|
|
|
|
বাহিনী নিয়ে জট কাটেনি |
কমিশনের ভরসা সেই রাজনৈতিক দল
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জেলায় সংবেদনশীল বুথের সংখ্যা কত? উত্তর নেই।
জেলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে জেলায় কত বাহিনী প্রয়োজন? উত্তর নেই।
থেকে গিয়েছে শুধু একগুচ্ছ প্রশ্ন। যে পশ্চিম মেদিনীপুরে বিরোধীরা বেশিরভাগ আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি, শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠছে, সেখানেও সংবেদনশীল বুথের সংখ্যা ঠিক হল না কেন? জেলায় যা পুলিশ বাহিনী রয়েছে তা দিয়ে কি আদৌ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব?
মনোনয়ন পর্ব মেটার পর মঙ্গলবার কালেক্টরেটের সভাকক্ষে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পর্যবেক্ষক দীপক ঘোষ। যেখানে জেলার ২৯টি ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, দুই জেলার দুই পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী ও ভারতী ঘোষ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জেলা পর্যবেক্ষক দীপক ঘোষের বক্তব্য, “আশা রাখতেই হবে আমরা ভাল ভাবে কাজ করব। সব রাজনৈতিক দলের কাছে সাহায্য চেয়েছি।” |
মেদিনীপুর কালেক্টরেটে চলছে সর্বদল বৈঠক।—নিজস্ব চিত্র। |
এটা ঠিক, বৈঠকে শাসকদল তৃণমূলের জেলা কার্যকররী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষ আশ্বাস দিয়েছেন, “আমরা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা করব।” কিন্তু তারই সঙ্গে বিরোধী দলের নেতারাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, “জেলাস্তরের বৈঠকে তৃণমূল নেতা যে আশ্বাস দিয়ে গেলেন তা ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত পৌঁছবে তো? মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকেই সন্ত্রাস চলছে। ফলে বেশিরভাগ প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। জোর করে অনেককেই মনোনয়ন প্রহ্যাতার করতে বাধ্য করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যে কয়েকজন বিরোধী দলের প্রার্থী রয়েছে সেখানেও কী অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব।” তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে তাঁরা দাবি জানান, বৈঠকের বার্তা যেন তাঁরা গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে দেন। তারই সঙ্গে পর্যবেক্ষকদের কাছে দাবি করেন, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে যেন সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এখানেই প্রশ্ন উঠেছে। জেলা কত বাহিনী পাবে তা কারও জানা নেই। তাহলে কিভাবে গ্রামেগঞ্জে থাকা প্রার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব। কিভাবেই বা ভোটারদের নিরাপদে ভোট দেওয়া নিশ্চিত করবে প্রশাসন। সংবেদনশীল বুথ অনুযায়ী, বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এই কারণেই প্রশাসন এখনও সংবেদনশীল বুথের তালিকা প্রকাশ করেনি। তালিকা প্রকাশ করে দিতে হলে সেই পরিমাণ নিরাপত্তারক্ষীর প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে যদি তা না পাওয়া যায়। প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, “বাহিনী পীওয়ার পরেই সংবেদনশীল বুথ ঠিক করা হবে। যেমন বাহিনী মিলবে তেমনি সংবেদনশীল বুথের সংখ্যা তৈরি করা হবে।” বৈঠকে সংবেদনশীল বুথ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে জেলাশাসক বলেন, “এটা সময় অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে থাকে। এ নিয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না।” কত বাহিনী চাওয়া হয়েছে? তা নিয়ে জেলা পর্যবেক্ষক বলেন, “এ নিয়ে কমিশন ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচা চলছে। বিষয়টি আদালতেও রয়েছে। এ নিয়ে মন্তব্য করব না।” দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে জেলা পর্যবেক্ষক বলেন, “আমরা সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সব দিক দিয়েই তৈরি রয়েছি।”
এখনও পর্যন্ত নির্বাচন সংক্রান্ত ১০৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে। সব থেকে বেশি অভিযোগ এসেছে পিংলা থেকে, ৩১টি। তার মধ্যে ৫৯টি অভিযোগের তদন্তও শেষ। এ পর্যন্ত ৪১টি ঘটনায় ৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিনের বৈঠকে জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে, সিপিএম নেতা অশোক ঘোষ, ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা সুকুমার ভুঁইয়া, সিপিআইয়ের তপন গঙ্গোপাধ্যায়, বিজেপি-র তুষার মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। |
|
|
|
|
|