লোকসভা ভোট নয় রাষ্ট্রপতি শাসনাধীন ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনকেই ‘পাখির চোখ’ করেছে কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহলের খবর, শর্তসাপেক্ষে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাকেও পাশে নিতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। যদিও, কংগ্রেসের প্রস্তাবে এখনও গররাজি জেএমএম -এর ‘গুরুজি’
শিবু সোরেন।
মোর্চাকে কী শর্ত দিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব? দলীয় সূত্রে খবর, বিধানসভা ভোটে জোট বেঁধে লড়াইয়ে নামতে হলে দুমকা, জামতাড়া, রাজমহল, ঘাটশিলার মতো আসনগুলি কংগ্রেসকে ছেড়ে দিতে হবে এমন কথাই জানানো হয়েছে জেএমএম নেতাদের। কংগ্রেসের ওই শর্ত অবশ্য এখনও মানতে নারাজ মোর্চা। বিনা শর্তেই কংগ্রেস যাতে তাদের সঙ্গে থাকে, আপাতত সেই চেষ্টাই চলছে।
অভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, বিজেপি -র সঙ্গে সদ্য সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন শিবু। ফের সে দিকে এগোলে রাজনৈতিক ভাবে ক্ষতির আশঙ্কা থাকতে পারে। এ মুহূর্তে কংগ্রেসের সঙ্গে বন্ধুত্ব অথবা একাই ভোটের ময়দানে নামা তা ছাড়া উপায় নেই জেএমএম -এর।
ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় এখন কংগ্রেসের ১৩ জন বিধায়ক রয়েছেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোর্চা সমস্ত শর্ত মেনে নিলে, পরবর্তী ভোটে কমপক্ষে আরও ৪টি আসন দখল করতে পারবে কংগ্রেস। সে ক্ষেত্রে রাজ্যে সরকার গঠনে ওই দলের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকবে।
১৮ জুলাই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগে বিকল্প সরকার গঠন করা সম্ভব, না কি নভেম্বরে অন্তবর্তীকালীন ভোটগ্রহণ হবে রাজ্যের রাজনীতি তা নিয়েই সরগরম।
মোর্চার এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, “কংগ্রেসের শর্ত এখনই মেনে নিলে, ভবিষ্যতে দর কষাকষির কোনও সুযোগই থাকবে না। যে সব এলাকায় আমাদের দল শক্তিশালী, সেখানে আসন কাউকে ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই থাকছে না। কংগ্রেসকে জানানো হয়েছে, সরকার তৈরির পরই এ সব হিসেবনিকেশ করা হবে।” রাজনৈতিক মহলের অভিমত, রাজ্যে সরকার গঠন করতে গেলে মোর্চা এবং কংগ্রেস পরস্পরকে প্রয়োজন দুই দলেরই। তা জানে দু’পক্ষই। তাই মোর্চার সঙ্গে জোট তৈরিতে উৎসাহী কংগ্রেস। মোর্চাও জানে, জোট গড়ে আদপে তাদেরই কাঁধে চেপে লোকসভা নির্বাচনে আসন বাড়িয়ে নেবে কংগ্রেস।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি ফের জেএমএম -এর হাত ধরবে না। ফলে কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতেই হবে শিবুকে। তাই কংগ্রেসের শর্তাধীন প্রস্তাব ফেরানোর সাহস তিনিও দেখাচ্ছেন না। রবিবার রাঁচিতে শিবু সোরেনের বাড়িতে এ নিয়ে আলোচনা করেন মোর্চা নেতারা। হেমন্ত সোরেন বলেন, “দ্রুত রাষ্ট্রপতি শাসন তোলার দাবি জানাচ্ছি।” ওই দিন থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন নেতাদের নিয়ে তিন দিনের বৈঠক ডেকেছে রাজ্য।
|