বর্ষা ঢুকতেই বদলে গেল ছুটির দিনের মেজাজ! সকাল থেকে আকাশ মেঘলা, বেলা বাড়তেই শুরু হল বৃষ্টি। কখনও ঝিরঝিরে, কখনও বা মুষলধারে। সঙ্গে ছিল বাজ-ও। তবে গরমের হাত থেকে কিন্তু পুরোদমে স্বস্তি মেলেনি। আবহবিদেরা বলছেন, বর্ষার শুরুতেই গরম একেবারে উধাও হয় না। মেলে না অনবরত বৃষ্টিও। তবে দিন কয়েক পর থেকেই বৃষ্টির জোর বাড়বে বলে তাঁরা মনে করছেন।
আলিপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, শনিবারই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাংশে বর্ষা ঢুকে পড়েছে। তার জেরে রবিবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলিতেও। আবহবিদেরা জানান, রবিবার আর একটি মৌসুমি বায়ুর শাখা দক্ষিণবঙ্গে ঢুকে শনিবারের শাখাটির সঙ্গে মিশেছে। ফলে দক্ষিণবঙ্গে আগামী কয়েক দিনে বর্ষা জোরালো হবে বলেই তাঁদের ধারণা।
শনিবার রাত থেকেই আকাশে মেঘ ঢোকা শুরু হয়। আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, রাজস্থান থেকে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। তার জেরে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে ঢুকছিল। এ বার বর্ষা হাজির হওয়ায় বৃষ্টির সক্রিয়তা বেড়েছে। |
তখনও জমাট মেঘে আঁধার শহর। রবিবার। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
রবিবার সকাল থেকেই আকাশের মুখ ছিল ভার। বেলা গড়াতেই শুরু হয় বৃষ্টি। প্রথমে দক্ষিণ কলকাতা ও লাগোয়া শহরতলিতে বৃষ্টি নামলেও পরে তা ছড়িয়ে পড়ে উত্তর ও মধ্য কলকাতাতেও। উত্তর শহরতলি ও উত্তর ২৪ পরগনার একাংশেও মুষলধারে বৃষ্টি নেমেছে। এ দিন বর্ষার মেজাজ আরও জমিয়ে দিয়েছে ঘন ঘন বাজ। ভর দুপুরেই বাজের দাপটে কেঁপে উঠেছেন অনেকে। আবহবিদেরা বলছেন, “বেশ কয়েক বছর পর জুনের গোড়ায় এমন বাজ-বৃষ্টি পেল মহানগর।” বৃষ্টিতে শহরের কয়েকটি রাস্তায় অল্পবিস্তর জল জমলেও ছুটির দিনে গাড়ি কম থাকায় তেমন অসুবিধা হয়নি।
তা হলে এ বার কি এমনটাই চলবে? আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, আগামী কিছু দিন কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও। এক আবহবিদ এ দিন বলেন, “দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে তা গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে হচ্ছে।” আকাশ মেঘলা থাকলে দিনের তাপমাত্রা কিছু কম থাকবে। রাতের দিকে বৃষ্টির দাপট বাড়লেও তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে বলে আবহবিদেরা জানান।
তবে এমন পরিস্থিতি যে স্থায়ী হবে, তেমনটা ভাবা ঠিক হবে না বলে আবহবিজ্ঞানীরা জানান। তাঁরা বলছেন, বর্ষার বৃষ্টি দফায় দফায় হয়। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির পরে তা কিছু দিনের জন্য থমকে যায়। তখনই আবহাওয়ায় অস্বস্তি ফিরে আসে। বাড়ে ভ্যাপসা গরমও। পরে নিম্নচাপ অক্ষরেখা বা বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে বর্ষার দাপট বাড়ে। |