রাজ্য চাইলে বাহিনী পাঠাব, দীপাকে দিল্লি
তিরিক্ত বাহিনীর অভাব। তবুও পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আবেদন এলে বাহিনী পাঠাতে পারে কেন্দ্র। আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে এ কথা জানা গিয়েছে।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন ও প্রচারকে ঘিরে যে হিংসা শুরু হয়েছে তার প্রেক্ষিতে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা রুখতে এ দিন ফের শিন্দের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার জন্য আবেদন জানান তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে দীপাকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্র বাহিনী দিতে রাজি। কিন্তু রাজ্য সরকার যদি একেবারেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন না করে সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নিজে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাপিয়ে দেওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হতে পারে। তাতে অযথা কেন্দ্র-রাজ্য বিতর্ক সৃষ্টি হবে।
এই পরিস্থিতিতে আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে। বৈঠক কমিশনের কর্তাদের কাছে রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা ব্যাখ্যা করেন তিনি। কমিশন সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে রাজ্য সরকার যে অনড় মনোভাব নিয়েছেন তাও এ দিন কমিশন কর্তাদের জানিয়েছেন মীরাদেবী। যে ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে অখুশি কমিশনও। মীরা দেবী বলেন,“নির্দিষ্ট দিনে নির্বাচন হবে কী না তার গোটাটাই নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়ার উপর। কত কোম্পানি বাহিনী পাওয়া যাবে তার ভিত্তিতেই সব ঠিক হবে।”
এ দিকে আজ শিন্দের কাছে অভিযোগে দীপা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গে শাসনযন্ত্রের সাহায্য নিয়ে তৃণমূলী সন্ত্রাস ক্রমশ বাড়ছে। তাঁর অভিযোগ, জলপাইগুড়ির কংগ্রেস জেলা সভাপতি মোহন ঘোষকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। জোর করে অ-তৃণমূলী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয়েছে। দীপার বক্তব্য, যাঁরা চাপের মুখে পড়েও নাম প্রত্যাহার করেননি তাদেরকে অপহরণ করছে তৃণমূলীরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রসঙ্গে আজ দীপা বলেছেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাজ্য পাঠানো নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে এবং আইন-শৃঙ্খলার অবনতির ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে তার জন্য সবথেকে বেশি দায়ী রাজ্য সরকার। নির্বাচন কমিশন বলছে অতিসংবেদনশীল বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যতিরেকে শুধু রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করা সম্ভব নয়। আমরাও তাই বলছি। অথচ রাজ্য সেই যুক্তি মানতে রাজি নয়।” প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, নিরাপত্তা বাহিনী অবাধ নির্বাচন হবে। তাতে তৃণমূল হেরে যাতে পারে সেই ভয় থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরোধিতা করছে রাজ্য।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোটের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি জানালেও আজ এক ধাপ সুর চড়িয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় থেকেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি দরকার ছিল বলেই মনে করছেন দীপা। তাঁর ব্যাখ্যা, “ইতিমধ্যেই বিপক্ষ দলেরা প্রার্থী দিতে না পারায় প্রায় সাড়ে দশ হাজার কেন্দ্রে একতরফা ভাবে ফল ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। জয়ী প্রার্থীদের অধিকাংশই তৃণমূলের।” প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, তাই গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য আগে থেকেই নিরাপত্তাবাহিনী দেওয়া উচিত ছিল কেন্দ্রের। এ দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, ছত্তীসগঢ়, তেলেঙ্গানা বা জম্মু-কাশ্মীরের অশান্ত পরিস্থিতির জন্য বড় মাপের কেন্দ্রীয় বাহিনী আগে থেকেই সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। তারই মধ্যে উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে নতুন করে বাহিনী পাঠাতে হয়েছে কেন্দ্রকে। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী পরিমাণ বাহিনী রাজ্যে পাঠানো সম্ভব তা নিয়েও খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে ধোঁয়াশা রয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.