|
|
|
|
দুবরাজপুর পুরসভা |
তৃণমূলে গেলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
পঞ্চায়েত ভোটের পরেই রাজ্যে যে ১৩টি পুরসভায় নির্বাচন হওয়ার কথা দুবরাজপুর তার মধ্যে একটি। সে জন্য ইতিমধ্যে যে রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে তার প্রমাণ মিলল বৃহস্পতিবার। স্বামী ও কিছু দলীয় সমর্থক নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন কংগ্রেস পরিচালিত দুবরাজপুর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর ঝর্ণা মণ্ডল। দুবরাজপুরের পাকুড়তলা মোড়ে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে যোগদান পর্ব চলে। তৃণমূলর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দুবরাজপুর ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্র এবং দুবরাজপুর শহর তৃণমূল নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। উভয়েই বলেন, “বর্তমানে এই শহরে কংগ্রেসের অস্তিত্ব বিপন্ন। এমন কী কংগ্রেসের একটি দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত নেই। মানুষের হয়ে কাজ করার স্বার্থে ওঁরা স্বামী-স্ত্রী তৃণমূলে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করে আবেদন জানিয়েছিলেন। আমরা ওঁদের এবং বাকি দলীয় সমর্থকদের স্বাগত জানিয়েছি। ওঁরা আসায় সংগঠন আরও মজবুত হল।”
পুরভোটের আগে হঠাৎ দল বদল কেন? প্রশ্নের উত্তরে ঝর্ণাদেবী বলেন, “বর্তমান বোর্ড আমার ওয়ার্ডের উন্নয়নের প্রশ্নে বিমাতৃ সুলভ আচরণ করেছে। দ্বিতীয়ত— কংগ্রেস দলটারই ছন্নছাড়া অবস্থা দেখে এই সিদ্ধান্ত।” ওই মহিলা কাউন্সিলরের স্বামী (কার্যত স্ত্রী-র হয়ে সব কাজটাই করেন) ভূতনাথ মণ্ডলও দল বদলের ক্ষেত্রে একই যুক্তি দেখিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দুবরাজপুরের তিন নম্বর ওয়ার্ডে ১৯৯৩ সালে কংগ্রেসের হয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন ঝর্ণাদেবীর স্বামী ভূতনাথ মণ্ডল। জিতেছিলেন তিনি। এর পর ওই আসনটি মহিলা সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় ২০০৩ সালে তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হয়ে জয়ী হন ঝর্ণাদেবী। সেবার জোটে লড়েছিল কংগ্রেস-তৃণমূল ও বিজেপি। ফের ২০০৮ সালে প্রার্থী হন ঝর্ণাদেবী। তবে এ বার তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়েছিলেন। ঝর্ণাদেবীদের দাবি, “জোটের স্বার্থে কংগ্রেসে আসতে হয়েছিল তখন।” গত বারও সেই মহাজোটই বজায় ছিল। মোট ১৫টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনে জিতে (৬ কংগ্রেস, ২ বিজেপি, ১ তৃণমূল, ১ নির্দল) ক্ষমতায় আসে। বিপক্ষে থাকা বামফ্রন্ট পেয়েছিল ৫টি আসন। জোট ভেঙে যাওয়ার পর এক মাত্র তৃণমূল কাউন্সিলর পুরসভা থেকে বেরিয়ে আসেন এবং একমাত্র নির্দল কাউন্সিলর কংগ্রেসে যোগ দেন।
এ বার তৃণমৃলের সঙ্গে জোট হবে সে সম্ভাবনা নেই। এ দিন কংগ্রেসের কাউন্সিলর দল ছাড়ায় কোন সমস্যা কী হবে দুবরাজপুর শহর কংগ্রেসের? দুবরাজপুরের পুরপ্রধান কংগ্রেসের পীযূষ পাণ্ডে অবশ্য সেটা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “সুবিধাবাদী রাজনীতি করার জন্যই এটা করা হলেও আমাদের সমস্যা হবে না। কারণ, দলে থাকলেও ওই কাউন্সিলর বা ওঁর স্বামী দলের হয়ে খুব একটা কাজ করতেন না। এলাকায় ওঁদের জনপ্রিয়তায়ও ঘাটতি রয়েছে বলে আমি জানি। তাই দল ত্যাগ করলেও কোনও সমস্যা নেই। বরং এক প্রকার ভালই হল।” এই মন্তব্যের অবশ্য কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভূতনাথবাবু। তিনি বলেন, “দল ছাড়লেও ব্যক্তি কুৎসা করতে রাজি নই। সুবিধাবাদী রাজনীতি সব থেকে বেশি করেন পুরপ্রধানই।” |
|
|
|
|
|