ভাষ্যকারদের আতঙ্ক যাচ্ছে না যে মুখ খুললেই মরিসন হতে হবে
রকারি ভাবে বলছেন না কেউ। এখনও একটা অদ্ভুত শিরশিরানি ভেতরে কাজ করছে যে, সামান্য বিরুদ্ধ কথা মানেই পাতালঘর দেখিয়ে দেওয়া হবে। আর পাতালঘরে নির্বাসনে যেতে চান না কেউ।
বোর্ডের টিভি ভাষ্যকারদের নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহে প্রবলতম সমালোচনা হয়েছে যে, ক্রিকেট বিপন্ন দেখেও নিজ-নিজ স্বার্থবিচারে তাঁরা মুখ খোলেননি। মঙ্গলবার ওভালে ম্যাচ চলাকালীন এঁদেরই একজন বলছিলেন, “মিডিয়া এত কথা বলছে। মিডিয়ায় যারা কাজ করে, তারা নিজের নিজের কাগজ বা চ্যানেলের বিরুদ্ধে বলতে পারবে? আপনি বলতে পারবেন কালকে আনন্দবাজারের অমুক নীতিটা ভুল? আপনাদের মতো আমরাও তো কর্মচারী।”
জবাবে বলার চেষ্টা হল, আপনারা কর্মচারী যতক্ষণ ভাষ্য দেন ততক্ষণ। তার বাইরেও তো আপনাদের বক্তব্য দেওয়ার নিজস্ব একটা জায়গা রয়েছে। ক্রিকেটারটি বলেন, “কিছুই নেই। আমরা পরিষ্কার কর্মচারী। আর এখানে মালিক যিনি (পড়তে হবে এন শ্রীনিবাসন), তিনি এতটুকু বেচাল সহ্য করতে পারেন না।”
ভাষ্যকারদের মধ্যে আরও বেশি করে শিরশিরানি বওয়া শুরু হয় এ বারের আইপিএল থেকে। যখন ড্যানি মরিসনকে টুর্নামেন্টের মাঝপথেই বাদ দিয়ে স্রেফ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর একজন ভাষ্যকার বলছিলেন, “আপনারা ক’জন খবর রাখেন, মরিসনকে যে টুর্নামেন্টের মধ্যে ডেকে আইপিএল সিইও সুন্দর রামন তীব্র গালাগাল করেছেন? মরিসনের অপরাধ, তিনি ভারতের দল নির্বাচন নিয়ে কিছু আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছিলেন।”
ড্যানি মরিসন: আইপিএলে ভাষ্যকার-শহিদ।
এই মুহূর্তে ভারতের ম্যাচে যাঁরা ধারাভ্যষ্য দেন তাঁরা বোর্ডের প্যানেলে থাকুন বা না থাকুন, কিছু নিয়ম তাঁদের মেনে চলতে হয়। যেমন:
• উইকেট নিয়ে সমালোচনা চলবে না।
• ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ চলবে না।
• দল নির্বাচন নিয়ে কিছু বলা যাবে না।
• ভারতীয় বোর্ডের আন্তর্জাতিক নীতি (যেমন ডিআরএস) নিয়ে উল্টো কথা বলা যাবে না।
ভাষ্যকাদের ওপর এমন সেন্সরশিপ কস্মিনকালে ছিল না। কিন্তু শ্রীনিবাসনের আমলে হয়েছে। ভাষ্যকাররা মনে করছেন, কপিল দেব হন কি গাওস্কর। যে যত বড় নামই হন না কেন, তাঁকে কার্যত বল বাই বল ভাষ্যকার হয়ে যেতে হচ্ছে। উত্তেজিত বিশ্লেষণ করতে গেলেই লাল কার্ড দেখতে হতে পারে।
এক ভাষ্যকার বললেন, কেউ নিঃসন্দেহ হতে পারছে না যে শ্রীনিবাসন-যুগ সত্যিই শেষ হয়ে গেছে। আর তাই মুখ খুলতে চাইছে না। দুটো প্রেসের লোকের ইগো সন্তুষ্ট করার জন্য মুখ খুলে কী লাভ? মিস্টার শ্রীনিবাসনের রেকর্ডই হল, কখনও সামান্যতম সমালোচনাও উনি সহ্য করেননি। এক থেকে একশো অবধি কন্ট্রোল নিজের হাতে রেখেছেন।
ভাষ্যকাররা অনেকেই মনে করেন বোর্ডে যদি জমানা সত্যিই বদলে থাকে। যদি সত্যিই এটা ডালমিয়া আর জেটলির সংসার হয়। তা হলে তাঁদের হৃত বাকস্বাধীনতা ফেরত দেওয়া হোক। যাতে মনের কথা খুলে অতীতের মতো তাঁরা প্রকাশ করতে পারেন। যতক্ষণ এই ভীতি থাকছে, ‘মুখ খুললেই মরিসন হয়ে যাব বা টনি গ্রেগ’ (ভারতীয় বোর্ড তাঁকেও বয়কট করেছিল) ততক্ষণ বড়-বড় রথী-মহারথীরাও প্রতিবাদে যেতে রাজি নন।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.