দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
উদাসীন পুরসভা
হুলের জ্বালা
দিন-রাত মশার যন্ত্রণা। আর এর জেরে অতিষ্ঠ রাজপুর-সোনারপুর এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, মশা নিয়ন্ত্রণে পুরসভার তরফ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। যদিও বাসিন্দাদের এই অভিযোগ মানতে নারাজ পুর-কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, সমগ্র পুর-এলাকাতেই মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত অভিযান চালান পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা।
যদিও পুর-কর্তৃপক্ষের এই দাবি নস্যাৎ করে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সপ্তাহে অন্তত তিন দিন মশা মারার কীটনাশক ছড়ানোর কথা। কিন্তু তা ছড়ানো হয় মাঝেমধ্যে। স্থানীয় মানিক দাসের কথায়: “মশার এত উপদ্রব যে দিনের বেলাতেও মশারি টাঙিয়ে রাখতে হয়।” এলাকায় মশাবাহিত রোগের প্রকোপও রয়েছে বলে জানান বাসিন্দারা। তাঁদের আরও অভিযোগ, সমস্যার কথা পুরসভাকে বার বার জানিয়েও সুরাহা হয়নি।
রানিয়া, বোড়াল, শ্রীপুর, লস্করপুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশার উপদ্রবের জন্য সারা দিন ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ রাখতে হয়। এলাকার নর্দমাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। বিভিন্ন জমিতে আগাছা জমে রয়েছে। সেগুলিও সাফ করা হয় না। ফলে সারা বছরই মশার উপদ্রব সহ্য করতে হয়। পাশাপাশি, রাজপুর, জগদ্দল, কালীতলা, হরহরিতলা, চৌহাটি, মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের বেলাতেও মশার চাক ঘরের বাইরে ভন্ভন্ করে। ঘরের দরজা-জানলা একটু ফাঁক করলেই মশা ঢুকে পড়ে।
রাজপুর-সোনারপুরের প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, “মশা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়। আমাদের সময়েও ছিল, এখনও আছে। তবে মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত কিছু কর্মসূচি চালাতে হয়। বর্তমানে সেই কাজটা হচ্ছে না।” পুরসভা সূত্রে খবর, এই পুরসভায় মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য আজও কোনও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। মাঝেমধ্যে কিছু কীটনাশক আর ব্লিচিং ছড়িয়ে মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়। সোনারপুর, ঘাসিয়ারা, গ্রিন পার্ক, কামালগাজি, মহামায়াতলা এলাকার বাসিন্দারা জানান, পুরসভার ছড়ানো কীটনাশকে কোনও লাভ হয় না।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, কলকাতা লাগোয়া হলেও এই পুর এলাকায় মশাবাহিত রোগের দাপট রয়েই গিয়েছে। ফি-বছর বর্ষার শেষে এবং শীতের শুরুতে এই ধরনের রোগের প্রকোপ বাড়ে। কিন্তু পুরসভার তরফ থেকে তা নিয়ে কোনও সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া হয় না। যদিও এই সব অভিযোগ অস্বীকার করে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) তৃণমূলের পল্লব দাস বলেন, “আমরা প্রতি বছরই মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য বোর্ডের তরফে নির্দিষ্ট কমর্সূচি নিই। আমাদের কর্মীরা সমগ্র পুর-এলাকা জুড়ে নিয়মিত কীটনাশক ছড়ানোর কাজও করেন।”

ছবি: সুব্রত রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.