নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ঠিক করেছিলেন, শুক্রবার সকালে কয়েকটা এলাকায় যাবেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখা করবেন, তাঁদের কথা শুনবেন। বৃষ্টি নামতেই সব ভেস্তে গেল। সাঁকরাইল থেকে জেলা পরিষদের সিপিএম প্রার্থী শিশির মহাপাত্র বলছিলেন, “বৃষ্টিতে সব প্ল্যান ভেস্তে গেল!” জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিশিরবাবু ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করেছেন। কিন্তু বৃষ্টির জন্য সব গুছিয়ে উঠতে পারছেন না। তাঁর
কথায়, “টানা বৃষ্টি চললে মুশকিল। প্রচারের কাজ এগোবে না। হাতে বেশি সময়ও নেই।”
অঝোর বৃষ্টিতে ডান-বাম সব দলের প্রার্থীরাই প্রচার নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন। শুক্রবার সাতসকালে প্রচারে বেরিয়ে কেউ কাকভেজা হয়ে বাড়ি ফিরেছেন, কেউ আবার বৃষ্টির জন্য বেরোননি। কেউ বা পূর্ব-পরিকল্পনা বাতিল করে দলীয় অফিসে কর্মীদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলোচনা সেরেছেন। আগামী ২ জুলাই পশ্চিম মেদিনীপুরে পঞ্চায়েত নির্বাচন। হাতে রয়েছে আর ১৭ দিন। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস প্রার্থীদের উদ্বেগ আরও বাড়াচ্ছে। মেদিনীপুর কলেজের এন সি রাণা আকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের অধিকর্তা সত্যব্রত রায় বলেন, “টানা বৃষ্টি চলবে। ভোটের সময়ও বৃষ্টি হতে পারে।” |
ওই কেন্দ্র সূত্রে খবর, বুধবার সকাল থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মেদিনীপুরে বৃষ্টি হয়েছে ৫৬ মিলিমিটার। বুধবার ১৫ মিলিমিটার, বৃহস্পতিবার ৩৬ মিলিমিটার ও বাকি ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত। ডেবরা থেকে জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী বিবেক মুখোপাধ্যায়
বলছিলেন, “আগে তো কখনও বর্ষায় ভোট হয়নি। বৃষ্টি হলে কাজ এগোতে সমস্যা হয়। হচ্ছেও। তেমন হলে ছাতা মাথায় বেরোব।”
মনোনয়ন পর্বের পর দেখা যাচ্ছে, জেলায় এ বার গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে মোট প্রার্থী রয়েছেন ৮ হাজার ৭৮ জন। তৃণমূলের ৩ হাজার ৮০০ জন, সিপিএমের ১ হাজার ৯৬৩ জন, সিপিআইয়ের ২২১ জন, কংগ্রেসের ৬৫১ জন, বিজেপি’র ২৫৩ জন। পঞ্চায়েত সমিতির আসনে মোট প্রার্থী ১ হাজার ৯১০ জন। জেলা পরিষদে প্রার্থী রয়েছেন ২৬৯ জন। আকাশে মেঘ সকলের কপালেই ভাঁজ ফেলছে। শালবনি থেকে জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী সনৎ মাহাতোর কথায়, “বৃহস্পতিবার কর্মীদের নিয়ে মিটিং করেছি। এলাকায় প্রচার শুরু করেছি। তবে এ ভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে তো সমস্যা।” মেদিনীপুর সদর পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত শিরোমণি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আসনে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন সোমনাথ চন্দ। তিনি বলেন, “এখনও কিছু দেওয়াল লেখা বাকি রয়েছে। বুধবার থেকে বৃষ্টি চলায় সমস্যাও হচ্ছে।” যাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছেন, একমাত্র তাঁরাই নিশ্চিন্ত। জেলায় সব মিলিয়ে ১০৭৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছেন। এঁদেরই একজন মহম্মদ আকবর খান। মেদিনীপুর সদরের পাঁচখুরি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রার্থী আকবর। কাকভেজা হয়ে শুক্রবার দুপুরে এসেছিলেন সদর বিডিও অফিসে। সার্টিফিকেট নিতে। তাঁর কথায়, “ভাগ্যিস আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থী নেই। তা হলে ভিজে ভিজেই প্রচার করতে হত।” |