পূর্ব কলকাতা
সল্টলেক
পরিস্রুত বিতর্ক
পুরসভার দাবি, বিধাননগরের দত্তাবাদের এক অংশে অবশেষে পরিস্রুত পানীয় জল যাচ্ছে। সম্প্রতি সল্টলেকের এএ ব্লকে একটি গভীর নলকূপ বসেছে। সেখান থেকেই এই জল সরবরাহ করা হচ্ছে। যদিও এই দাবি মানতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দারা।
দত্তাবাদের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, তাঁরা ভূগর্ভস্থ জল পান। এই জল পরিস্রুত নয়। একই অভিযোগ বিধাননগরের অন্য অংশের বাসিন্দাদেরও। যদিও পুরসভার আশ্বাস, রাজারহাট-নিউটাউনে একটি জল প্রকল্পের কাজ চলছে। এই কাজ শেষ হলে ভূগর্ভস্থ জলের আর দরকার হবে না।
দীর্ঘ দিন ধরে টালা-পলতা থেকে পাওয়া জলের সঙ্গে ভূগর্ভস্থ জল মিশিয়ে বিধাননগরে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ১, ১৭ থেকে ১৯, ২১ থেকে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড এবং সংযুক্ত এলাকার বাসিন্দাদের এক অংশের অভিযোগ, মিশ্র জল নয়, তাঁদের শুধু গভীর নলকূপের জলই সরবরাহ করে পুরসভা।
বিধাননগরের ২২ থেকে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ে দত্তাবাদ। বাসিন্দারা জানান, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে দত্তাবাদ অংশ এবং এএ ব্লকে বেশ কিছু দিন ধরে জলসঙ্কট চলছিল। সমস্যা সমাধানে তৃণমূল পরিচালিত বিধাননগর পুরসভা এএ ব্লকে একটি গভীর নলকূপ বসায়। নলকূপটিকে দু’নম্বর ট্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই জল পরিস্রুত নয়। যদিও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের স্নিগ্ধা মজুমদার বলেন, ‘‘অভিযোগ ঠিক নয়। দু’নম্বর জলের ট্যাঙ্কের সঙ্গে ছ’ইঞ্চির পাইপলাইন যুক্ত হয়েছে। ফলে মাটির তলার নয়, পরিস্রুত পানীয় জলই সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে এএ ব্লক এবং দত্তাবাদের একাংশের জলের চাহিদা মেটানো গিয়েছে।’’
কিন্তু দত্তাবাদের বিভিন্ন অংশে গভীর নলকূপ থেকে নানা সময়ে জল সরবরাহ করা হয়। জল নিতে দীর্ঘ লাইন পড়ে। বাসিন্দা সুমিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘ভূগর্ভস্থ জলই পাই। পানের জন্য বাইপাসের কাছে কলকাতা পুরসভার জলই ভরসা।’’ দত্তাবাদবাসীদের একাংশের অভিযোগ, মূল বিধাননগরে টালা-পলতার জল সরবরাহ করা হলেও এই অঞ্চল বঞ্চিত।
প্রায় একই অভিযোগ মূল বিধাননগরের বাসিন্দাদেরও। বাসিন্দাদের সংগঠন সল্টলেক (বিধাননগর) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘আগের তুলনায় জল সরবরাহ নিয়ে প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু পরিস্রুত পানীয় জল আজও এল না। মিশ্রিত জল সরবরাহ করা হয়। ১৮ বছর পার করেও কেন পরিকল্পিত উপনগরী পরিস্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত থাকবে?’’ এ সমস্যা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও রয়েছে। তৃণমূলের দাবি, এত দিন বামেরা কিছু করেনি। তারা ক্ষমতায় এসে একাধিক পরিকল্পনা করেছে। দ্রুত তা কার্যকরী হবে। বিরোধী দল সিপিএমের পাল্টা দাবি, মূল বিধাননগর ও সংযুক্ত এলাকায় মিশ্রিত জল সরবরাহের কাজ তাদের আমলেই শুরু হয়েছিল। এমনকী, একাধিক জল প্রকল্পের প্রস্তাব তখনই হয়েছিল। বর্তমান শাসক দল সেগুলিই নিজেদের সাফল্য বলে প্রচার করছে।
বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ অশেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজারহাট-নিউটাউনে জল প্রকল্পের কাজ চলছে। সেখান থেকে বিধাননগর জল পাবে। পাইপলাইন পাতার জন্য ইতিমধ্যেই আমরা টাকা জমা করেছি। এক বছরের মধ্যেই সমস্যা মিটবে বলে আশা করছি।’’

ছবি: শৌভিক দে




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.