|
|
|
|
পিছিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থী |
বিদেশসচিব হতে পারেন সুজাতা |
অগ্নি রায় • নয়াদিল্লি |
শেষ মুহূর্তে কোনও পরিবর্তন না হলে, নতুন বিদেশসচিব হতে চলেছেন সুজাতা সিংহ। ভারতীয় কূটনীতির এই ‘হটসিট’-এর নির্বাচন নিয়ে গত দু’মাস ধরে চলছে রুদ্ধশ্বাস দড়ি টানাটানি। সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত দৌড়ে জিততে চলেছেন বর্তমানে জার্মানিতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সুজাতা।
আগামী ৩০ জুন শেষ হয়ে যাচ্ছে বর্তমান বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাইয়ের মেয়াদ। তাই বিদেশনীতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই পদটিতে যোগ্য ব্যক্তি বাছা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছিল সাউথ ব্লক। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ব্যক্তিগত ভাবে চেয়েছিলেন চিনের রাষ্ট্রদূত এস জয়শঙ্করকে বিদেশসচিব করতে।
অথচ সিনিয়রিটির হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন সুজাতাই। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন রাজ্যপাল ও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রাক্তন ডিরেক্টর টি ভি রাজেশ্বরের কন্যা সুজাতা জার্মানিতে রাষ্ট্রদূত হিসাবে কাজ করার আগে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। ইতালি, তাইল্যান্ড এবং ফ্রান্সেও কাজ করেছেন তিনি। বিদেশ মন্ত্রকের পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক যুগ্ম সচিবের দায়িত্বেও ছিলেন। সুজাতা শেষ পর্যন্ত নিযুক্ত হলে, তিনি
হবেন দেশের তৃতীয় মহিলা বিদেশসচিব (চোকিলা আইয়ার এবং নিরুপমা রাও-এর পর)।
সুজাতা সিংহ |
প্রাথমিক ভাবে সুজাতা ছাড়াও যে নামগুলি এই পদের জন্য উঠে এসেছিল তার মধ্যে ছিলেন জয়শঙ্কর, যামিনী ভাগবতী,
সুধীর ব্যাসের মতো অফিসাররা।
শেষ পর্যন্ত জয়শঙ্কর এবং সুজাতার নাম নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। কৌশলগত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কে সুব্রহ্মণ্যমের ছেলে জয়শঙ্কর
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। এখন চিনে থাকলেও, আমেরিকার বিভিন্ন শিবিরের সঙ্গে যথেষ্ট যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির প্রক্রিয়ায় তৎকালীন রাষ্ট্রদূত রণেন সেনের পাশাপাশি জয়শঙ্করের সক্রিয়তাও ছিল যথেষ্ট। প্রাগ, টোকিও, বুদাপেস্ট ও মস্কোতেও কাজ করেছেন তিনি।
দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে এমন এক জন ব্যক্তিকেই তাঁর দূত হিসাবে পেতে চাইছিলেন মনমোহন সিংহ। কিন্তু সিনিয়রিটির হিসেব ভণ্ডুল করে তাঁকে এই পদ দিলে, কূটনীতিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হত বলেই মনে করছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, সুজাতা সিংহকে এমন বার্তাও দেওয়া হয় যে তিনি চাইলে তাঁর পছন্দের কোনও দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিতে পারেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন সুজাতা। তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর বক্তব্য, সুজাতা তাঁর কর্মজীবনে কোনও প্রতিবেশী রাষ্ট্রে কখনও কাজ করেননি, এক জন বিদেশসচিবের জন্য যা অত্যন্ত জরুরি। জয়শঙ্কর যেখানে এগিয়ে।
সম্প্রতি কংগ্রেসের কোর গ্রুপের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ২০০৬ সালে ছ’জন সিনিয়রকে টপকে শিবশঙ্কর মেননকে বিদেশসচিব করা হয়। তখন বীণা সিক্রি নামে এক কূটনীতিক কার্যত বিদ্রোহ করেছিলেন। তা নিয়ে যে জলঘোলা হয়েছিল, তা ভারতীয় বিদেশনীতির ইতিহাসে এখনও উদাহরণ হিসেবে রয়ে গিয়েছে। তার পুনরাবৃত্তি চাননি অনেকেই। সম্প্রতি এই সিনিয়রিটির নীতি মেনে নিয়েই রঞ্জিত সিন্হাকে সিবিআই প্রধান করা হয়েছে। সেই একই নীতি বিদেশসচিবের ক্ষেত্রেও খাটে বলেই মনে করছেন দল এবং সরকারের একটি অংশ। |
|
|
|
|
|