প্রায় তিনশো আসনে বিরোধীশূন্য তৃণমূল
শুরুতেই হার। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম, খেজুরি, কাঁথি, ভগবানপুর, পটাশপুর-সহ বেশ কিছু এলাকায় প্রার্থীই দিতে পারল না বামেরা। বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা পার হওয়ার পর দেখা যায় জেলার মোট ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩৩৬২টি আসনের মধ্যে ২৬৬টিতে শাসকদল তৃণমূল ছাড়া বিরোধীদের মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। একই ভাবে জেলার ২৫টি পঞ্চায়েত সমিতির ৬৬১টি আসনের মধ্যে ৪১টা আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছে। অবশ্য জেলা পরিষদের ৬০টি আসনের প্রতিটিতে বিভিন্ন দলের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এমনকী জেলা পরিষদের একটি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে দু’জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। প্রার্থী দিতে না পারার জন্য বামেরা তৃণমূলের সন্ত্রাসকে দায়ী করলেও এ-ও সত্যি যে কিছু এলাকায় তাদের হয়ে দাঁড়ানোর লোকই পাওয়া যায়নি।
গত ২৯ মে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রথম দিন থেকেই জেলার পাঁশকুড়া, নন্দীগ্রাম, পটাশপুর-সহ বিভিন্ন ব্লকে বিরোধী দলের প্রার্থীদের বাধা দেওয়া ও মারধরের অভিযোগ উঠছিল শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। খেজুরিতে তো প্রথম দিকে বামেদের কোনও মনোনয়নই জমা পড়েনি। পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে জেলার বেশ কিছু এলাকায় মহকুমাশাসকের অফিসেও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর ফলে গত কয়েকদিনে নন্দীগ্রাম-১, ২ , খেজুরি-১, ২ ব্লকের বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বিরোধীদলের পাশাপাশি বহু নির্দল প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারপরেও দেখা যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৬৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৪১টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে শাসকদল তৃণমূল ছাড়া বিরোধীদের মনোনয়ন পত্র জমা পড়েনি।
জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খেজুরি ১ ব্লকের ৫৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৮টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিশ্চিত করেছে। খেজুরি ২ ব্লকে ৯০টা পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৭১টি ও পঞ্চায়েত সমিতির ১৫টি আসনের মধ্যে ৯টিতে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলছে। অর্থাৎ খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতি ইতিমধ্যে তৃণমূলের দখলে চলে এসেছে। ভগবানপুর ২ ব্লকে ১৪২টা পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৭৮টিতে বিরোধীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি। ২৭টা পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে ১৩টায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে তৃণমূলঅর্থাৎ আর একটি আসন পেলেই ভগবানপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতিও তাদের দখলে চলে আসবে। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ১৩৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ১৯টিতে ও ৪টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে শুধুমাত্র তৃণমূলের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। নন্দীগ্রাম ২ ব্লকে পরিস্থিতিটা একটু ভাল। ৯১টা পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৮টিতে তৃণমূল একা মনোনয়নপত্র দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে ২০টা আসনের মধ্যে একটিতে বিরোধীশূন্য তারা। পটাশপুর ১ ব্লকে ২২টা পঞ্চায়েত ও ৪টে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থী দাঁড়ায়নি। পটাশপুর ২ ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫টা আসনে বিরোধীশূন্য তৃণমূল।
প্রার্থী দিতে না পারার জন্য শাসকদলকেই দায়ী করছে বামেরা। সিপিএমের জেলাসম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, “নন্দীগ্রাম, খেজুরি, কাঁথি, মুগবেড়িয়া, পটাশপুর ও পাঁশকুড়ায় বিরোধীরা যাতে প্রার্থী দিতে না পারে সেজন্য আগে থেকেই হুমকি দিয়েছিল তৃণমূল। মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার পথে বাধা দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসের ফলেই প্রার্থী হতে চেয়েও অনেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি।”
তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন অবশ্য সিপিএমের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘সিপিএম-সহ বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি জনসমর্থন নেই বলে। নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ঢাকতেই সিপিএম আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.