বিপাকে গড়বেতার বাসিন্দারা
শিলাবতী নদীর সেতু নির্মাণে ফের সংশয়
লতি আর্থিক বছরেই সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরিকল্পনা ছিল সেতুর সঙ্গেই পাঁচ কিলোমিটার রাস্তাও তৈরি করা হবে। কিন্তু, রাস্তার কাজ তো শুরুই হয়নি, এমনকি সেতুর কাজ কিছু দিন আগে শুরু হলেও সম্প্রতি বৃষ্টির জেরে জলের তোড়ে তা ভেঙে পড়েছে! এর পর আদৌ কবে সেতুর কাজ শেষ হবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। ফলে গড়বেতা ১ ব্লকের বেনাচাপড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা ফের আগের মতোই অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ফের দ্রুত গতিতে কাজ শুরুর জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
প্রশাসন যতই আশ্বাস দিক তা যে আদৌ বাস্তবে সম্ভব নয় তা সকলেরই জানা। কারণ, সামনেই বর্ষা। তাই তার আগে ফের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা অসম্ভব। তা ছাড়া রয়েছে আরও কিছু সমস্যাও। সেগুলি কী?
প্রশাসন সূত্রে খবর, গড়বেতা থেকে কমলা রাইস মিল হয়ে হমগড় যাওয়ার পাকা রাস্তা রয়েছে। কমলা রাইস মিল থেকে পাকা রাস্তা ছেড়ে ডান দিকে মোরাম রাস্তা ধরে বেনাচাপড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে যেতে হয়। রাস্তাটি খুবই খারাপ। ওই পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির সঙ্গেই সেতু নির্মাণের দাবি ছিল দীর্ঘ দিনের। কিন্তু এখনও রাস্তা তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজই শুরু হয়নি। তার উপর বর্ষায় সেতু ভাঙায় ঠিকাদার ফের অতিরিক্ত অর্থ চেয়েছেন। তার উপর আবার এখন শিয়রে নির্বাচন! তাই প্রশ্ন, ওই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কত দিন সময় লাগবে? প্রশাসন সূত্রে খবর, সমস্যা সমাধানে শীঘ্রই পূর্ত দফতরের পদস্থ আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শনে আসবেন। বর্ষা পেরোলেই যাতে সেতু তৈরির কাজ শুরু করা যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন তাঁরা।
গড়বেতা থেকে বেনাচাপড়া পঞ্চায়েত এলাকায় ঢোকার মাঝেই রয়েছে শিলাবতী নদী। কিন্তু নদীতে পাকা সেতু না থাকায় চরম সমস্যায় পড়তে হত সাধারণ মানুষকে। অবশ্য গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে প্রতি বছরই একটি করে কাঠের সেতু করে দেওয়া হত। তার জন্য বছরে গড়ে ২০-২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হত। ফি বর্ষায় সেই সেতু ভেঙে নষ্ট হত। তখন ভরসা ছিল কেবল নৌকা। বেনাচাপড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচুর সব্জি চাষ হয়। শীতকালে আলুও হয় প্রচুর। স্বাভাবিক ভাবেই খেতের ফসল বিক্রির সঙ্গে বাজার-হাট করতেও এলাকার মানুষকে গড়বেতায় আসতে হয়। ফলে পাকা সেতুর দাবি দীর্ঘ দিনের। দাবি মেনে সরকার সেতুর জন্য অর্থ বরাদ্দও করে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেতর ওয়ার্ক অর্ডারও দেওয়া হয়। সেতুর ব্যয় ধরা হয় আট কোটি টাকা। সঙ্গে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার পর পিলার তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল আগেই। কিন্তু ঢালাইয়ের কাজ হয়নি। সম্প্রতি সে কাজও শুরু হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক বর্ষায় তা ভেঙে পড়ে। তার পরই ঠিকাদার সংস্থা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতির জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন। আবার জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় রাস্তার কাজও শুরু করা যায়নি বলে জানিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে অবশ্য খবর, বর্তমান সরকারের জমি অধিগ্রহণ নীতির জন্য জমি নিয়ে কিছু করা যায়নি। জেলার এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, “অধিগ্রহণ করতে হলে ঝামেলা হতে পারে। তাই আমরা চেয়েছিলাম সেতুর কাজ আগে শেষ হয়ে যাক। পরে তাঁরা নিজেরাই রাস্তার জন্য জমি দিতে উদ্যোগী হবে।” অন্য দিকে ঠিকাদার সংস্থাটির দাবি, এ ভাবে কাজ করা কঠিন। কারণ, সেতু নির্মাণ ও রাস্তা তৈরি দুটিই একটি প্রকল্পের অর্ন্তগত। তা ছাড়া কাজ অসমাপ্ত থাকলে পুরো অর্থ মিলবে না। এই টানাপোড়েনেই থমকে রয়েছে সেতুর কাজ। এমনকি জলের তোড়ে পাশের কাঠের পুলটিও ক্রমশ ক্ষতি হচ্ছে। মাইতা, ভট্টগ্রাম, ঠাকুরানিতলা, কৃষ্ণনগর, খুনবেড়িয়া-সহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, “টাকা থাকা সত্ত্বেও কেন ফের ঝুঁকি নিয়ে কাঠের পুলে অথবা নৌকায় যাতায়াত করতে হবে। দ্রুত সেতু নির্মাণ ও রাস্তা তৈরির কাজ শেষ করুক প্রশাসন।” প্রশাসনিক কর্তারা অবশ্য নির্বাচনের কারণে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে আশ্বাস দিয়েছেন, যাতে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা যায় তার জন্য পদক্ষেপ করবেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.