কেদারনাথ-বদ্রিনাথ বেড়াতে গিয়ে ব্যাপক বৃষ্টি এবং ধসে রবিবার থেকে উত্তরকাশীতে আটকে পড়েছেন বাঁকুড়ার ২৭ জন পর্যটক। এ খবর জানার পর থেকেই উদ্বেগে রয়েছেন তাঁদের আত্মীয়েরা। কেননা, উত্তরকাশীতে টেলি-যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় রবিবার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত তাঁরা পর্যটকদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারেননি।
পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার অবশ্য বলেন, “বদ্রিনাথ থানা এলাকায় ধসে আটকে রয়েছেন এই জেলার পর্যটকেরা। তাঁরা ভাল আছেন। ওখানকার টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছে। ওঁদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমি ওই রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ২৮ জন পর্যটকের মধ্যে রয়েছেন সোনামুখীর ১৪ জন এবং কোতুলপুরের ১৩ জন। গত ৫ জুন সোনামুখীর বাসিন্দা সুনীল সেনের তত্ত্বাবধানে দলটি বর্ধমান থেকে দুন এক্সপ্রেসে কেদার-বদ্রি যায়। আজ, মঙ্গলবার দলটির ফেরার কথা ছিল। সুনীলবাবুর ছেলে তরুণ সেন সোমবার বলেন, “রবিবার সকালের পরে বাবার সঙ্গে আর মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারছি না। মা-বোন খুব কান্নাকাটি করছে।”
সোনামুখীরই রথতলার বাসিন্দা অজিত ঘোষাল রয়েছেন ওই ২৭ জনের দলে। তাঁর ছেলে রাজীব ঘোষাল বলেন, “রবিবার বিকেল তিনটেয় বাবার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে। তার পরেই টিভিতে জানতে পারলাম ওখানকার বিপর্যয়ের কথা। আর কোনও খবর পাচ্ছি না। মাকেও সামলানো যাচ্ছে না।” উদ্বেগে রয়েছেন কোতুলপুরের বাসিন্দা অর্ধেন্দু সেন। বললেন, “বড়দা-বউদি কেদার-বদ্রি বেড়াতে গিয়েছেন। কিন্তু এ ভাবে আটকে পড়বেন ভাবতে পারিনি। রবিবার বিকেল থেকে মোবাইলে পাচ্ছি না। কী করছেন, কেমন আছেন, কিছুই জানতে পারছি না।” লেগো গ্রামের সাধন রায়ের সঙ্গে গিয়েছেন আরও ১২ জন। দলে রয়েছেন কয়েক জন মহিলাও। সকলের পরিবারেই একই উদ্বেগ।
সোনামুখীর পুরপ্রধান সিপিএমের কুশল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সোনামুখীর যাঁরা বেড়াতে গিয়ে ধসে আটকে পড়েছেন, তাঁরা সকলেই আমার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আমি পুলিশ-প্রশাসনকে সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধারের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” কোতুলপুরের কংগ্রেস বিধায়ক সৌমিত্র খাঁ-ও বলেন, “আমি নিজে ওই রাজ্যের দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে আটকে পড়া যাত্রীদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছি।”
|