কিছু দিন আগে জেলায় অতিবৃষ্টি হয়েছিল। আর তার কিছু দিন পর থেকেই ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাচরায়। এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ জন। এঁদের মধ্যে ৩০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছেন। বাকি ৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এঁদের মধ্যে ৪ জন ভর্তি রয়েছেন পাঁচখুরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বাকি ২ জন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরিস্থিতি দেখে এলাকায় মেডিক্যাল টিমও রাখা হয়েছে। ২টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান, দূষিত জল থেকেই এই পরিস্থিতি। জলের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানোও হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “উদ্বেগের কিছু নেই। এলাকায় ২টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।” এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনিও। ডায়েরিয়া আক্রান্তদের বাড়িও গিয়েছিলেন। আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারঙ্গি। পাচরা এলাকায় সবমিলিয়ে ৫টি নলকূপ রয়েছে। তারমধ্যে ৩টিই খারাপ। এলাকায় একটি পুকুর রয়েছে। স্থানীয়রা এই পুকুরের জলেই অধিকাংশ কাজে ব্যবহার করেন। তবে পুকুরের জল ব্যবহারের অনুপযুক্ত। সবমিলিয়ে প্রায় ৪৮টি পরিবার রয়েছে। জনসংখ্যা ১ হাজার ৭৬৯। গরিব মানুষের বাড়িতে শৌচাগার তৈরির জন্য সরকারি প্রকল্প রয়েছে। নিবিড় স্বাস্থ্য বিধান কর্মসূচী রয়েছে। তবে পাচরায় সেই কর্মসূচীর সুফল পৌঁছয়নি বলেই অভিযোগ। অধিকাংশ বাড়িতে শৌচাগার নেই। এরফলে পরিবেশ দূষণ হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “অধিকাংশ মানুষ এলাকার পুকুরের জল ব্যবহার করেন। অথচ, ওই জল দূষিত। দেখলেই তা বোঝা যায়।” তাঁর বক্তব্য, “প্রায় এক সপ্তাহ আগে কয়েকজন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। শুরুতে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন। তারপর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এক- একজন করে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এটাই চিন্তার।” পুরো পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে মহকুমাশাসক (সদর) অমিতাভ দত্তের সঙ্গে কথা বলেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। |