ধুন্ধুমার ব্যাটিং দিয়েই ইনিংস শুরু বর্ষার
রসুমের শুরুতেই দক্ষিণবঙ্গে অতি-সক্রিয় বর্ষা। দফায় দফায় বৃষ্টি তো রয়েইছে, এক নাগাড়ে বাজের শব্দেও কান ঝালাপালা সাধারণ মানুষের। গত তিন বছরে জুন মাসের গোড়াতেই বর্ষার এমন রূপ চোখে পড়েনি বলে আবহবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন।
আবহবিদদের মতে, গত তিন বছরে দক্ষিণবঙ্গে জুন মাসে বর্ষা ঢুকলেও তার সেই ছন্দ দেখা যায়নি। বর্ষার সক্রিয় হতে হতে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ গড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ বছর সেই চরিত্রে একটা আপাত বদল দেখা যাচ্ছে। শনিবার দক্ষিণবঙ্গে ঢোকার পর থেকেই কিছুটা অতি-সক্রিয় হয়ে উঠেছে বর্ষা। কেন?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীরা জানান, দক্ষিণবঙ্গে মরসুমের শুরু থেকেই বর্ষার এই অতি-সক্রিয়তার পিছনে দায়ী উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত একটি শক্তিশালী নিম্নচাপ অক্ষরেখা। সেটি মৌসুমী বায়ুর সঙ্গে আসা জলীয় বাষ্পকে নিজের দিকে টেনে নিচ্ছে। এবং বৃষ্টি নামাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গে। এই নিম্নচাপ অক্ষরেখার প্রভাব পড়ছে উত্তরবঙ্গেও। আবহাওয়া দফতরের এক কর্তা বলছেন, “নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি সব জলীয় বাষ্প টেনে নেওয়ার ফলে উত্তরবঙ্গে জলীয় বাষ্প যথেষ্ট পরিমাণে পৌঁছতে পারছে না। তার ফলেই গত দু’দিন ধরে ওই অঞ্চলের জেলাগুলিতে তুলনায় বৃষ্টি কম হচ্ছে।”
মেঘের পরে মেঘ। মাঝদুপুরের গঙ্গা। ছবি: রণজিৎ নন্দী
হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, অন্যান্য বছর মরসুমের শুরু থেকেই দক্ষিণবঙ্গে শক্তিশালী নিম্নচাপ অক্ষরেখা দেখা যায় না। ফলে বর্ষার সক্রিয়তাও কম থাকে। ঘাটতি থাকে বৃষ্টিতেও। এ বার এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে জুন মাসে বৃষ্টির ঘাটতি থাকবে না বলেই আবহবিদদের আশা। যদিও তাঁদের এই আশায় জল ঢেলে দিতে পরিস্থিতির আকস্মিক পরিবর্তন হতে পারে। কারণ, দক্ষিণবঙ্গের উপরে বিস্তৃত এই নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি দুর্বল হয়ে পড়লে বর্ষা তার সক্রিয়তা হারাতে পারে বলেও আবহবিদদের একাংশ মনে করছেন।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপ অক্ষরেখার সৌজন্যে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সোমবার বর্ধমান, বীরভূম-সহ রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতেও বর্ষা ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী কয়েক দিন সেখানে ভাল বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহবিদেরা মনে করছেন। সোমবার কলকাতা-সহ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলিতে ভাল বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও। সকাল থেকেই দফায় দফায় বৃষ্টি নামায় অফিসের পথে নিত্যযাত্রীরা সমস্যায় পড়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে ব্যাহত হয়েছে ট্রেন চলাচলও। আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলেছে, রবিবার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টি হয় ২৫.৩ মিলিমিটার।
আবহবিদেরা বলছেন, আকাশ মেঘলা থাকায় সোমবার দিনের তাপমাত্রা ছিল তুলনায় কম। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতা টের পাওয়া গিয়েছে। এ দিন উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানান, দক্ষিণবঙ্গের উপরে ঘন মেঘের আস্তরণ রয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্পও। যার ফলে আগামী কয়েক দিন ফের বৃষ্টি হতে পারে বলে তাঁদের অনুমান। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন বলেন, “আগামী কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় দফায় দফায় বৃষ্টি হবে। তবে তা সর্বত্র এক সময়ে হবে না।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.