ভুটান গেট সংলগ্ন রাস্তার দু’ধারের সাপ্তাহিক হাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও জেলা প্রশাসন। ধূপগুড়ির সীমান্তবর্তী চামুর্চি গ্রামের শেষ প্রান্তে সামচি শহরে প্রবেশের ভুটানের গেট থেকে ৩০ মিটার দূরে ফি শুক্রবার হাট বসে। দুই দশক আগে ওই হাটের জন্ম। হাটের জন্য আলাদা কোনও জায়গার বন্দোবস্ত করা হয়নি। ওই হাট অন্যত্র সরানোর জন্য ভুটান সীমান্তে পাহারায় থাকা সশস্ত্র সীমা বলের তরফে বহু বার আর্জি জানানো হয়েছে। এস এস বি-র ওই সীমান্তের দায়িত্বে থাকা অফিসার অতুল মণ্ডল বলেন, “বহুবার রাস্তায় হাট না বসাতে স্থানীয় স্তরে আলোচনা করি। বিষয়টি প্রশাসন জানে। যে ভাবে সীমান্তের হাটে ভিড় বাড়ছে তা ঠিক নয়।”
জলপাইগুড়ির মহকুমা শাসক সাগর চক্রবর্তীও বিষয়টি জানেন। তিনি বলেন,“স্পর্শকাতর ওই জায়গাতে হাট বসা ঠিক নয়। বিষয়টি এসএস বি-র দেখা প্রয়োজন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর হাটটি আশেপাশে স্থানান্তরিত করা যায় কিনা তা দেখা হবে।”
২০০৩ সালে ভুটানে নানা এলাকায় কেএলও-র ঘাঁটি তুলে দেয় ওই দেশের সেনাবাহিনী। নতুন করে যাতে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী ভারত সংলগ্ন ওই দেশে ডেরা না বাঁধতে পারে কিংবা ভুটানে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা কেউ না ঘটায়, সে কারণে দশ বছর ধরে ভুটান সীমান্তে নজরদারির জন্য এসএসবি মোতায়েন রয়েছে। এসএসবি জানতে পেরেছে, চামুর্চির শতাধিক বছরের হাট জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন। ফি বুধবার বসে। ভুটানের সামচি শহরে এক সময় শুক্রবার হাট বসত। ভুটান প্রশাসন হাট শুক্রর পরিবর্তে রবিবার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে থেকে ফি শুক্রবার ভুটান গেটের সমনে হাটটি বসতে শুরু করে। ফি শুক্রবার চামুর্চি গেটবাজারে সকাল থেকে বসা হাটের মূল ক্রেতা ভুটানের সামচির বাসিন্দারা ভুটানি নাগরিকরা। হাটটি রাস্তায় বসায় যানজটে সকলকে নাকাল হতে হয়। সাধারণ মানুষ ফুটপাত না পেয়ে গাড়ি চলাচলের রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা নিয়মিতই। হাট বসলেও হাটে জল বা শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। ওই হাটের ব্যবসায়ীরা জানান, রবিবার সামচির হাটবার। কয়েক বছর ধরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই হাট বসে। স্বল্প সময়ে কেনাকাটা করা যায় না দেখে ভুটানের নাগরিকরা ফটক পেরিয়ে সীমান্ত লাগোয়া ওই হাটে ছুটে আসেন। ওই এলাকার বাসিন্দা মহেন্দ্র মণ্ডল বলেন, “রাস্তার ধারে এ ভাবে হাট বসুক সেটা কেউ চায় না। বাজারের পেছনে চা বাগানের ফাঁকা জায়গা রয়েছে। সেখানে অনায়াসে হাট বসতে পারে। প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে হাট সরাক।” বানারহাটের বাসিন্দা হাটের জুতো ব্যবসায়ী মহম্মদ রাজু বলেন, “বহু দিন ধরে আমরা এ ভাবে হাটে দোকান করছি। এক-আধ দিন সামান্য যানজট হয়। তবে হাটে জলের বা শৌচালয়ের ব্যবস্থা না থাকায় ক্রেতা ও বিক্রেতা সকলের সমস্যা হচ্ছে।” |