দক্ষিণ কলকাতা
হস্টেল কবে
জমিতে ক্লাব
রাজ্য সরকারের দেওয়া জমিতে আজও গড়ে উঠল না হস্টেল। ছ’বছর আগেই বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজ কর্তৃপক্ষকে রাজ্য সরকার জমি দিয়েছিল হস্টেল তৈরির জন্য। অভিযোগ, সেই জমিতেই দু’টি ক্লাব থাকায় জায়গাটি ‘বেদখল’ হয়ে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিজয়গড় জ্যেতিষ রায় কলেজের কাছেই উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের একটি নিচু জমি ছিল। সেখানে আগে জঞ্জাল ফেলা হত। পরবর্তীকালে, পাশাপাশি দু’টি ক্লাব গড়ে ওঠে। ইদানীং জমিটিতে গাড়িও রাখা হয়। মাঝেমধ্যে কয়েক জন প্রমোটার ইমারতি দ্রব্যও রাখেন। এই দু’টি ক্লাব গড়ে ওঠার আগে এই ফাঁকা জমিতে বেড়া তৈরি করে একটি সংগঠন প্রাথমিক বিদ্যালয় চালাত বলেও বাসিন্দারা জানান। পরবর্তী কালে, এখানেই দু’টি ক্লাব সারা বছর ধরে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান করে।
রাজ্য সরকার যে জমি কলেজকে হস্টেল তৈরির জন্য বরাদ্দ করেছে সেখান থেকে এই দু’টি ক্লাব সরানো যাচ্ছে না কেন?
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস বলেন, “বামফ্রন্টের আমল থেকেই এই জমিতে ক্লাব রয়েছে। এদের সরানো সম্ভব হয়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং ক্লাবের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্তের কথায়: “সরকারের দেওয়া জমি বেদখল হওয়ার জন্যই হস্টেল নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। জমিটি বর্তমানে কলেজেরই। জমি খালি করার ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।”
কলেজ সূত্রে খবর, ২০০৭-এ তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার কলেজের ছাত্রী এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য হস্টেল নির্মাণে এই জমি বরাদ্দ করে। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ফাঁকা জমিটি তাঁদেরই।
একটি ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সোমনাথ গুহ বলেন, “ক্লাবটি বহু দিনের। সরকার এখানে হস্টেল তৈরির করার জন্য কলেজকে এই জমি বরাদ্দ করার আগে থেকেই আমরা রয়েছি। আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাই। হস্টেল তৈরির জন্য আমরা জায়গা ছেড়ে দিতেও রাজি আছি। তবে সে ক্ষেত্রে আমাদের জন্য জমির সামান্য অংশ ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাব।”
আর একটি ক্লাবের প্রতিনিধি তথা সদস্য রানা চৌধুরী বলেন, “১৯৯৫ থেকে ওই জমিতে আমাদের ক্লাব রয়েছে। নির্মাণও হয়েছে। সুতরাং কলেজকে এই জমি দেওয়ার আগে থেকেই আমরা এখানে আছি। এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া ছাড়াও নানা ধরনের সমাজসেবামূলক কাজও করে থাকি। কারও জমি দখল করে ক্লাব তৈরি হয়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষ আলোচনা করতে চাইলে আমরা রাজি। তবে, এখনও পর্যন্ত আলোচনার জন্য কোনও চিঠি পাইনি।”
যদিও কলেজের অধ্যক্ষ পুস্পিতারঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্য সরকার এই জমিটি দু’টি হস্টেল তৈরির জন্য কলেজকে বরাদ্দ করেছিল। একটি হস্টেল ছাত্রীদের, অন্যটি তফসিলি জাতি ও উপজাতির ছাত্রদের জন্য। কিন্তু ওই জমিতে দু’টি ক্লাব থাকায় হস্টেল তৈরি সম্ভব হয়নি। জমিটি কলেজ কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তরের আগে থেকেই এখানে দু’টি ক্লাব ছিল। আমি দুই ক্লাবের প্রতিনিধিদের জমিটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। প্রশাসন এবং পুলিশকেও জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। হস্টেলের পাশে কোনও ভাবেই ক্লাব রাখা সম্ভব নয়। এই বিষয়টি নিয়ে ক্লাব দু’টির সঙ্গে আবারও আলোচনা করতেও রাজি আছি। কিন্তু সমস্যা না মিটলে হস্টেল তৈরির দাবিতে অনশনে বসব।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.