বাবার অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্না করার কাজ পেলে টাকা আসে। নয়ত রোজগার বন্ধ। জমিও নেই, যে চাষ করবেন। এমনই পরিবারের মেয়ে উমা গোপমণ্ডলের উচ্চ মাধ্যমিকের সাফল্য নজর কেড়েছে মানবাজারে।
আর্থিক অনটনের জন্য সমস্ত বিষয়ের বই-ও সে কিনে উঠতে পারেনি। স্কুলের শিক্ষকদের পড়ানো আর বাড়িতে অনুশীলন, এর ভরসাতেই মানবাজারের বিসরি পিডিজিএম হাইস্কুলের ছাত্রী উমা গোপমণ্ডল এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে ৭৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৩৮৮। মাধ্যমিকে উমা ৬৫৪ পেয়েছিল। এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে বাংলায় ৭১, ইংরেজিতে ৭৬, রসায়নে ৭৮, অঙ্কে ৮৩, ভৌতবিজ্ঞানে ৮০ পেয়েছে এই মেধাবী মেয়েটি। উমার বাবা লালবাহাদুর গোপমণ্ডলের কথায়, “নিজের বাড়ি নেই। মানবাজার থানার পেদ্দা গ্রামে ভাইয়ের বাড়িতে দুই ছেলেমেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে থাকি।” বিএসসি (নার্সিং) পড়ার জন্য ফর্ম ফিলাপ করেছে উমা। সেই পড়া কোনও ভাবে না হলে অঙ্কে স্নাতক হয়ে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। |
|
|
উমা গোপমণ্ডল।
|
শম্পা লাহা। |
|
উমার মতোই সংসারে অভাবের সঙ্গে যুঝে এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে ৭৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছে শম্পা লাহা। মেয়ে যেখানে পড়ে, সেই মানবাজার গার্লস স্কুলেই মা রাঁধুনির কাজ করেন। মাস গেলে হাতে পান সাকুল্যে হাজার দুয়েক টাকা। দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে টানাটানির সংসার। শম্পার প্রাপ্ত নম্বর ৩৭১। বাংলায় ৮০, ইংরেজিতে ৭১, ভূগোলে ৮৩, ইতিহাসে ৭৭ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৬০ পেয়েছে শম্পা। তার মা মিঠু লাহা বলেন, “স্বামীর স্থায়ী রোজগার নেই। তবে, এর পরে আর পড়াতে পারব কি না জানি না।” আর্থিক অনটন থাকায় উচ্চশিক্ষার পরিবর্তে শম্পার ডিএড প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করার ইচ্ছে রয়েছে। |