|
|
|
|
তালিকাই তৈরি হয়নি, থমকে ক্ষতিপূরণ বিলি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারল না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর কালেক্টরেটের সভাকক্ষে এই সংক্রান্ত বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে এমন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠেছে যে তার প্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ বিলি থেকে আপাতত পিছিয়ে গিয়েছে কৃষি দফতর। তবে আগামী সপ্তাহে যাতে ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া যায়, সেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে কৃষি দফতর জানিয়েছে। নির্বাচনী বিধি লাগু হয়ে যাওয়ায় এ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর নিমাইচন্দ্র রায়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে তড়িঘড়ি কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। সিদ্ধান্ত রূপায়ণে কৃষি দফতর এক সপ্তাহও সময় পায়নি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকাও তৈরি হয়নি। আর তাতেই থমকে গিয়েছে ক্ষতিপূরণ বিলি!
মাসখানেক আগে একটানা বৃষ্টিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়। ৬টি ব্লকে ফসলের ক্ষতি হয়। মূলত তিল, বাদাম ও সব্জি চাষে ক্ষতি হয়েছিল। তখনই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানানো হয়। কৃষি দফতর জানিয়েছে, ওই বৃষ্টিতে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছিল কেশপুর ও গোয়ালতোড়-২ ব্লকে। সেই সঙ্গে মেদিনীপুর সদর, নারায়ণগড়, দাসপুর-১ ও ডেবরা ব্লকেও চাষের ক্ষতি হয়। জেলায় পঞ্চায়েত ভোট ২ জুলাই। তার আগে চাষিরা ক্ষতিপূরণের চেক পেয়ে গেলে খুশি হবেন। |
|
সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি। চাঁদরার ধুলডাঙা গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র। |
তাই দ্রুত ক্ষতিপূরণ বিলির তোড়জোর শুরু হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহের গোড়ায় রাজ্য থেকে নির্দেশ আসে যে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কৃষি দফতর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে। শুক্রবারের মধ্যেই সকলের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেবলমাত্র মেদিনীপুর সদর, নারায়ণগড় ও দাসপুর-১ ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা গিয়েছে। বাকি তিনটি ব্লকে তালিকা তৈরি চলছে। এ দিনের বৈঠকে দ্রুত তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে আগামী সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণের চেক দওয়া যায়। যদিও তা কতটা সম্ভব, করা গেলেও ভুল হতে পারে এবং এ নিয়ে ভবিষ্যতে কৃষি দফতরের আধিকারিকদের জবাবদিহির মুখে পড়তে হতে পারে বলে, বৈঠকে শোরগোল পড়ে যায়। বলা হয়, তড়িঘড়ি আবেদনপত্র সংগ্রহ করায় ভুল থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তার উপর বলা হয়েছে, যিনি কৃষক নন, তিনিও ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন। আবার যিনি ১০ কাঠা জমিতে চাষ করেছেন, তিনি ১ বিঘের জন্য ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যোগ্য প্রাপক বাছতে পরিদর্শন জরুরি। কিন্তু এত কম সময়ে কি আদৌ পরিদর্শন সম্ভব?
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, প্রায় ১৮ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত বলে আবেদন করেছেন। অল্প সময়ে যাদের তালিকা তৈরি করাই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সে ক্ষেত্রে পরিদর্শন হবে কী করে? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যদিও নির্বাচনের সময় বলে পরিদর্শনকে আদৌ গুরুত্ব দিচ্ছে না রাজ্য। আপাতত, যত আবেদন পড়েছে তার তালিকা তৈরি করেই দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়াতেই আগ্রহ বেশি। সামনের সপ্তাহের মধ্যেই যাতে সেই কাজ সম্পন্ন করা যায় সে জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে কৃষি দফতর জানিয়েছে। |
পুরনো খবর: আরও বৃষ্টি হলে চাষে ক্ষতি বাড়ার আশঙ্কা |
|
|
|
|
|