| যাদবপুর থেকে বাগবাজার, দমদম থেকে বেহালা লাল-হলুদ সমর্থকেরা যখন তাঁকে নিয়ে আলোচনায়, তিনি তখন কলকাতা থেকে ৩৯৮৮ মাইল দূরে। দক্ষিণ সুদানের রাজধানী জুবায়। ইস্টবেঙ্গলের চতুর্থ বিদেশি জেমস মোগা বুধবার বিকেলে তাঁর দেশের ফুটবল ফেডারেশন অফিস থেকেই সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে। |
প্রশ্ন: কলকাতা ময়দানে পা রাখতে চলেছেন। অনুভূতিটা কেমন?
মোগা: দারুণ। ভারতে পা রাখার পর থেকেই স্বপ্ন দেখতাম কলকাতায় খেলার। সেটা আর স্বপ্ন নয়। সত্যি।
প্র: মোহনবাগানও তো আগ্রহ দেখিয়েছিল। আই লিগের দ্রুততম গোলদাতার লাল-হলুদ জার্সিকে বাছার কারণ কী?
মোগা: ইস্টবেঙ্গলের আন্তরিকতা আমাকে টেনেছে। ওদের দৃষ্টিভঙ্গি অনেক পেশাদার। এই মুহূর্তে ভারতের অন্যতম সেরা দল ইস্টবেঙ্গল। এএফসি কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে। এ রকম দলের প্রস্তাব ছাড়া যায়! আমার স্ত্রী জোয়ে বলল, কলকাতায় খেললে ইস্টবেঙ্গলেই খেলবে।
প্র: ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা কিন্তু এখনই বলতে শুরু করে দিয়েছে, “মোগা-চিডি-সুয়োকা/বাগান এ বার ধুয়ে যা।”
 মোগা: (প্রশ্নের ইংরেজি তর্জমা শুনে হাসি) ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা বেশ মজার তো! সমর্থকেরাই আমাদের শক্তি। ট্রফি জিতে ওদের খুশি করতেই হবে। তবে মোহনবাগানও বড় দল।
প্র: আপনি, চিডি, সুয়োকা এর সঙ্গে টিমে ব্রাজিলীয় কোচ জুড়তে পারেন বলে খবর ইস্টবেঙ্গলে। এ বার কি গোলের ফোয়ারা ছুটবে লাল-হলুদে?
মোগা: চিডি আমার ভাল বন্ধু। আমাদের টিম দুর্দান্ত। মাঝমাঠে মেহতাব। ওকে আমার দারুণ লাগে। ডিফেন্সে ওপারা, খাবরা! ভাবুন এক বার! তবে এটা ফুটবল। ফুটবলাররাও কেউ যন্ত্র নয়।
প্র: কিন্তু উগা ওপারা তো আশঙ্কিত, আপনারা তিন বিদেশিই শুধুই আক্রমণাত্মক হওয়ায়।
মোগা: উগা দারুণ মানুষ। ওকে চিন্তা করতে বারণ করুন। মাঠে আমরা সবাই একসঙ্গে ফ্লপ করব না।
প্র: সাড়া জাগিয়ে ময়দানে পা দিয়ে অনেক বিদেশি ফুটবলারই কিন্তু ফ্লপ হয়েছে।
মোগা: আমার কাজ বিপক্ষের জালে বল ঢুকিয়ে নিজের দলকে জেতানো। সেটা করতেই ইস্টবেঙ্গলে যাচ্ছি। এর বেশি কিছু ভাবতে চাই না। আশা করি ডোবাব না।
প্র: পেন ক্লাব ছাড়ার সময় বলে গিয়েছে, তিন বছরে আটটা ট্রফি ইস্টবেঙ্গলে রেখে গেলাম। এটা আপনাকে চাপে ফেলবে না তো?
মোগা: মানে? বুঝিয়ে বলবেন।
প্র: মানে, পেনের জায়গায় সই করে সমর্থকদের প্রত্যাশা মেটানোর চাপ কতটা আপনার উপর।
মোগা: নো প্রেসার। আই অ্যাম বিন্দাস।
প্র: আপনি, চিডি, ওপারা, ওডাফা, র্যান্টি, টোলগে, সুয়োকা, লুসিয়ানো, জোসিমার, পেন ভারতের সেরা বিদেশিরাই তো এ বার কলকাতায়। নিজের সাফল্যের ব্যাপারে এটাও কি একটা চাপ নয় আপনার কাছে?
মোগা: আমার চাপ কোথায়? চাপ তো আপনাদের! কাকে নিয়ে এ বার কতটা লিখবেন? কে হেডলাইন হবে?
প্র: ওডাফার সঙ্গে তো আপনার একটা ঠান্ডা লড়াই আছে। দেশের সবচেয়ে বড় ডার্বিতে ওকে জবাব দিতে পারবেন?
মোগা: বাজে কথা। ওডাফার সঙ্গে কোনও লড়াই নেই। আমরা দু’জনেই পেশাদার। বড় ম্যাচে কী হবে এখন কী ভাবে বলব? তবে সে দিন গোল করতে মুখিয়ে থাকব।
প্র: কলকাতায় কবে আসছেন?
মোগা: দক্ষিণ সুদানের ৮ জুন প্র্যাক্টিস ম্যাচ আছে। সেটা খেলে পরিবারের সঙ্গে কয়েক দিন ছুটি কাটাব। কলকাতায় যাব জুলাইয়ের মাঝামাঝি। আমার সাড়ে সাত বছরের যমজ ছেলে রনি আর টনি আর দুই মেয়ে এডিনা (সাড়ে পাঁচ বছর) আর নিনোরা (দু’বছর) এখনই আব্দার শুরু করে দিয়েছে কলকাতা বেড়ানোর জন্য।
|
