই আর্জি মঞ্জুর করেছেন। ঘটনাস্থলে অন্তত ২০০ জনেরও বেশি উপস্থিত ছিল বলে সিবিআই জানিয়েছে।”
গত সপ্তাহে আত্মসমর্পণকারী সকলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সমর্থক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দার্জিলিং পুরপসভার ২ প্রাক্তন কাউন্সিলর তেনজিং খামবাচে, কেশব রাই। তেনজিং মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বলেও জানা গিয়েছে। দাওয়া সাঙ্গে শেরপা, নগেন্দ্র প্রধান, অরুণ মোক্তান, সঞ্জয় তামাং, ভানু রাই, কমল সিংহ, অমল লামা, সঞ্জয় সিংহ, মনীশ রাই ও প্রবীণ সুব্বা, নারী মোর্চার অন্যতম প্রভাবশালী নেত্রী সোনা শেরপা আত্মসমর্পণ করেন।
২০১০-এর ২১ মে দার্জিলিংয়ের ক্লাবসাইড রোডে গোর্খা লিগ সভাপতি মদন তামাংকে দুষ্কৃতীরা কুপিয়ে খুন করে। খুনের অভিযোগে সেই সময় সিআইডি ৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। অভিযুক্তদের মধ্যে ১৫ জনকে আগে গ্রেফতার করা হয়। মামলায় মূল অভিযুক্ত নিকল তামাংকে গ্রেফতার হলেও শিলিগুড়ির পিনটেল ভিলেজে সিআইডি হেফাজতে থাকার সময়ে তিনি পালান বলে অভিযোগ। হাইকোর্টের নির্দেশে সিআইডির-র হাত থেকে মামলা সিবিআই-র হাতে যায়। সিবিআইয়ের হাতে এই মামলা যাওয়ার পরে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। দীনেশ গুরুঙ্গ, অলককান্ত মণি থুলুঙ্গ, পূরণ থামি, কিসমত ছেত্রী ও কেশবরাজ পোখরেল জামিনে আছেন।
এদিন মামলার শুনানির সময় সিবিআইয়ের আইনজীবী হিমাংশু দে আদালতে বলেন, “জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলা চলার সময় সিবিআই-কে কিছুই জানানো হয়নি। অর্থাৎ এক তরফা নির্দেশ হয়েছে।” যদিও জামিন প্রাপ্যদের তরফে বলা হয়, মামলার দিন সিবিআই-এর কেউ হাজির হননি। আবেদনকারী ভারতী তামাংয়ের পক্ষে বলা হয় মূল অভিযুক্ত নিকল তামাংকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। এই অবস্থায় যদি এই চার অভিযুক্ত জামিনে মুক্তি পেলে তদন্তে বাধা পড়তে পারে। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাস ও বিচারপতি সুবল বৈদ্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এই চার অভিযুক্তকে এখন স্থায়ী জামিন দেওয়া যাবে না। তিন সপ্তাহের জন্য এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে।
|