তাণ্ডব মহিষবাথানেও
তির-আগুন-বোমায় জেলায় জেলায় সন্ত্রাস
ঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রথম দফার মনোনয়ন জমা ইতিমধ্যে শেষ। কিন্তু হানাহানি শেষ হচ্ছে না।
দু’দিন আগেই রানিগঞ্জে এক যুবককে খুন করে পরিত্যক্ত খনিতে ফেলে দেওয়া হয়। বুধবার মনোনয়ন জমা শেষ হওয়া মাত্রই সেই বর্ধমানেরই বুদবুদে ফের দফায়-দফায় অশান্তি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হন ন’জন। তিরে জখম এক তৃণমূল কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মধ্যে আছেন এক মহিলা ও এক বালিকা। বীরভূমের আমোদপুরে বোমা পড়ে। রাজারহাট, খেজুরি, জামুড়িয়া, বসিরহাটে, হরিরামপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। রাজারহাটে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ দিনই রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের কাছে গিয়ে সন্ত্রাসের লিখিত অভিযোগ জানায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বাম প্রতিনিধিদল। রাজভবন থেকে বেরিয়ে সূর্যবাবু বলেন, “আদালতের নির্দেশ, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ কোনও কিছুর পরোয়া করছে না রাজ্য সরকার! পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।” তাঁরা কি এই ‘সন্ত্রাসে’র জবাবে গণপ্রতিরোধের ডাক দিচ্ছেন? সূর্যবাবুর বক্তব্য, “আমরা শান্তিপূর্ণ, অবাধ নির্বাচনের পক্ষে। কিন্তু গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছি মানে তো এই নয় যে, এত সাঙ্ঘাতিক আক্রমণের মুখেও চুপ করে থাকব!”
হাসপাতালে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে আহত কাদের মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র
বুধবার রাতেই কলকাতা লাগোয়া রাজারহাট নিউটাউনের মহিষবাথান ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তারুলিয়ায় সিপিএম উপপ্রধান তাপস মাঝি ও বিনতা পাত্র নামে এক প্রার্থীর বাড়িতে হামলা হয়। ভিআইপি রোড ও নিউটাউনের মাঝে তথ্যপ্রযুক্তি অফিসগুলি ঢিল ছোড়া দূরত্বে ওই এলাকায় তৃণমূল কর্মীরা সিপিএমের আর এক প্রার্থী শুভম দাস ও তাঁর পড়শির বাড়িতেও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। পুলিশ তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত দু’জনকে গ্রেফতার করে। তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রথম পর্বের মনোনয়ন জমা শেষ হওয়ার পরেই, বুধবার সন্ধ্যায় বুদবুদে দেবশালা পঞ্চায়েতের বিলাসপুর গ্রামে সিপিএম-তৃণমূল হাতাহাতি হয়। সকালে তৃণমূল ফের ‘শান্তিমিছিল’ ফের ওই গ্রামে ঢোকে। সিপিএমের অভিযোগ, ওই সশস্ত্র মিছিল থেকেই তাঁদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। সিপিএমও তির-ধনুক নিয়ে পাল্টা তাড়া করে। তুমুল মারপিট বেধে যায়। জখম হন অনেকে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বর্ধমানেরই জামুড়িয়ায় বুধবার রাতে এক সিপিএম পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে ঢুকে বাড়ি ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গলসির গোহগ্রামে আবার পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল প্রার্থী ও তাঁর আত্মীয়দের মারধরে অভিযুক্ত সিপিএম। যমুনা বাগ নামে ওই প্রার্থী-সহ চার জন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
বীরভূমে এখনও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া চলছে। এ দিন ১০-১২টি বাসে চেপে সিপিএম কর্মীরা সাঁইথিয়া ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন। আমোদপুরের ঈশ্বরপুর, টেকড্ডা মোড়, কুচুইঘাটা মোড়ে তৃণমূল অবরোধ করেছিল। বাসগুলি আসতেই দু’পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। তৃণমূলের লোকেদের তাড়া করে বাস নিয়ে আমোদপুরে ঢোকে সিপিএম। অভিযোগ, পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই বাসে বোমা ছোড়ে তৃণমূল। সিপিএম পাল্টা বোমা ছুড়তে-ছুড়তে ব্লক অফিসে পৌঁছয়। রাতে ওই এলাকারই বাতাসপুরে কংগ্রেস ও সিপিএম একযোগে তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ।
এ দিন দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে কংগ্রেসের এক আদিবাসী মহিলা প্রার্থী-সহ কয়েক জনকে মারার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তবে বুধবার কোচবিহারে মনোনয়ন জমা নিয়ে গোলমালের ঘটনায় ১৯ জন তৃণমূল সমর্থককে পুলিশ ধরেছে। তাঁদের মধ্যে ১৮ জন জামিনে ছাড়া পান। তিন জন সিপিএম সমর্থককেও গ্রেফতারের পর রাতেই জামিনে ছাড়া হয়। সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তিতকুমার এলাকা। আহত হন উভয় পক্ষের ১৩ জন। বুধবার রাতেই উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁয় চাপালি গ্রামে তৃণমূলের মিছিলে হামলার অভিযোগ
উঠেছিল সিপিএমের বিরুদ্ধে। সকালে চাপালি বাজারে দুই সিপিএম কর্মীকে পাল্টা মারের অভিযোগ ওঠে। বুধবার রাতেই পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি-২ ব্লকে জেলা পরিষদে সিপিএমের মহিলা প্রার্থী মিঠু মণ্ডলের বাবাকে মারধর ও মা-ভাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, বাবা-ছেলেকে মারধর করা হলেও কাউকে অপহরণ করা হয়নি।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.