|
|
|
|
ভোটের মুখে নতুন সমস্যা |
পর্যাপ্ত বাসই নেই পশ্চিমে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য কত বাস প্রয়োজন, তার হিসেব করতে গিয়ে উঠে এল নতুন সমস্যার কথা। সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করাতে যে সংখ্যক বাস প্রয়োজন, সেই সংখ্যক বাসই নেই পশ্চিম মেদিনীপুরে। এ বার একই দিনে দুই মেদিনীপুর-সহ দক্ষিণবঙ্গে ভোট। ফলে, পাশের জেলা থেকে বাস নেওয়ারও কোনও উপায় নেই। সব মিলিয়ে এক নতুন সমস্যার মুখোমুখি পশ্চিমের পুলিশ-প্রশাসন। এই অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় বাসের বিকল্প হিসাবে লরি করেও পৌঁছতে হতে পারে ভোটকর্মীদের! যদিও এ নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। জেলা পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “নির্বাচনের জন্য যে সংখ্যক বাস প্রয়োজন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তা নেই। কী ভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
নির্বাচনের সময় ভোটকর্মীদের নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রে পৌছে দেওয়া ছাড়াও পুলিশ কর্মীরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌছতে বাস ব্যবহার করেন। ফলে, প্রশাসন এবং পুলিশ পৃথক ভাবে বাস ভাড়া করে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে জেলা প্রশাসনের প্রায় ৬০০টি বাস প্রয়োজন। এই প্রয়োজনের কথা জানানো হয়েছে জেলা পরিবহণ দফতরকেও। অন্য দিকে, জেলা পুলিশের প্রয়োজন প্রায় ১০০টি বাস। এ ছাড়াও ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের প্রায় ১৭০টি বাস প্রয়োজন। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে দরকার প্রায় ৮৭০টি বাস। অথচ জেলায় আছে ৮৫০টি বাস। তার মধ্যে কিছু আবার পূর্ব মেদিনীপুরে থাকে। সেখানে ৮৭০টি বাস কী ভাবে পাওয়া যাবে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সমস্যা। জেলা পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “এ বার দুই মেদিনীপুর জেলার সঙ্গে একই দিনে দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলার ভোট। ফলে, চাইলেও পাশের জেলা থেকে বাস পাওয়া অসম্ভব।” ওই আধিকারিকের কথায়, “তেমন হলে লরি বা বিকল্প কোনও গাড়ির ব্যবস্থা করতে হবে।” সঙ্গে, সব বাস নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত হলে নির্বাচনের আগের দিন থেকেই জেলার পরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ দিকে, ফের যখন নির্বাচনের জন্য বাস নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে, তখন গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেরই বাস ভাড়া পাননি বেশ কয়েকজন বাস মালিক। এমন সমস্যা রয়েছে খড়্গপুর মহকুমায়। জানা গিয়েছে, প্রায় ৩০ জন বাস মালিক গত নির্বাচনের ভাড়া মেটানোর দাবি নিয়ে প্রশাসনের কাছে দরবারও করেছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে অবশ্য খবর, সেই সময় এই বাস মালিকেরা যে ‘লগ সিট’ জমা দিয়েছিলেন, তারই খোঁজ মিলছে না। এই লগ সিটেই বাসটি কত কিলোমিটার যাতায়াত করেছে, কত দিন ভাড়ায় ছিল, তা লেখা ছিল। সেখানে সই ছিল প্রিসাইডিং অফিসার ও ওসির (ট্রান্সপোর্ট)। এক বাস মালিকের কথায়, “এমনিতেই এখন বাস ব্যবসায় তেমন লাভ নেই। তার প্রাপ্য টাকা পেতে যদি বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়, তা হলে তো মুশকিল।” তিনি বলেন, “প্রতিবারই ভাড়া নেওয়ার সময় বলা হয়, ক’দিনের মধ্যেই ভাড়া মিটিয়ে দেওয়া হবে। আমরাও বাস দিয়ে দিই। পরে ভাড়া আদায় করতে গিয়েই সমস্যায় পড়তে হয়।” অন্য দিকে, এ বার আবার বাস ভাড়া বৃদ্ধির দাবিও জানিয়েছেন বাস-মালিকেরা। তাঁদের বক্তব্য, সব কিছুর খরচ বাড়ছে। সেখানে ভাড়া বাড়বে না কেন? জেলা প্রশাসন বাস নিলে এখন দিন পিছু ভাড়া দেয় ১ হাজার ১৫০ টাকা। সঙ্গে দেওয়া হয় তেল এবং চালক-হেল্পারকে দিন প্রতি ৯৫ টাকা করে। তবে এ সবকে ছাপিয়ে এ বার বড় হয়ে দেখা দিয়েছে বাসের সমস্যা। সেই সমস্যা কী ভাবে কাটিয়ে ওঠে পুলিশ-প্রশাসন, দেখার সেটাই। |
|
|
|
|
|