সপ্তাহে পাঁচ দিন গির্জায় থাকেন তিনি। ছোটবেলায় মায়ের শেখানো অভ্যাস যেমন বদলাচ্ছে না, তেমনই নতুন ক্লাবে গিয়েও নিজেকে পাল্টাচ্ছেন না পেন ওরজি। বুধবার আনন্দবাজারকে সাক্ষাৎকারে অকপট সদ্য প্রাক্তন লাল-হলুদ মিডফিল্ড-জেনারেল।
প্রশ্ন: ইস্টবেঙ্গল আপনাকে ছাড়ল, না আপনি ইস্টবেঙ্গল ছাড়লেন?
পেন: আমি ছাড়লাম।
প্র: ক্লাবের আর্থিক সঙ্কটের সময়ে পালিয়ে গেলেন? আপনাকে তো লাল-হলুদ শিবির স্বার্থপর, বিশ্বাসঘাতক বলছে?
পেন: (হাসি) তাই নাকি? একটা কথা বলবেন? কলকাতা লিগ কবে জিতলাম?
প্র: ২৩ মে।
পেন: ওর পর দিনই চাইলে অন্য ক্লাবে চলে যেতে পারতাম। যাইনি। উলটে দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছি। পরিবর্তে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন। আজ বসব, কাল বসব বলে ঘুরিয়েছেন। ফোন ধরেননি। একটা ক্লাবকে তিন বছরে আটটা ট্রফি দিলাম। এএফসি কাপের কোয়ার্টারে তুললাম। বদলে কী পেলাম? বিশ্বাসঘাতকতা। আমার পিছনে ওরা চুপি চুপি মোগাকে সই করিয়ে নিল। এটা কি আমার প্রাপ্য ছিল? আমাকে রাখবে না প্রথমেই বলে দিতে পারত। অপমান করার কী দরকার ছিল?
প্র: কিন্তু ইস্টবেঙ্গল তো বলছে, কম টাকার প্রস্তাবে অখুশি বলে ক্লাব ছেড়েছেন আপনি? ওপারা কম টাকায় খেলতে পারল, আপনি পারলেন না!
পেন: মোগা এক মাস আগেই পাকা হয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলে। তাই ওপারা আর আমার মধ্যে এক জনকে যেতেই হত। কেননা চিডি-সুয়োকা-মোগার পর বিদেশি কোটায় আর একটাই জায়গা থাকে। সহজ অঙ্ক। |
প্র: ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার পরে টোলগের পরিণতি জানেন তো?
পেন: জানি। কিন্তু সবাই এক হয় না। এমনকী যমজ বাচ্চাদেরও আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট থাকে। আমার কী পরিণতি হয়, তিন মাস পর ইস্টবেঙ্গলকে জিজ্ঞেস করব।
প্র: ওপারা আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আপনাকে আটকায়নি?
পেন: ওর জন্যই তো এত দিন চুপ করে বসেছিলাম। বারবার বোঝাত, চিন্তা করিস না। ধৈর্য ধর, সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু মোগা ইস্যুটা প্রকাশ্যে আসতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। সব জেনে উগাও আমাকে সমর্থন করেছে।
প্র: এএফসি কাপ আর খেলতে পারবেন না। কষ্ট হচ্ছে না।?
পেন: সেই কোচও তো নেই। আমরা যে এএফসি কাপের মতো টুর্নামেন্টে জিততে পারি, সেই আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিলেন একমাত্র মর্গ্যান। ভেবে নিন ইস্টবেঙ্গলে যিশুখ্রিস্ট নেই, তাঁর ভক্তও নেই।
প্র: ইস্টবেঙ্গলে আপনার পজিশনে সুয়োকা সম্ভবত খেলবেন। কেমন ফুটবলার?
পেন: খুব ভাল। কিন্তু পেন নয় (হেসে)। আমি যেমন ডিফেন্সে নেমে খেলতে পারি, ও সেটা পারবে না। ইস্টবেঙ্গলে হ্যামন্ড বলে এক জন ফুটবলার এসেছিল। প্রকৃত স্ট্রাইকার। কিন্তু জোর করে উইংয়ে খেলাতে গিয়ে সব ওলোটপালট হয়ে গেল। সুয়োকারও না সে রকম হয়।
প্র: ইস্টবেঙ্গল ভবিষ্যতে কখনও আপনাকে ফেরাতে চাইলে ফিরবেন?
পেন: নিশ্চয়ই ফিরব। সমর্থকদের ভালবাসা কখনও ভুলব না। ইস্টবেঙ্গলের উপর আমার রাগ নেই। শুধু আমাকে ওরা পিছন থেকে ছুরিটা না মারলেই বোধহয় পারত! |