পদ খারিজ কাউন্সিলরের, উদ্বেগ ওয়ার্ডে
নান্টু পালের কাউন্সিলর পদ খারিজ হতেই উদ্বিগ্ন তাঁর ওয়ার্ডের একাংশ বাসিন্দারা, বিশেষত ব্যবসায়ীরা। পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন নান্টুবাবু। সেটি শহরের কেন্দ্রের ব্যবসায়ী এলাকা। বিধানমার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট, বিবেকানন্দ মিনি মার্কেট ওই ওয়ার্ডেরই অন্তর্গত। বাসস্থানের শংসাপত্র থেকে বিভিন্ন কাজে ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তো বটেই, সমস্যা নিয়ে কাউন্সিলরের কাছে যান ব্যবসায়ীরাও। কিন্তু ওয়ার্ডে কাউন্সিলর না থাকায় বিভিন্ন পরিষেবা পেতে সমস্যা হলে তা সমাধানের দাবিতে তাঁরা কোথায় যাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সকলেই।
মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত অবশ্য বলেছেন, “বাসিন্দাদের সমস্যার বিষয়টি নান্টুবাবুর আগে ভাবা উচিত ছিল। নিজের স্বার্থের কথা ভাবতে গিয়ে বাসিন্দাদের বিপাকে ফেলেছেন তিনি। তবে বাসিন্দাদের যাতে সমস্যা না হয় সে দিকে আমরা নজর রাখব। ওই ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী, বাসিন্দা কারও সমস্যা হলে তাঁরা যেন আমাকে জানান।” ওই ওয়ার্ডে পরিষেবার কোনও সমস্যা যাতে না হয় সে দিকে বরো চেয়ারমানকেও তিনি নজর দিতে বলবেন বলে মেয়র জানান।
নান্টুবাবুর দাবি, “কাউন্সিলর পদ গেলেও বাসিন্দাদের পাশেই থাকছি। তাঁরাই তো আমাকে জিতিয়েছেন। তাঁদের কাজ করাটাই আমার দায়িত্ব। শংসাপত্র পাওয়া থেকে বাসিন্দা, ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। যেখানে বললে কাজ দেবে সেখানে গিয়ে সমস্যা মেটাতে সচেষ্ট হব।” কিন্তু কাউন্সিলর থেকে সেই কাজ করতে সাহায্য করা আর পদ খুইয়ে বাসিন্দাদের পাশে থাকার মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে বাসিন্দাদের অনেকেই তা মনে করেন। দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞ কাউন্সিলর, চেয়ারম্যানের মতো পুরসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকায় তাঁকে অনেকেই সমীহ করতেন। সে কারণে বাসিন্দাদের অনেক কাজই তিনি সহজে করতে পারতেন। এখন তা থেকে বাসিন্দারা বঞ্চিত হবেন বলেই মনে করছেন।

নান্টু পালের পদ খারিজে কংগ্রেস কাউন্সিলরদের মিষ্টিমুখ। রয়েছেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। —নিজস্ব চিত্র।
কংগ্রেসের টিকিটে ১১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে গত পুর নির্বাচনে জেতেন নান্টুবাবু। সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পুরসভায় বর্তমানে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস পুরবোর্ডের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ে। সেই থেকেই বিধানমার্কেটের ব্যবসায়ীরা বাজারের রাস্তা, পানীয় জল, শৌচাগারের মতো বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে গেলেও পুরসভা থেকে সে সব মেটানোর ব্যবস্থা করতে তাঁকে বেগ পেতে হচ্ছিল।
বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাস বলেন, “মার্কেটের রাস্তা খুবই খারাপ। সামনে বর্ষা। জল কাদায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আগে কাউন্সিলরকে বলতে পারতাম। এখন কাউন্সিলর না থাকায় আমাদের সমস্যা বাড়ল বলেই মনে হচ্ছে। রাস্তা ছাড়াও ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স, বাজারে শৌচাগারের সমস্যার মতো বিভিন্ন বিষয় রয়েছে।” এলাকার বাসিন্দা তথা আইনজীবী সুজিত রাহা মনে করেন, এ সব কারণে দলত্যাগের আগে নান্টুবাবুর বিষয়গুলি নিয়ে ভাবলে ভাল করতেন। সুজিতবাবুর কথায়, “নান্টুবাবুর মতো অভিজ্ঞ ব্যক্তির পদ চলে যাওয়ায় কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতেই হবে।”
বিধানমার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের মতো এলাকায় অবৈধ নির্মাণ নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। কাউন্সিলর থাকতেই তা সামাল দিতে বেগ পেতে হত। এখন কাউন্সিলর না থাকায় অবৈধ নির্মাণ কাজের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি পুর কর্তৃপক্ষকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে বলে অনেকেই জানিয়েছেন। ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা নর্থ বেঙ্গল মোটর পার্টস অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা বিনয় গুলটি জানান, নান্টুবাবুর কাউন্সিলর পদ যাওয়া তাঁদের কাছে দুর্ভাগ্যের। এতে ওয়ার্ডে উন্নয়ন পিছিয়ে পড়বে বলে তাঁরা উদ্বিগ্ন।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.