শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ধরে রাখা আর কলঙ্কমোচনের লড়াই শুরু আজ
প্রবাদটা ঠিক হলে ভারত ভাল খেলবেই
ক নম্বরকে এক নম্বরের মতোই খেলতে হবে। সে রকমই মাথা উঁচু করে। তেমনই বুক চিতিয়ে।
২০১১-র ২ এপ্রিলের রাতের ছবিটা এখনও চোখের সামনে ভাসে। যেমন ভাসে কপিলের বিশ্বকাপ তুলে ধরার সেই দৃশ্য। ২৫ জুন, ১৯৮৩।
আর একটা তথ্যও আমার মনে খুব ছাপ ফেলেছে। এক সাংবাদিক বন্ধুর কাছ থেকেই জানা। কপিলরা বিশ্বকাপ জয়ের পরের দু’বছর যে ৩৩টা ওয়ান ডে খেলেছিল, তার ১৩টা জিতেছিল, হেরেছিল ১৬টা। জয়-হারের অনুপাত ০.৮১। আর ধোনিরা বিশ্বকাপ জয়ের পরের দু’বছরে যে ৪৪টা ওয়ান ডে খেলেছে, তার মধ্যে জিতেছে ২৫টা, হেরেছে ১৬টা। জয়-হারের অনুপাত ১.৫৬। এখানেই ধোনিদের কৃতিত্ব।
কপিলদের যেমন রাক্ষুসে বোলার ও ব্যাটিং দৈত্যদের বিরুদ্ধে খেলতে হয়েছিল, ধোনিদের তেমনই তুমুল প্রত্যাশা, মিডিয়ার চাপ, ক্রীড়াসূচির ঠাসাঠাসি সামলাতে হয়। কাদের কৃতিত্ব বেশি, সেই বিতর্কে গিয়ে লাভ নেই। তবে বিশ্বকাপ জয়ের দু’বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে দেখাতে পারলে স্বীকার করে নিতেই হবে ধোনিরা সত্যিই বিশ্বসেরা। সেরা তারাই, যাদের সেরার জায়গাটা ধরে রাখার ক্ষমতাও আছে।
‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’ প্রবাদটা যদি সত্যি হয়, তা হলে বলতে হবে এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত দুর্দান্ত খেলতে চলেছে। ইংল্যান্ডে পৌঁছেই যে ফর্ম দেখাল ভারতীয়রা, মুগ্ধ করার মতো। এমন ফর্মেই যদি থাকে ভারত, তা হলে ওদের শেষ চারে যাওয়া নিয়ে আমি প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু প্রশ্নটাও এখানেই। ধোনিরা কি পারবে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে?
লড়াইটা কঠিন। গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো শক্ত হার্ডল টপকানো সহজ নয়। দক্ষিণ আফ্রিকা বোলিং, ব্যাটিংয়ের দিক থেকে ‘কমপ্লিট টিম’। পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বের যে প্রান্তেই খেলুক না কেন, সব সময়ই ‘আনপ্রেডিক্টেবল’। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাস বলছে, এই টুর্নামেন্টে ভারত দু’বারের কোনও বারই তাদের হারাতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা এ বার আইপিএলে কেমন হিট, তা তো সবারই জানা। তারাই এ বার একসঙ্গে মাঠে নামছে। ‘ডেঞ্জারাস’ তো হবেই। নিজে এক জন ক্রিকেটার হয়ে অবশ্য তুকতাকে সায় দিতে পারি না। কিন্তু এটা মানি, কোনও টিমেরই সব দিন সমান যায় না। ম্যাচের দিন দলটা কেমন খেলছে, এটাই সবচেয়ে বড় কথা। তবে ‘মোমেন্টাম’ বলে একটা ব্যাপার আছে তো। তো এই ছন্দ ধোনিরা ধরে রাখতে পারে কি না, সেটাই দেখার।
বিশ্বকাপজয়ী দলের মাত্র চার জন রয়েছে এই দলে। ধোনি, কোহলি, রায়না, অশ্বিন। তবে বাকি যারা আছে, তারাও কম অভিজ্ঞ নয়। ইশান্ত, পাঠান, কার্তিক— প্রত্যেকেই প্রচুর ঝড়ঝাপটা সামলেছে। অন্যরা যারা, যেমন উমেশ, ধবন, ভুবনেশ্বর, জাডেজা তাদের পারফরম্যান্সই মূলধন। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার এই মিশ্রণ ও তার কার্যকরিতা ঠিকঠাক হলে ভারত ভাল খেলবেই।
কার্ডিফের উইকেট অনেকটা উপমহাদেশের মতোই। বাউন্স কম। বারবার ফ্রন্টফুটে এসে খেলতে হয়। কয়েক দিন হল, আবহাওয়াটাও বেশ ভাল সেখানে। শুনলাম বৃহস্পতিবার ডেল স্টেইন অনিশ্চিত এবং ওদের দলের এক নম্বর স্পিনার রবিন পিটারসনেরও একই অবস্থা। এবি ডেভিলিয়ার্সেরও এক জন ব্যাকআপ এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সব দেখে শুনে ‘অ্যাডভান্টেজ ইন্ডিয়া’ কথাটা লিখতে অসুবিধা হচ্ছে না। তবে ভারতীয় ক্রিকেটের সেই পুরনো রোগের ভাইরাস ফের আক্রমণ করলে আমাকে দোষ দেবেন না কিন্তু। পুরনো রোগের ভাইরাস মানে বুঝলেন না? ধারাবাহিকতার অভাব। এটাই তো ভারতীয় ক্রিকেটকে চিরকাল ভুগিয়ে এসেছে।

ওপেনিং জুটি নিয়ে চিন্তায় নেই ধোনি
স্পট-ফিক্সিং নিয়ে চুপ। ‘কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট’ বিতর্ক নিয়েও নীরব ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে তাঁর মাথায়, কথায় শুধুই ক্রিকেট। “এ সব ব্যাপার আমাদের মাথায় আসেই না। এখন লক্ষ্য শুধু বাইশ গজের চ্যালেঞ্জ নেওয়া,” এ দিন কার্ডিফে বলেছেন ধোনি। ওয়ান ডে-র নতুন নিয়মে খেলা হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। যা নিয়ে ধোনির বক্তব্য, “দু’দিক থেকে দুটো নতুন বলে খেলা হবে তো, তাই প্রথম দশ ওভার টিকে থাকা খুব জরুরি।”
দুটো প্রস্তুতি ম্যাচে পিঠোপিঠি সেঞ্চুরি করা দীনেশ কার্তিককে টিমে রাখতেই হবে বলে মনে করছেন সুনীল গাওস্কর। ধোনি নিজেও কার্তিক নিয়ে উচ্ছ্বসিত, “মিডল অর্ডারে ও দারুণ ব্যাট করে। ম্যাচের পরিস্থিতি খুব ভাল বোঝে, বড় ইনিংস খেলারও ক্ষমতা আছে।” তবে ওপেনিং জুটি তো সে ভাবে প্রভাব ফেলতে পারল না? “ওরা ভাল খেলবে কি খেলবে না, সেটা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা ঠিক নয়। ওদের মাঠে নেমে খেলতে দিন। তার পর দেখা যাবে,” জবাব ধোনির। অন্য দিকে পেসার উমেশ যাদবকে তাঁর দরাজ সার্টিফিকেট, “আমাদের দ্রুততম বোলার এখন উমেশ। ও ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলে দিতে পারে। বল সুইং করাতে পারে। ওর ভূমিকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে।” ধোনির জন্য সুখবর, ডেল স্টেইন পেশির চোটের জন্য বৃহস্পতিবারের ম্যাচে অনিশ্চিত।


চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত

(বাংলাদেশ)
সেমিফাইনালে বিদায়
(চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা)
(কেনিয়া)
রানার্স
(চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড)
(শ্রীলঙ্কা)
যুগ্ম জয়ী শ্রীলঙ্কার সঙ্গে
(ইংল্যান্ড)
গ্রুপ লিগে বিদায়
(চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
(ভারত)
গ্রুপ লিগে বিদায়
(চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া)
(দক্ষিণ আফ্রিকা)
গ্রুপ লিগে বিদায়
(চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া)
(৫০ ওভার)
বনাম অস্ট্রেলিয়া ’৯৮
(টুর্নামেন্ট সেরা নিউজিল্যান্ডের ৩৪৭-৪)
২০০ (৪৯.৫ ওভার)
বনাম পাকিস্তান ’০৪
(টুর্নামেন্টে নিম্নতম যুক্তরাষ্ট্রের ৬৫ অলআউট)

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ১৩ ম্যাচে ৬৬৫ রান (গড় ৭৩.৮৮)
(টুর্নামেন্টে সেরা ক্রিস গেইলের ৬৯৫ রান)
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ১৪১ ন.আ. বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
’২০০০ (টুর্নামেন্টে সেরা নাথন অ্যাস্টলের ১৪৫ রান)

জাহির খান ৯ ম্যাচে ১৫ উইকেট (গড় ২৪.৫৩)
(টুর্নামেন্টে সেরা মুরলীধরনের ২৪ উইকেট)
সচিন তেন্ডুলকর ৪-৩৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া ’৯৮ (টুর্নামেন্টে সেরা মাহরুফের ৬-১৪)
রাহুল দ্রাবিড় ৮ (সব ক্যাচ)
(টুর্নামেন্টে সেরা সঙ্গকারার ২৮ শিকার, ২৪ ক্যাচ, ৪ স্টাম্পড্)




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.