বেলঘরিয়া উড়ালপুলে ফাটল, অনির্দিষ্টকাল বন্ধ যান চলাচল
ড়ালপুলের রাস্তায় বড়সড় একটি ফাটল। যে কোনও সময়ে ঘটে যেতে পারে বড় বিপদ। তাই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগকারী ওই উড়ালপুলে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য যান চলাচল বন্ধ করে দিল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অর্থাৎ যশোহর রোডে বিরাটি মোড়ের কাছে শরৎ কলোনি থেকে শুরু হয়েছে ওই উড়ালপুল। প্রায় ৪৫০ মিটার দীর্ঘ একমুখী উড়ালপুলটি খলিসানির কাছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে গিয়ে মিশেছে। বারাসতের দিক থেকে আসা সমস্ত গাড়িই ওই উড়ালপুলের উপর দিয়ে বেলঘরিয়ার দিকে যেতে পারে। সেতুটির নীচ দিয়ে আর একটি উড়ালপুল বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে শুরু হয়ে এয়ারপোর্ট তিন নম্বর গেটের কাছে গিয়ে মিশেছে। বক্স স্ট্রাকচারের ওই উড়ালপুল দু’টিকে প্রযুক্তির পরিভাষায় বলা হয় ‘গ্রেড ইন্টারচেঞ্জ’।
ফাটল পরীক্ষা করে দেখছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র
পুলিশ ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগকারী উড়ালপুলটি খলিসানি বাসস্টপে যেখানে এসে মিশেছে, সেখানে রয়েছে একটি বাঁক। বাঁকের খানিক আগেই দেখা দিয়েছে ওই ফাটল। ৮ মিটার চওড়া ওই অংশের একটি জায়গায় কংক্রিটের (ম্যাসটিক অ্যাসফল্ট) চাঙড় উঠে লোহার রডের কাঠামো বেরিয়ে গিয়েছে। প্রায় এক মিটার গোলাকৃতি ওই ফাটলের আশপাশেও চিড় দেখা দিয়েছে। উড়ালপুলটির অন্যান্য অংশের তুলনায় ওই অংশটি অনেকটাই বসে গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর ২টো নাগাদ ওই ফাটল দেখে স্থানীয়েরা পুলিশকে খবর দেন। এয়ারপোর্ট ট্রাফিক গার্ডের ইনস্পেক্টর যোগেন্দ্র রাই বলেন, “দুর্ঘটনার আশঙ্কায় যান চলাচল বন্ধ করে লাল কাপড় দিয়ে জায়গাটা ঘিরে দিই। আপাতত যশোহর রোড থেকে আসা গাড়িগুলিকে উড়ালপুলের নীচে কাটআউট দিয়ে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তায় পাঠানো হচ্ছে।” এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, উড়ালপুলটির দু’দিকই গার্ড রেল দিয়ে বন্ধ। ফাটল খতিয়ে দেখতে আসেন ন্যাশনাল হাইওয়ে অফ ইন্ডিয়ার প্রকল্প রূপায়ণ শাখার জেনারেল ম্যানেজার তথা প্রকল্প অধিকর্তা এস কে কুশওয়াহা-সহ অন্যান্য কর্তারা। ছিলেন কয়েক জন বিশেষজ্ঞ। পুরো উড়ালপুলটির অবস্থা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। কারণ, অন্যান্য অংশেও কম-বেশি চিড় ধরেছে।
উড়ালপুলের অবস্থা খতিয়ে দেখে প্রাথমিক ভাবে বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, বেশ কিছু কারণে এই ফাটল হতে পারে। যেমন, কংক্রিটের অবস্থা ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং তার উপর দিয়ে ভারী গাড়ি যাতায়াত করায় ফাটল হতে পারে। আবার জল জমে ওই অংশ ক্রমশ বসে গেলে তাতে চিড় ধরে কংক্রিটের ভিতর জল ঢুকতে পারে। বক্স স্ট্রাকচারের নীচের যে অংশ ফাঁকা থাকার কথা কোনও কারণে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাপমাত্রার তারতম্যের কারণেও কংক্রিটে ফাটল হতে পারে। তবে নকশাগত ভুল বা ইমারতি দ্রব্যের খারাপ মানের জন্য উড়ালপুলের ওই অংশ বসে গিয়ে ফাটল ধরার কথাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞেরা।
তবে ওই একটি ফাটলের কারণ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি পুরো উড়ালপুলের অবস্থাই পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন বলে মত বিশেষজ্ঞদের। পূর্ত দফতরের এক প্রাক্তন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার তথা হাইওয়ে এক্সপার্ট শ্যামাপ্রসাদ দত্ত বলেন, “উড়ালপুলের আর কোনও অংশে ফাটল ছড়িয়েছে কি না কিংবা কংক্রিট দুর্বল হয়েছে কি না তাও পরীক্ষা করে দেখতে হবে। না হলে পরে সমস্যা হতে পারে।” কুশওয়াহা বলেন, “স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদের পরামর্শ নিয়েই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ততদিন উড়ালপুল বন্ধ থাকবে। তবে তাড়াতাড়ি সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.