|
|
|
|
|
|
নবাবি দাওয়ত
সেই সব খানসামা বিশেষ উপলক্ষে এখনও বিরিয়ানি-কাবাবের সম্ভারে
সাজিয়ে তোলেন শাহি দাওয়ত। খোঁজ নিলেন সোমঋতা ভট্টাচার্য |
রান্নার পাত্রে গরম কয়লার পরত দিয়ে রান্না করা মুসল্লম কাবাব বা কয়লা পুড়িয়ে বানানো পসন্দা কাবাব। লগন তাওয়ায় তৈরি কাবাব মেশয়ি বা চারকোলের ভাপে ঘি সহযোগে রান্না করা শামি কাবাব। শাহি বিরিয়ানি বা মোতি বিরিয়ানি অথবা চিরন্তন
হায়দরাবাদি বিরিয়ানি!
আমিষ হোক বা নিরামিষ, নবাবি খানার মেজাজই আলাদা। তেমনই আলাদা রন্ধন প্রণালীও। আওয়াধি রান্নার জন্ম তো তখনকার লখনউয়ে। সেই রান্নার উপরে পড়েছিল মুঘল ঘরানার প্রভাব। সেই সঙ্গে মিশেছিল পারস্য, কাশ্মীর, পাঞ্জাব আর হায়দরাবাদের নবাবিয়ানাও। বড় বড় হাঁড়ির মধ্যে অনেকক্ষণ ধরে ‘দমপোক্ত’ কায়দায় রান্না এসেছে সেখান থেকেই। আর সেই রান্নার রকমফেরই বা কত কোর্মা, সালান, কিমা, কাবাব, পসন্দা! সঙ্গে বিরিয়ানি তো আছেই। আগেকার দিনে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আর উৎসববিশেষে বদলে যেত সেই সব রান্নার ধরন।
|
|
নবাবি খানা বেশ মশলাদার, স্বাদকোরকগুলোর পক্ষে বেশ একটু ভারি, সে কথা অজানা নয়। তবে মশলার বৈচিত্র্যে, রন্ধনপ্রণালীর সাবেকিয়ানায় আর স্বাদগন্ধের মেজাজে তা অতুলনীয়। দুপুর হোক বা রাত, ভোজ জমিয়ে দেওয়ার পক্ষে একাই একশো।
তাই নবাবি খানার এই সব মণিমুক্তো নিয়েই এক মাসের উৎসবে মেতেছে পূর্ণদাস রোডের ‘দ্য রেস্তোরাঁ অন দ্য ফার্স্ট ফ্লোর’। নবাবি খানার এই উৎসবে শেফ সঞ্চয়িতা ভট্টাচার্য আলম জিইয়ে তুলেছেন সাবেক কালের খানসামাদের বিশেষ রন্ধন প্রণালী। এখনও খোঁজ করলে হয়তো শহরের আনাচে-কানাচে দেখা মিলে যেতে পারে সেই সব খানসামার। তখনই খবর মিলবে, ওঁরা বিশেষ বিশেষ উদ্যাপন উপলক্ষে এখনও বিরিয়ানি-কাবাবের সম্ভারে সাজিয়ে তোলেন দাওয়ত। নবাবি খানা ছাড়া বিয়ে-শাদির দাওয়তও সম্পূর্ণ হয় না সেখানে।
সে যাই হোক, নবাবি রান্নার এই মহোৎসবে মেনুকার্ডে কিন্তু হই-হই কাণ্ড! আসর জমিয়ে তুলতে রয়েছে হরে মটর কে শামি কাবাব, কাবাব মেশয়ি, ওয়ারকি পরাঠা। গরম মশলা, লাল লঙ্কার পেস্ট, আদা-রসুনে ম্যারিনেট করা মাটন কিউব গ্রিল করে বানানো বোটি কাবাবও রয়েছে। সঙ্গতে রয়েছে নিরামিষ মালাই কোফ্তা আর শাহি পনির পসন্দা। |
|
তেমনই আবার হায়দরাবাদের বিশেষত্ব গরগরে মাহি মির্চ কা সালান দিয়ে জমিয়ে খাওয়া যেতে পারে হায়দরাবাদি বিরিয়ানি। মির্চি কা সালান তৈরি হয় লঙ্কা, বাদাম, তিল, নারকেল, জিরে, আদা-রসুন, তেজপাতা আর তেঁতুলের রস দিয়ে। একটু বেশি মশলাদার, কিন্তু বড়ই উপাদেয়। সঙ্গে হরেক কিসিমের কাবাব তো আছেই। বিরিয়ানির তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন হল শাহি গোস্ত বিরিয়ানি। সঙ্গে রয়েছে মুর্গ শাহি টেংরি আর মুর্গ হাওয়া মহলের যুগলবন্দি।
শেষ পাতে ডেজার্টেও অবহেলার কোনও অবকাশ নেই। আওয়াধি ঘরানার শাহি টুকরা, শাহি ফিরনি আর কুলফি ফালুদা থাকবে মিষ্টি স্বাদকোরকগুলোকে উসকে দিতে।
সুতরাং সামনের ক’টা দিন দিব্যি থাকতে পারেন রসেবশে, নবাবি খাবারের মেজাজি স্বাদকে সঙ্গে নিয়ে। |
ছবি: শুভেন্দু চাকী |
|
|
|
|
|