বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠছিল দীর্ঘদিন ধরেই। এ বার সব্জিতে রং মেশানোর অভিযোগ পৌঁছল খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। আর তাঁর নির্দেশে নড়েচড়ে বসে পুর-প্রশাসন জানতে পারল ক্ষতিকারক রং মেশানোই নয়, এমনকী সব্জিতে অ্যাসিড ব্যবহারের কথা স্বীকার করছেন খোদ বাজার সমিতির সদস্যরাই।
সোমবার মহাকরণে টাস্কফোর্সের বৈঠকে আলু, পটল, কাঁকরোল ও বেগুন-সহ একাধিক কাঁচা সব্জিতে রঙ মেশানোর প্রসঙ্গ ওঠে। ওই সব সব্জি সতেজ দেখানোর জন্য যে ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তা মানুষের শরীরের পক্ষে ভীষণ ক্ষতিকর বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান টাস্কফোর্সের সদস্যেরা। তার পরেই রং-মেশানো সব্জি বিক্রি বন্ধে কড়া ব্যবস্থার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। শহরের কয়েকটি বাজারে নিয়মিত অভিযান করতে পুর-প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি।
মমতার নির্দেশ পেয়ে মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভায় জরুরি বৈঠক ডাকেন পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ। সেখানে হাজির ছিলেন পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) তারক সিংহ, কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (এনফোর্সমেন্ট), টাস্ক ফোর্সের সদস্য-সহ কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি জেলার বেশ কয়েক জন সব্জি ব্যবসায়ী ও আড়তদার।
ওই বৈঠকেই শহরের বেশ কয়েকটি বাজার সমিতির সদস্য রং মেশানো সব্জি বিক্রি হওয়ার ঘটনা স্বীকারও করে নেন। এক ব্যবসায়ী জানান, শুধু রং নয়, কোনও কোনও সব্জি চকচকে করতে এক ধরনের অ্যাসিডও ব্যবহার করা হয়। কলকাতায় কয়েকটি বাজারেও রং মেশানোর কারবার চলে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন একাধিক ব্যবসায়ী। যদিও ওয়েস্টবেঙ্গল চাষি ভেন্ডার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি কমল দে বলেন, “মূলত গ্রামের হাটগুলোতেই সব্জিতে ওই রং মেশানো হয়। তার পরে তা কলকাতায় আসে।” তিনি জানান, রাজ্যে প্রায় ২৫০টির মতো হাট আছে। ওই কারবার রুখতে হলে গ্রামের হাটগুলোতে অভিযান চালাতে হবে।
পুরসভার বাজার দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, রং মেশানোর কারবার রুখতে শহরের বাজারগুলোতে এখন থেকে নিয়মিত অভিযান চালাবে কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা। এ ছাড়া রং মেশানো সব্জি না কেনার জন্য ক্রেতাদের সতর্ক করতে একটি প্রচারপত্র ছাপানো হবে।
শহরের প্রতিটি বাজারে ওই প্রচারপত্র বিলি করা হবে বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে।
|