চিকিৎসককে ঘেরাও জুনিয়র চিকিৎসকদেরই
প্তাহে তিন দিন তিনি হাসপাতালে হাজির থাকেন। তিন দিন থাকেন ছুটিতে। কবে থেকে এটা চলছে কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার করে বলতে নারাজ। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান উদয়শঙ্কর ঘোষের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে তাঁকে বহির্বিভাগে ঘেরাও করে রাখেন তারই সতীর্থ জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। বেলা ১২ টা থেকে এক ঘন্টা ঘেরাও করে তাঁকে প্রতিদিন হাজির থাকার দাবি জানান তাঁরা। চিকিৎসক তা মানতে রাজি না হলে অধ্যক্ষ এবং সুপারকে ডেকে আনা হয়। পরে সুপারের ঘরে ওই চিকিৎসক এবং ছাত্রদের নিয়ে আলোচনায় বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিলে জুনিয়র চিকিৎসকরা তাঁকে ছেড়ে দেন। তবে এ ধরনের ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। বিশেষ করে জুনিয়র চিকিৎসকদের অনেককেই ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা ডিউটি করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। এ দিন ঘেরা আন্দোলনে হাজির ছিলেন তৃণমূলের যুব সংগঠনের স্থানীয় কিছু নেতাও।
অভিযুক্ত চিকিৎসক কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন, শেষ শিক্ষাবর্ষের ৪ জন ছাত্রকে পাশ না করায় তারা ‘ইন্টার্নশিপ’ করার সুযোগ এ বছর পাবেন না। সে কারণেই তাদের বন্ধু স্থানীয় জুনিয়র চিকিৎসকরা এ সব অভিযোগ তুলে, ঘেরাও করে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের পাশ করাতে চাইছেন। যদিও সপ্তাহে ৩ দিন হাজির না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক উদয়বাবু। তাঁর যুক্তি, “চাকরির নিয়ম মেনে আমার ৩০০ দিনের ছুটি পাওনা রয়েছে। সেই মতো সপ্তাহে ৩ দিন করে ছুটি নিয়ে কাউকে দায়িত্ব দিয়েই যাই। টানা ছুটি নেই না তাতে সমস্যা হতে পারে বলেই।” জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, কলকাতায় বাড়ি থাকায় তিনি প্রতি সপ্তাহে সেখানে যান। চেম্বারে মোটা টাকা নিয়ে রোগী দেখেন কলকাতায় বসে। উদয়বাবু জানান, বাড়িতে তাঁর ছোট দুই সন্তান রয়েছে। সে কারণে যেতে হয়। পাশাপাশি তাঁর স্বীকারোক্তি, “কলকাতায় গেলে রোগীও দেখি।’’
সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, “বহু চিকিৎসক আছেন যাঁরা নিয়ম মেনে ছুটি পাবেন। তাঁরা ছুটি চাইলে বলার কিছু থাকে না। হাসপাতালের ৭০ শতাংশ চিকিৎসক এ ভাবে অনেক সময়ই ছুটিতে থাকছেন।” তাতে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও কিছুটা সমস্যা হয়। তবে যাঁরা থাকেন তাঁদের অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হয়। অধ্যক্ষ অনুপ রায় জানান, চিকিৎসকরা বরাবরই ছুটি নেন। আগে অনেক ক্ষেত্রে সেটা বোঝা যেত না। সম্প্রতি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা পদ্ধতি চালু হওয়ায় কারা কখন থাকছেন না তা বোঝা যাচ্ছে। তাতে ছুটি নিয়েই চিকিৎসকদের যেতে হচ্ছে। সেই মতো পাওয়া ছুটি থেকে তা কাটা হচ্ছে। তবে জুনিয়র চিকিৎসকদের ১৮ ঘন্টা বা ৩০ ঘন্টা মাত্রাতিরিক্ত সময় কাজ করার অভিযোগে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে জানান সুপার।
তুষার সরকার, প্রবীন কুমার, জাহাঙ্গীর আলমদের মতো মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, তাঁদের কাউকে ২৪ ঘন্টা, কাউকে ৫২ ঘন্টা ডিউটি করতে হচ্ছে। অথচ ওয়ার্ডে অধিকাংশ সময় সিনিয়র চিকিৎসক বা মেডিক্যাল অফিসাররা থাকেন না। জুনিয়র চিকিৎসকদেরই সব সামাল দিতে হয়। কেউ মারা গেলে মৃতের শংসাপত্র লিখতে কেবল সিনিয়র চিকিৎসক বা মেডিক্যাল অফিসারদের দেখা মেলে। তুষার সরকার বলেন, “এ সব নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে হাউসস্টাফ বা ইন্টার্ন হিসাবে কাজের সময় শেষ হলে তাদের শংসাপত্র দেবেন না, ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন না বলে ভয় দেখান হয়। ৪ জন ছাত্র পাশ করেনি বলে আমরা চাপ সৃষ্টি করছি এই অভিযোগ ঠিক নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.