পঞ্চায়েতে বাহিনী বৃত্তান্ত
হতাশ প্রদীপরা দ্বারস্থ হাইকম্যান্ডের
দাবি করেছিল কংগ্রেস। প্রত্যাখ্যান করেছে তাদেরই পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে মুখ পুড়েছে কংগ্রেসের।
পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অপারগতার কথা জানিয়ে দেওয়ার পর বিব্রত এবং হতাশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। কারণ, তাঁরাই গোড়া থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট সুষ্ঠু এবং অবাধ হবে না। বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে এবং ভোটাররা ভোট দিতে গিয়ে রাজ্যের শাসক দলের আক্রমণের শিকার হবেন। বাস্তবেও মনোনয়ন পর্ব শুরু হতেই অশান্তি শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস-সহ সমস্ত বিরোধী দলই তৃণমূলের বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও কেন্দ্র রাজ্যকে বাহিনী দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। যার ফলে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা অস্বস্তিতে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য আজই দিল্লি এসে দলের কর্মীদের ক্ষোভ এবং হতাশার কথা হাইকম্যান্ডকে জানান। সূত্রের খবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট কংগ্রেস হাইকম্যান্ডও। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর ব্যাপারে তাঁরা আজ-কালের মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার গোড়া থেকেই দাবি করে এসেছে, পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন নেই। শেষ পর্যন্ত ভোটে নিরাপত্তা বাহিনী কম পড়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে হয়। এই নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ শুনতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে পারবে না বলে জানানোয় পাল্টা কটাক্ষের রাস্তায় হাঁটছে রাজ্যও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ডিরেক্টর (পার্সোনেল) দীনেশ মাথুরের পাঠানো চিঠি সংবাদমাধ্যমকে দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালই বলেছেন, “আরে এত দিন পাগল করে দিচ্ছিল ফোর্স চাইছে না, ফোর্স চাইছে না বলে! এই তো চেয়েছিলাম। দিতে পারল দিল্লি?”
মুখ্যমন্ত্রীর এই বিদ্রূপে কংগ্রেসের অস্বস্তি বেড়েছে। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদের সঙ্গে আজ বিকেলে এ ব্যাপারে দীর্ঘ বৈঠক করেন প্রদীপবাবু। শাকিলকে প্রদীপবাবু বলেন, হাওড়ার উপনির্বাচনে যে পরিমাণ আধা সামরিক বাহিনী দেওয়ার কথা ছিল, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দেয়নি। ফলে বালি, পাঁচলা-সহ বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল দাপিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া না গেলে কত কংগ্রেস কর্মী যে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হবেন, তার ইয়ত্তা থাকবে না। শাকিলের সঙ্গে আজ কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সিরও বৈঠক হয়।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই প্রত্যাখ্যান-পত্রের কথা শুনে একটু অবাক হন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাকিল। প্রদীপবাবু ও দীপাদেবীকে শাকিল জানান, তিনি আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর ব্যাপারে শিন্দের সঙ্গে কথা বলেন। শিন্দে তখন জানিয়েছিলেন, আধা সামরিক বাহিনী পাঠানোয় কোনও ত্রুটি হবে না। এখন তাঁর মন্ত্রকই বাহিনীর আর্জি ফেরানোয় শাকিলও কিছুটা বিব্রত। তিনি প্রদীপবাবুকে শিন্দের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি, এ ব্যাপারে একটি সবিস্তার নোট সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধীর কাছে পাঠানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামিকালই প্রদীপবাবু তা তাঁদের পাঠাবেন।
বাহিনী প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের হতাশা এবং অস্বস্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রদীপবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া পঞ্চায়েত ভোট হলে তা যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে না, তা আগেও বলেছি, এখনও বলছি। আমরা এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” দীপাদেবী অবশ্য এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের উপরেই দায় চাপিয়েছেন। তাঁর কথায়, “কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়ার ব্যাপারে শুরু থেকে টালবাহানা করেছে রাজ্য সরকারই। তারা ইচ্ছা করে শেষ মুহূর্তে বাহিনী চেয়েছে। এত কম সময়ে তা পাঠানো মুশকিল। বিষয়টি রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং আদালত পর্যালোচনা করছে। ফলে তাদের উপরেও বিষয়টা কিছুটা নির্ভর করছে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.