ব্যারাকপুর কাণ্ডে ধৃত দুই মূল অভিযুক্ত শিবু যাদব ও দেবব্রত ঘোষ ওরফে লাল্টুকে শনিবার পুলিশ হেফাজতে পাঠাল আদালত।
বৃহস্পতিবার বিহারের চম্পারণ থেকে শিবু যাদব-সহ ন’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার দিঘা থেকে পাকড়াও করা হয় লাল্টুকে। এ দিন ধৃতদের ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করানো হলে লাল্টুকে ১৪ দিন এবং শিবুকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়। ১২ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে শিবুর দুই সঙ্গী ভোলা চোর ও শঙ্কর যাদবেরও। তাঁর আরও ছয় সঙ্গীকে ১২ দিনের জেল হেফাজত দিয়েছে আদালত।
গত ৬ তারিখ রাতে ব্যারাকপুরের মুরগিমহলে জিতুলাল তাঁতি নামে এক যুবককে গুলি করে ও বোমা মেরে খুন করা হয়। তার পরেই ব্যারাকপুরের মণিরামপুরে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় এক দল দুষ্কৃতী। মারধর করে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয় সাংবাদিকদের। এই ঘটনায় এলাকার ইমারতি দ্রব্যের সিন্ডিকেট ব্যবসা নিয়ে শিবু যাদবের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা রবীন ভট্টাচার্যের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দায়ী বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, ঘটনার পর ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হলেও শিবু ও লাল্টু ফেরার হয়ে গিয়েছিলেন।
শিবু-লাল্টুকে হাজির করানোর সময় গোলমালের আশঙ্কায় এ দিন সকাল থেকেই ব্যারাকপুর আদালতের চারপাশ কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলে পুলিশ। রাস্তায় বসানো হয় ব্যারিকেড। মোতায়েন করা হয় র্যাফ, কাঁদানে গ্যাসের শেলধারী পুলিশ। |
ব্যারাকপুর আদালতে শিবু যাদব। —নিজস্ব চিত্র |
বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ সাদা রঙের একটি টাটা সুমোয় চাপিয়ে লাল্টুকে আদালতে আনা হয়। প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কোর্ট লক-আপে। সেখান থেকে এজলাসে। লাল্টুর মামলা চলার সময় পুলিশ সাংবাদিকদের এজলাসে ঢুকতে দেয়নি। সাড়ে পাঁচটা নাগাদ র্যাফের পাহারায় একটি টাটা সুমোয় চাপিয়ে নিয়ে আসা হয় শিবু যাদবকে। পিছনে একটি পুলিশ ভ্যানে চাপিয়ে নিয়ে আসা হয় তাঁর সঙ্গীদেরও। র্যাফেরই ঘেরাটোপে শিবু ও তাঁর সঙ্গীদের কোর্ট লক-আপে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পৌনে ছ’টা নাগাদ তাঁদের এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয়।
লাল্টুর মামলার মতোই শিবুর সময়েও এজলাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় সাংবাদিকদের। তখন বিষয়টি এসিজেএম-কে জানানো হলে তিনি সাংবাদিকদের এজলাসে ঢোকার অনুমতি দেন। এ দিন এজলাসের লক-আপে সঙ্গী পরিবেষ্টিত হয়ে ভাবলেশহীন মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিবু। বার বার শুধু ঘাম মুছছিলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন শিবুকে আদালতে হাজির করানোর আগে পুলিশ যে এফআইআর-টি পাঠিয়েছিল, তাতে অভিযুক্ত হিসেবে শিবুর নাম ছিল না। বিষয়টি নজরে আসতেই তাঁর বিরুদ্ধে থাকা এফআইআর নিয়ে আসা হয়।
শিবুকে জেরা করার সময় হাজির থাকতে চেয়ে তাঁর আইনজীবী সোনিকা সাউ এবং রাজুকুমার সাউ এ দিন আদালতে আর্জি জানান। তা মঞ্জুর করেছে আদালত। |