|
|
|
|
দু’টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নেই, কাজ নিয়ে উদ্বেগ |
জয়িতা সরকার • শিলিগুড়ি |
ফের অভিভাবকহীন হয়ে পড়ল শিলিগুড়ির আরেকটি ওয়ার্ড। ২০০৯ এর পুরসভা নির্বাচনের এক বছরের মাথায় দলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে পদ ছেড়ে দেন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের চৈতালি সেন শর্মা। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পদ হারালেন ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নান্টু পাল। এই পরিস্থিতিতে শহরের দু’টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরহীন হয়ে পড়েছে। কী ভাবে কাজকর্ম চলবে তা নিয়ে চিন্তায় সদ্য অভিভাবকহীন হয়ে পড়া ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। কাউন্সিলরহীন দু’টি ওয়ার্ডেই ছিলেন তৃণমূলের কাউন্সিলররা।
এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও ‘চাপে’ পড়েছে তৃণমূল। কারণ, দু’টি শূন্য ওয়ার্ডে প্রভাব বিস্তারের জন্য লাগোয়া এলাকার কাউন্সিলররা আসরে নেমে পড়েছেন। পাশাপাশি, ইতিমধ্যে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পুরসভায় চেয়ারম্যানের পদটি খালি হয়েছে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পুর দফতরে। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “শূন্য পদের কথা পুর দফতরে জানিয়ে দিয়েছি। ওই দুটি ওয়ার্ডে এখনই নির্বাচন করবে কি না তা রাজ্য সরকারের বিষয়।”
দলের ওপর ক্ষুব্ধ হওয়ায় পদ ছেড়ে দেন ৩১ নম্বরের কাউন্সিলর চৈতালি সেনশর্মা। তারপর থেকে ওয়ার্ডের দেখাশোনা করছে তৃণমূলের ওয়ার্ড কমিটির সদস্যরা। মাঝেমাঝে ওয়ার্ড অফিসে এসে বসেন ৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সমীরণ সূত্রধর। তবে রোজকার কাজ সঠিক ভাবে চললেও কোনও নির্মাণ কাজ হয়নি এই ওয়ার্ডে। রাস্তাঘাট ড্রেন কালভার্ট সহ অন্যান্য কাজের ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে থাকলেও কাজ শুরু হয়নি। পাশাপাশি এলাকার একাধিক রাস্তায় আলো নিয়ে বলে অভিযোগ এলাকা বাসীদের। বারবার এই কাজগুলি দ্রুত করার দাবি জানান হলেও তা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন ৩১ নম্বর তৃণমূল ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি কৌশিক দত্ত।
শক্তিগড় এলাকায় থাকা রবীন্দ্র মঞ্চের কাজ থমকে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এই এলাকায় সবচেয়ে সমস্যার বিষয়টি হল নিকাশি ব্যবস্থা। একটু বৃষ্টিতেই অশোকনগর, লোয়ার শক্তিগড় এলাকায় জল জমে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই বর্ষায় নিকাশি সমস্যা মিটে যাবে বলে জানিয়ে ছিলেন মেয়র, কিন্তু এবার বর্ষাতেও তা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁরা। প্রায় দু’বছর থেকে এভাবেই চলছে পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ড।
একই অবস্থা হওয়ার আশঙ্কায় ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ওয়ার্ডটি শহরের প্রধান ব্যবসায়িক এলাকা। বিধান মার্কেট, হংকং মার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট রয়েছে এই এলাকায়। মার্কেটের ভেতরে থাকা একাধিক রাস্তার বেহাল অবস্থা। একটু বৃষ্টিতেই জল কাদায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে রাস্তাগুলি। ওয়ার্ডে এখন কাউন্সিলর না থাকায় কি হবে তা নিয়ে চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। যদিও নান্টুবাবুর দাবি, তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের পাশে সব সময় থাকার চেষ্টা করছেন।
তবে ব্যবসায়ীদের কয়েকজন জানান, পাশের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর কমল অগ্রবালের কাছেও নানা সমস্যার ব্যাপারে সাহায্য চাওয়া হয়। কমলবাবু বলেছেন, “অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন, যাঁরা ১০ নম্বরে থাকেন, ১১ নম্বরে ব্যবসা করেন। উল্টোটাও রয়েছে। সে জন্য সকলের কথা শুনে যথাসাধ্য করার চেষ্টা করি। এর মধ্যে রাজনৈতিক লাভ আমরা অন্তত খুঁজি না।” এই বিষয়ে বিধান মার্কেট খুচরা ফল ও সবজি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুবল সাহা জানান, তাঁরা বাজারের রাস্তাঘাট মেরামতির কাজ বর্ষার আগে কতটা কী হবে তা ভেবে উদ্বিগ্ন। তাই এলাকাবাসীদের অনেকেরই দাবি, তাড়াতাড়ি নির্বাচন করা হোক। এ দিকে, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দেখভাল আপাতত কংগ্রেসের কাউন্সিলররাই করবে বলে জানান মেয়র। পাশের ওয়ার্ডে থাকা ৬ নম্বরের কাউন্সিলর রুমা নাথ বলেন, “১১ নম্বর ওয়ার্ডে কোন অসুবিধে হলে আমি পাশের ওয়ার্ডে আছি। তা দেখে নিতে পারব।”
|
পুরনো খবর: পদ খারিজ কাউন্সিলরের, উদ্বেগ ওয়ার্ডে |
|
|
|
|
|