পুলিশকে তিনি একেবারে কাছ থেকে গুলি চালাতে দেখেছিলেন বলে ২১ জুলাই কমিশনে সাক্ষ্য দিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
মন্ত্রী মঙ্গলবার কমিশনের চেয়ারম্যানকে বলেন, “মেয়ো রোডে গাঁধী-মূর্তির অদূরে ম্যাটাডর ভ্যানের তলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন যুব কংগ্রেসের এক অসহায় কর্মী। তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বার করে আনল পুলিশ। তার পরে তাঁর দিকে রাইফেল উঁচিয়ে একেবারে কাছ থেকে গুলি চালাল। এই দৃশ্য নিজের চোখে দেখেছি।”
কমিশনের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, মেয়ো রোডে জমায়েত হওয়া যুব কংগ্রেসের কর্মীরা পুলিশকে গুলি চালাতে প্ররোচনা দিয়েছিলেন কি না?
ফিরহাদ বলেন, “১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই আমি মেয়ো রোডে ছিলাম। সেখানে মূলত দক্ষিণ কলকাতার যুব কংগ্রেসের কর্মীরা ছিলেন। তাঁদের অনেকেই আমার মুখচেনা। তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত থাকার কোনও অভিযোগ পুলিশের খাতায় ছিল না। আমি কাউকেই পুলিশকে প্ররোচনা দিতে দেখিনি।”
পুরমন্ত্রী জানান, পুলিশ ধর্মতলা-চত্বরে লাঠি চালাচ্ছে খবর পেয়ে মেয়ো রোডে জড়ো হওয়া যুব কংগ্রেস কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ অফিসারদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন কর্মীদের একাংশ। তিনি তাঁদের ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। পুলিশ অফিসারদের একাংশও ওই কর্মীদের উত্তেজনা প্রশমিত করার চেষ্টা করছিলেন।
কমিশনের চেয়ারম্যান এর পরে মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, লাঠি চালানো ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানোর পরে পুলিশকে তিনি গুলি চালাতে দেখেছিলেন কি না। ফিরহাদ চেয়ারম্যানকে জানান, কার্জন পার্কের দিক থেকে প্রচুর পুলিশকর্মী রাইফেল হাতে ছুটে আসছিলেন। সেই সময় তিনি রানি (ফিরহাদ) রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের পাশে স্পোর্টস জার্নালিস্টস ক্লাবে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি দেখেন, গাঁধী-মূর্তির অদূরে একটি ম্যাটাডর ভ্যানের তলায় আশ্রয় নেওয়া যুব কংগ্রেসের এক কর্মীকে পুলিশ টেনেহিঁচড়ে বার করে এনে রাইফেল উঁচিয়ে গুলি করে দিল।
শ্যামনগরের বিবেকানন্দ গড়ের বাসিন্দা লক্ষ্মণ পালও এ দিন কমিশনে সাক্ষ্য দেন। তিনি জানান, সে-দিন পুলিশ নির্মম ভাবে লাঠি চালিয়েছিল। লাঠির আঘাতে তিনিও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তিনি চান, বিনা প্ররোচনায় লাঠি, গুলি চালানোর বিচার হোক। |