দুই জনেরই বড় হয়ে শিক্ষকতা করার ইচ্ছা। পারিবারিক অনটনে শিক্ষাকতা তো দূরের তথা ভবিষ্যতে আর পড়তে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তাদের একজন দেওয়ানগঞ্জ হাইস্কুলের পূরবী রায়। উচ্চ মাধ্যমিকে পূরবী ৪৩২ নম্বর পেয়েছে। বাংলা ৮৪, ইংরেজি ৭৫, ভূগোল ৯৭, দর্শন ৯০ এবং সংস্কৃতে ৮৬। ইংরেজি নিয়ে পড়ে শিক্ষাকতা করতে চায় পূরবী।
বাবা সারদা প্রসাদ রায়, দৃষ্টিহীন। মা চিত্রাদেবী অঙ্গনওয়ারি কর্মী। তার আয়ে সংসার চলে। দেওয়ানগঞ্জ হাই স্কুল প্রধানশিক্ষক কমলেন্দু প্রামানিক বলেন, “পূরবীকে যা সম্ভব সাহায্য করেছি। ভবিষ্যতেও চেষ্টা করব।” পূরবীর প্রিয় লেখক শেক্সপিয়র। তাঁর কথায়, “ইংরেজি প্রিয় বিষয়। আরও পড়তে চাই। পারব কিনা জানি না।” একই অবস্থা খারিজা বেরুবাড়ি ২ পঞ্চায়েতের বোনাপাড়া হাইস্কুলের জনক রায়ের। তারও শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছে। জনক পেয়েছে স্কুলের সর্বোচ্চ ৩৯৮। বাংলা ৭২, ইংরেজি ৭০, সংস্কৃত ৮০, দর্শন ৮৬ এবং ভূগোলে ৯০ নম্বর পেয়েছে। পরীক্ষার আগে জলবসন্ত হওয়ায় হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দেয় জনক। বাবা ভূপেনবাবু কৃষি শ্রমিক। পড়াশুনোর ফাঁকে দুই ভাইকে নিয়ে অনেক সময় জনককে বাবার সঙ্গে কাজ করতে হয়। মা গীতাদেবী দিনমজুর। জলপাইগুড়ির আনন্দ চন্দ্র কলেজ থেকে ভূগোল নিয়ে পড়ার ইচ্ছা জনকের। ভূগোলের শিক্ষক হতে চায় জনক। তার কথায়, “শুধু পড়া নয়, বোনাপাড়া থেকে যাতায়াতের খরচ অনেক। আর পড়ব কী ভাবে কে জানে!” বোনাপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কিরণ চন্দ্র রায় বলেন, “জনকের পরিবার খুবই দুঃস্থ। কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসলে এই কৃতীর স্বপ্ন পূরণ হবে।” |