|
|
|
|
যুক্তি মেনে ওয়াকআউট বিজেপির |
নীতীশের বিরুদ্ধে ভোট নয়, মমতার বার্তা আডবাণীকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিহারের আস্থা ভোটেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশ্যই নেপথ্যে থেকে।
বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা নিয়ে প্রথম থেকেই নিশ্চিত ছিলেন নীতীশ কুমার। তার মধ্যে আজ ভোটাভুটির আগে বিজেপি বিধায়কেরা বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করায় সেই জয় আরও নিশ্চিত হয়ে যায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিজেপি বিধায়কদের সভা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পিছনে এ দিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন মমতা।
নীতীশ কুমারের দল এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরে বিহারের বিজেপি বিধায়কেরা ভোটাভুটিতে জেডিইউয়ের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তৃণমূল সূত্রের ইঙ্গিত, এর পরেই তৎপর হন তৃণমূল নেত্রী। তিনি দূত মারফৎ লালকৃষ্ণ আডবাণীকে বার্তা দেন, বিজেপি বিপক্ষে ভোট দিলেও সরকার বাঁচাতে সমস্যা হবে না নীতীশের। উপরন্তু বিজেপি-বিরোধিতার সুযোগে কংগ্রেস নীতীশকে সমর্থন করে কাছে টানার চেষ্টা করবে। এতে ভবিষ্যতে নীতীশের এনডিএ জোটে ফেরার পথ যেমন আটকে যাবে, তেমনই কংগ্রেস বিরোধিতার প্রশ্নে আঞ্চলিক দলগুলি যে জোট গড়ার পথে এগোচ্ছে, তাতেও ভাঙন ধরবে। তৃণমূল নেত্রীর ওই যুক্তি মেনে নেন নীতীশের প্রতি সহানুভূতিশীল বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। আজ সকাল পর্যন্ত বিজেপি বিধায়কেরা নীতীশের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পক্ষে থাকলেও শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে ভোটাভুটির আগে ওয়াকআউট করেন তাঁরা। বিজেপির বক্তব্য, এতে নীতীশের প্রতি যেমন নরম মনোভাব দেখানো গেল, তেমনই তৃণমূল নেত্রীর পরামর্শ মেনে তাঁকেও ইতিবাচক বার্তা দিতে সক্ষম হল দল।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে দেশের পূর্বাঞ্চলের তিন মুখ্যমন্ত্রী এক নতুন সমীকরণের দিকেই এগোতে চাইছেন। পশ্চিমবঙ্গের মমতা, বিহারের নীতীশ এবং ওড়িশার নবীনের লক্ষ্য আঞ্চলিক দলগুলিকে এক জোট করে একটি ফেডেরাল ফ্রন্ট গঠন করে কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃত্বকে বেগ দেওয়া। জোট নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগও রাখছেন তিন নেতা। আঞ্চলিক ওই জোটের পক্ষে সওয়াল করেছে সমাজবাদী পার্টিও। তবে ওই তিন দলই যতটা না বিজেপি-বিরোধী, তার থেকেও কংগ্রেসের অপশাসন, দুর্নীতি, মূল্যবদ্ধির বিরুদ্ধে বেশি সরব।
এই পরিস্থিতিতে গত রবিবার নীতীশ বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করার কথা ঘোষণা করতেই নীতীশকে পাশে পেতে তৎপর হয় কংগ্রেস। এমনকী খোদ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও নীতীশের প্রশংসা করেন। আজ দলের হাইকম্যান্ডও বিহারের চার কংগ্রেস বিধায়ককে জেডিইউকে সমর্থন করার নির্দেশ দিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেন নীতীশকে।
বিজেপিকে ছাড়লেই নীতীশকে কাছে পেতে কংগ্রেস যে মরিয়া চেষ্টা করবে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছিলেন মমতাও। সে ক্ষেত্রে আঞ্চলিক জোটের ভাবনা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে তাঁর। তাই গত রবিবার নীতীশ এনডিএ থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করতেই তৎপর হয়ে ওঠেন মমতা। তিনি দূত মারফৎ লালকৃষ্ণ আডবাণীকে বার্তা দেন, বিহারের বিজেপি বিধায়কেরা নীতীশের বিরুদ্ধে ভোট দিতে চাইছেন। তবে তাতেও বিধানসভায় সরকার বাঁচাতে সমস্যা হবে না নীতীশের। কিন্তু ওই প্রকাশ্যে বিরোধিতায় বরং দু’পক্ষের সম্পর্ক আরও খারাপ হবে। ফলে ভবিষ্যতে নীতীশের এনডিএ-তে ফেরার সমস্ত রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে পড়তে পারে।
তা ছাড়া বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে বিজেপি শিবির আখেরে জেডিইউকে আরও কংগ্রেসের দিকে এগিয়ে
দেবেই বলে মনে করছেন মমতা। আডবাণীকে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, কংগ্রেসের ওই ঘনিষ্ঠতা প্রভাব ফেলবে নীতীশ, নবীন ও মমতাকে নিয়ে গঠন হওয়া ফেডেরাল ফ্রন্টেও। এতে ভাগ হয়ে যাবে কংগ্রেস
বিরোধী ভোটও। ফলে সব মিলিয়ে ক্ষতি হবে বিজেপিরই। মমতার যুক্তি মেনে নেন আডবাণী। ফলে আজ প্রথমে বিরুদ্ধে ভোটদান করার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে পিছিয়ে আসেন বিজেপি নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রের দাবি, তার পরেই আজ নীতীশের বিপক্ষে ভোটদানের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসে বিজেপি।
|
পুরনো খবর
• নীতীশ সাম্প্রদায়িক, প্রমাণে তৎপর লালু
• মমতা থাকলে স্থায়ী হয় না জোট |
|
|
|
|
|