|
|
|
|
মা কখন আসবে, পথ চেয়ে আছে বাঁকাদহের খুদে হাতি
স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় • বিষ্ণুপুর |
শেষ রাতে ধান খেতে নেমেছিল কয়েকটি হাতি। টের পেতেই মশাল নিয়ে ধাওয়া করেন চাষিরা। তিনটি হাতি পিঠটান দিলেও শেষ মুর্হূতে সঙ্গী মাস চারেকের খুদে হাতিটিকে ফেলে যায় তারা। গ্রামবাসীরা এসে দেখেন, খুদে হাতিটি তখন ধান জমিতে অঘোরে ঘুমোচ্ছে। বুধবার ভোর থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বন বিভাগের বাঁকাদহ রেঞ্জের ভালুকা গ্রামের বাসিন্দারা খুদে অতিথির যত্ন আত্তিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। জল, ফল, সবজি খেতে দেন, কেউ আদর করে গায়ে হাতও বুলিয়ে দেন। কিন্তু ওঁদের ওই অতি স্নেহই দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বন দফতরকে। হাতির গায়ে যে মানুষের ছোঁয়া লেগেছে! |
খুদে হাতিকে খাবার খাওয়াচ্ছেন বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র |
বাঁকাদহের রেঞ্জ অফিসার বিজয় চক্রবর্তী বলেন, “মাস চারেকের পুরুষ হস্তিশাবকটিকে খাওয়াতে গিয়ে গ্রামের কেউ ওকে ছুঁয়ে ফেলেছে। ওতেই ভুল হয়েছে। কারণ মানুষের ছোঁয়া লাগা হাতিদের দলে ফেরানো হয় না। শুধু মা-ই অত ছোট হাতিকে সঠিক যত্ন করতে পারবে।” এডিএফও (বিষ্ণুপুর) মধুসূদন মুখোপাধ্যায় বলেন, “মানুষের ‘স্পর্শর্দোষ’ কাটাতে শাবকটির গায়ে হাতির বিষ্ঠা মাখানো হয়েছে। ফেলে যাওয়া শাবকটির মা ও তার দুই সঙ্গীকে রাতে জঙ্গল থেকে তাড়িয়ে শাবকটির কাছাকাছি নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
ভালুকা গ্রামের চাষি সুনীল মাকুড়, বৃন্দাবন মাকুড় বলেন, “জঙ্গল থেকে হাতিরা মাঝে মধ্যেই জমিতে নেমে পড়ে ফসল খেয়ে যায়। ওদের অত্যাচারে গাছের কাঁঠালও রক্ষা করা যায় না। ওদের তাড়াতে রাত পাহারা দিই। কিন্তু এমন কাণ্ড কখনও ঘটেনি।” গ্রামবাসীদের মধ্যে কর্ণ পাত্র বলেন, “ছোট্ট হাতিটাকে ঘুমাতে দেখে মায়া হয়। মাথায় হাত বোলাতেই ওর ঘুম ভেঙে যায়। তখন কেউ বালতি করে জল এনে ওকে খাওয়ায়। কেউ মাঠের ফসল ওর মুখের সামনে ধরেন।” |
|
|
|
|
|