|
|
|
|
দুই পক্ষের বিবাদে পুজোর আগে স্বন্ত্রস্ত গ্রাম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সুতাহাটা |
সরু মোরাম রাস্তা ধরে গ্রামে ঢুকতেই একটা থমথমে পরিবেশ। তির্যক চাউনি। অপরিচিত মুখ দেখলেই পরিচয়পত্র পরীক্ষা গ্রামের মাতব্বরদের। পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা ব্লকের গোবিন্দপুর উত্তরপল্লি গ্রামের চারিদিকে যেন অস্বস্তির ছায়া। আজ, বৃহস্পতিবার গ্রামের শীতলা ও কালী মন্দিরে পুজো। কিন্তু আনন্দ মুখরিত পরিবেশ নয়, দুই গোষ্ঠীর বিবাদে পুজোর এক দিন আগেও সন্ত্রস্ত সকলে।
বছর দশেক ধরে এমনটা চলছে। অথচ এই পুজো ঘিরে আগে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি ছিল না গ্রামে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজনও আসত সেই পুজো দেখতে। তিন-চার দিন হাঁড়ি চড়ত না গ্রামে। দশ বছর আগে পল্লি পরিচালনা কমিটি বদলের সময় হিসেব নিয়ে গণ্ডগোলকে কেন্দ্র করে ভাগ হয়ে যায় কমিটি। |
|
সেই মন্দির। —নিজস্ব চিত্র। |
অভিযোগ, গ্রামের ২০টি পরিবারকে মন্দিরে পুজো দেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন মোড়ল-মাতব্বররা। একঘরে পরিবারগুলি তিন বছর আগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। আদালতের নির্দেশেই গত দু’বছরে পুলিশ, র্যাফের প্রহরায় পুজো দিয়েছেন ওই পরিবারের সদস্যরা। এ বছরও পুজো আসতেই গ্রামের কিছু মাতব্বর এই পরিবারগুলিকে মন্দিরে না যাওয়ার জন্য শাসাচ্ছে, এমনকী গেলে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। পরিবারগুলির তরফে শঙ্করপ্রসাদ নায়েক, জওহরলাল প্রধান, দিপালী প্রধানদের কথায়, “আমরা যে কী ভাবে আছি বলে বোঝাতে পারব না। সাত বছর ধরে পুজো দিতে দিচ্ছিল না। পুলিশের উপস্থিতিতে গত বছর পুজো দিতে যাই। যার জেরে সারা বছর ধরে সালিশি ডেকে জুলুম চলছে।” যাঁদের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, সেই রাসবিহারী প্রধান, বাসুদেব জানারা অবশ্য বলেন, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। অভিযোগকারী পরিবারগুলি গ্রামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতেই এ সব করছে। কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার পর অকারণে আদালত দেখাচ্ছে ওরা। প্রতি বছরই ওরা পুজো দেয়।”
গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বলরাম মাইতি অবশ্য সমস্যা যে আছে, সেটা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “দু’পক্ষই অনড়। আমরা কিছু শর্ত দিয়ে মীমাংসা করতে চাইলেও সমাধান হয়নি। তবে সাত বছর ধরে যে পরিস্থিতি ছিল, এখন তা নেই গত দু’বছর পুলিশের উপস্থিতিতে ২০টি পরিবার পুজো দিয়েছে।”
হলদিয়ার মহকুমাশাসক শঙ্কর নস্কর বলেন, “আদালতের নির্দেশ মেনেই পুলিশ থাকবে। প্রত্যেকে যাতে পুজো দিতে পারে তা দেখা হবে। পুরনো সমস্যা মেটানোরও চেষ্টা করা হবে।” |
|
|
|
|
|