এক কংগ্রেস কর্মী খুন ও জেলা কংগ্রেস সভাপতির উপরে হামলা বৃহস্পতিবার
রাতের এই দু’টি ঘটনার জেরে তেতে উঠেছে জলপাইগুড়ি।
কংগ্রেসের অভিযোগ, আলিপুরদুয়ারের পলাশতলি বাজারে ট্রান্সফর্মারের সুইচ নামিয়ে অন্ধকার করে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে সূর্যমোহন দেবনাথ (৫৭) নামে তাদের এক কর্মীকে খুন করে সিপিএম-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ওই রাতেই শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে জলপাইগুড়ির মিলনপল্লিতে জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু-সহ জেলার অন্য নেতারা গিয়েছিলেন। ফেরার সময়ে তাঁদের গাড়ি আটকে তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। মোহনবাবুর একটি চোখে চোট লেগেছে। তিনি জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শুক্রবার জলপাইগুড়ির নানা এলাকায় কংগ্রেসের তরফে বিক্ষোভ, অবরোধ হয়। পাল্টা হামলার অভিযোগও উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
দু’টি ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “কংগ্রেস গণতান্ত্রিক ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে দেখেই তৃণমূল ও সিপিএম আমাদের আক্রমণ করছে।” তাঁর সংযোজন, “তৃণমূল প্রশাসনকে চাপ দিচ্ছে যাতে কংগ্রেস কোনও অভিযোগ করলে তা গুরুত্ব না দেওয়া হয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাব নিরপেক্ষ পুলিশি ব্যবস্থা করতে।” |
মোহনবাবুর উপরে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁকে ফোন করেন তৃণমূল নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তবে ঘটনায় তৃণমূলের লোকজন জড়িত বলে মানেননি তিনি। গৌতমবাবুর দাবি, “আমাদের দলের জেলা সভাপতি জানিয়েছেন ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত নন। বিশদে রিপোর্ট চেয়েছি। তা হাতে পাওয়ার পরে পদক্ষেপ করা হবে।” সিপিএমও আলিপুরদুয়ারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের জলপাইগুড়ির জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা রাজনৈতিক ঘটনা নয়। যত দূর শুনেছি, কোনও নেশার আসর থেকে মারামারি হয়।”
এ দিন জলপাইগুড়ির এসি কলেজ এবং প্রসন্নদেব মহিলা কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহায়তা কেন্দ্রে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাপানো ফ্লেক্স পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও তুলেছে তৃণমূল। জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “জেলায় যাতে রাজনৈতিক উত্তেজনা না ছড়ায়, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” আলিপুরদুয়ারে সূর্যমোহন দেবনাথ খুনে জড়িত সন্দেহে পুলিশ খগেন দেবনাথ নামে এক সিপিএম কর্মীকে ধরেছে। নিহতের ছেলে শম্ভু দেবনাথ এ দিন ২৯ জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। মোহনবাবুর উপরে হামলার ঘটনায় শতাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কে জয়রামন বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।”
পক্ষান্তরে, সিপিএম কর্মীর বাড়িতে কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে দেওয়াল লেখাকে কেন্দ্র করে দু’দলের সংঘর্ষে এক সিপিএম কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। জখম অন্তত ৮।
পুলিশ সূত্রের খবর, নিহতের নাম কালিমুদ্দিন সরকার (৫৮)। শুক্রবার মালদহের গাজলে এই ঘটনার প্রতিবাদে ও অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে আজ, শনিবার ১২ ঘণ্টা গাজল বন্ধের ডাক দিয়েছে সিপিএম। পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “তল্লাশি চলছে।” |