বন্ধুত্বে আগ্রহী কংগ্রেস আস্থা জোগাল ভোটে
বিহারে হারানোর কিছু ছিল না। ভাবনা ছিল জাতীয় রাজনীতির ময়দানে। তাই বিহার বিধানসভায় নীতীশ কুমারকে প্রচ্ছন্ন জোট -বার্তাই দিল কংগ্রেস। দলীয় হাইকম্যান্ড জানত, চার কংগ্রেস বিধায়কের সমর্থন ছাড়াও নীতীশ আস্থা ভোটে জিতবেন। তা সত্ত্বেও ওই চার জন ভোট দিলেন নীতীশের পক্ষেই।
বন্ধুত্বের এই প্রস্তাবকে চূড়ান্ত জোট সম্পর্কের চেহারা দিতে এখন নীতীশের তরফেও প্রতিদান জরুরি বলে মনে করছেন সনিয়া রাহুল গাঁধী। সংসদের বাদল অধিবেশন আসন্ন। কংগ্রেস নেতৃত্ব চান, সেখানে খাদ্য সুরক্ষা বিল, জমি বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলিতে কেন্দ্রকে সমর্থন করুন নীতীশ। লোকসভায় কুড়ি জন জেডিইউ সাংসদ কেন্দ্রের পাশে দাঁড়ালে ভবিষ্যতে জোট সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা ইতিবাচক হতে পারে বলে নেতারা আশাবাদী।
ভোটাভুটির পর আজ অবশ্য সংযত বিবৃতিই দিয়েছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। বলা হয়েছে, “সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতেই এই সিদ্ধান্ত এবং তা একেবারেই একতরফা। নীতীশ সমর্থন চাননি, তাঁর সঙ্গে ব্যাপারে দেওয়া -নেওয়ার কোনও সমঝোতাও হয়নি। তাই এখনই জোট -সূত্র খোঁজা অবান্তর।” কিন্তু ঘরোয়া আলোচনায় এআইসিসি - নেতারা বলেছেন, নীতীশকে ধর্মনিরপেক্ষ আখ্যা দিয়ে তাঁর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সাহায্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই আজ নীতীশের সরকারের পক্ষে ভোট দিয়ে তাঁকে কতকটা নৈতিক চাপ দেওয়া হল। এর পর স্বভাবতই প্রত্যাশা থাকবে যে, ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে জাতীয় স্তরে বার কংগ্রেসকেই সমর্থন জোগাবেন তিনি।
জয়ের পরে: বিধানসভায় গরিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়ার
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি নীতীশ। বুধবার পটনায়। ছবি: জয়প্রকাশ
অনেকের মতে, লোকসভা ভোটে নীতীশকে যে কোনও একটি জাতীয় দলের সঙ্গে থাকতেই হবে। তা সে বিজেপি হোক বা কংগ্রেস। নীতীশ জানেন, লালু -রামবিলাস এখন কেন্দ্রকে বাইরে থেকে সমর্থন দিচ্ছেন। আগামী লোকসভা ভোটেও যদি তাঁরা কেন্দ্রের পাশে থাকেন এবং নীতীশ যদি একলা চলেন, সে ক্ষেত্রে তাঁরই লোকসান। এবং কংগ্রেসও আজ বলেছে, আস্থা ভোটে সমর্থন দেওয়া মানেই জোট হয়ে গিয়েছে এমন নয়। যার স্পষ্ট অর্থ লালুর সঙ্গে জোটের বিকল্প পথও খোলা রাখা হচ্ছে। তবে সংশয় নেই, শেষমেশ নীতীশের সঙ্গে জোট হলেই খুশি হবেন সনিয়া -রাহুল। কারণ, সে ক্ষেত্রে ভোটের পরেও লালু অন্তত বিজেপি - দিকে ঝুঁকতে পারবেন না। আর নীতীশ যে ভাবে নরেন্দ্র মোদী প্রশ্নে বিরোধিতাকে উচ্চগ্রামে নিয়ে গিয়েছেন, তাতে
তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে লাভই দেখছে কংগ্রেস। লোকসভা ভোটে মোদীই কংগ্রেসের প্রধান প্রতিপক্ষ। কাজেই হাইকম্যান্ড মনে করছে, বিহারে নীতীশের পক্ষে ভোট দিয়ে দেশ জুড়ে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি তথা সংখ্যালঘুদের বার্তা পাঠানো গিয়েছে।
নীতীশকে সমর্থন জোগানোর ক্ষেত্রে গুরুত্ব পেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা লোকসভা ভোটে সম্ভাব্য বিরোধী জোটে আঘাত হানার বিষয়গুলিও। ইউপিএ থেকে তৃণমূল ডিএমকে - সমর্থন প্রত্যাহারের পর একমাত্র জিয়নকাঠি যিনি ছিলেন, সেই মুলায়ম সিংহ সম্প্রতি কথায় কথায় সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছিলেন। খাদ্য সুরক্ষা বিলের বিরোধিতারও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। তাই কংগ্রেস মনে করছে, নীতীশকে পাশে পেলে মুলায়মকে বশে রাখা যাবে।
পাশাপাশি, নীতীশকে সমর্থন দিয়ে তথাকথিত ফেডেরাল ফ্রন্টের কুশীলবদেরও চাপে ফেলা যাবে বলে আশা করছে কংগ্রেস। ক’দিন আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নবীন পট্টনায়করা নীতীশকে নিয়ে কংগ্রেস বিরোধিতায় ওই ফ্রন্ট গড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
ফলে ভবিষ্যৎ যা - হোক, আপাতত নীতীশ -সঙ্গে ক্ষতি দেখছে না কংগ্রেস। আর জোট যদি না - হয়, বিকল্প তো রইলেনই লালু প্রসাদ কিংবা রামবিলাস পাসোয়ান !

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.