এ বার ধোনির দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা না বিদ্রোহ করে বসে। ব্যাট করতে নামার সুযোগই পাচ্ছে না যে ওরা।
গত দশ বছরে ভারত ইংল্যান্ডের বুকে এত ভাল ব্যাটিং করেছে? মনে পড়ছে না। ভাল ব্যাটিং বলতে, এমন ধারাবাহিকতার কথা বলতে চাইছি। যেটা মনে পড়ছে, তা হল, ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের কথা। কিন্তু সে তো ২০০২-এ। তাও এতটা ধারাবাহিক বলা যাবে না। মনে আছে, চারটে ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করার পর ভারত ফাইনালের আগের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৬৫ রানেই অল আউট হয়ে গিয়েছিল। ফাইনালে অবশ্য তাদের সেই অসাধারণ ব্যাটিং দক্ষতা ফের দেখা যায়। তবে এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের ব্যাটিং পারফরম্যান্স সব ম্যাচেই একই রকম ভাল, দুর্দান্ত।
প্রথম ম্যাচে ন’জন ভারতীয় ব্যাটসম্যানকে খেলতে দেখা গিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু রোহিত, ধবন ও কোহলিতিন জনে মিলেই তো পঁচাত্তর শতাংশ রান তুলে দেয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাত্র দু’উইকেট হারায় ভারত। বৃহস্পতিবার কার্ডিফের সেমিফাইনালেও একই অবস্থা। ফাইনালেও যদি ওদের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরাই সব কাজটুকু করে দেয়, তা হলে বিন্দুমাত্র অবাক হব না। এর পর দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা খুশি হবে, না হতাশ হবে, জানি না। তবে যা-ই হোক, ধোনি ঠিকই সামলে নেবে। ওর এখন দারুন সময় যাচ্ছে। যেখানে টস জেতার দরকার সেখানে জিতছে, যেখানে যা পাওয়ার দরকার, তা পাচ্ছে। এমন সময় গেলে কোন ক্যাপ্টেন না ফুরফুরে মেজাজে থাকবে?
|
সেমিফাইনালে ভারতের বোলার ধোনি। ছবি: রয়টার্স |
ভাবুন এক বার। ম্যাচ তখন ২৩ ওভার মাত্র গড়িয়েছে। প্যাড-গ্লাভস ছেড়ে হঠাৎ বল করতে শুরু করে দিল সে। চার ওভার বলও করে ফেলল। দ্বিতীয় বলেই তো জয়বর্ধনেকে এলবিডব্লু-র ফাঁদে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু ডিআরএসের জন্য সে যাত্রা বেঁচে গেল মাহেলা। ভারতীয় বোর্ডের ডিআরএস নিয়ে আপত্তি নিশ্চয়ই এর পর আরও কিছুটা বাড়বে।
কার্ডিফের এই উইকেটটা ব্যাট করার পক্ষে তেমন ভাল নয়। এতে শ্রীলঙ্কার তোলা ১৮১ রানটা নিয়ে লড়াই করা যেত। কিন্তু ভারতীয়রা এত ভাল ব্যাটিং করছে যে, এখন কোনও উচ্চতাই তাদের কাছে অগম্য নয়। স্যাঁতসেঁতে উইকেট। তেমনই আবহাওয়া। এই পরিবেশে পেসাররা আগুন জ্বালাবে না তো কী করবে? ভুবনেশ্বর কুমার তো গোটা টুর্নামেন্টেই অনবদ্য। ওকে টানা ন’ওভার বল করিয়ে দারুন করেছে ধোনি। এই ন’ওভারে মাত্র ১৮ রান দিল ভুবি। একজন ওপেনারকেও ফেরাল। উমেশ, ইশান্তরাও এই পরিবেশে ভাল করতে বাধ্য। তাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চাপেই ছিল শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজ (৫১) ছাড়া কেউ মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারল না। দিলশানের চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়াটা ওদের ক্ষতিই করেছে। কিন্তু এ জন্য ওরা ধোনির ভাগ্যকে দুষতেই পারে। ধবনের ব্যাটিং নিয়ে আর কত প্রশংসা করব। আমরা প্রশংসা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যাব, কিন্তু ও তবু ক্লান্ত হবে না। কোহলি সম্পর্কেও একই কথা বলব।
আপাতত ভারতীয় দলের কোনও জায়গা নিয়েই চিন্তা নেই। সব বিভাগেই ওরা সবার চেয়ে এগিয়ে। তাই ফাইনালেও ওরা এগিয়ে। এখন থেকেই ধোনিকে অভিনন্দন জানিয়ে রাখছি। |